ক্রিকেটকে ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’ নিয়মটার সঙ্গে পরিচয় করিয়েছিল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড-বিসিসিআই। দেশটির ঘরোয়া টুর্নামেন্ট মুশতাক আলি ট্রফিতে তারা এই নিয়ম চালু করে। গত মৌসুম থেকে আইপিএলেও দেখা গেছে সেটি। যা নিয়ে চলতি মৌসুমে সুযোগ নিচ্ছে দলগুলো। তবে এই নিয়মই ভারতকে বিশ্বকাপে বিপদে ফেলবে মনে করেন ভারতীয় ক্রিকেটার শিখর ধাওয়ান।
সম্প্রতি পিটিআইয়ের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ধাওয়ান বলেন, ‘আমার মনে হয় এ বছর খেলাটাই বদলে গেছে। সে কারণে হরহামেশাই ২৫০ রান হচ্ছে। অবশ্যই (খেলোয়াড়দের) মানসিকতা বদলে গেছে। কিন্তু যখন আপনি বিশ্বকাপে খেলতে যাবেন, সেখানে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ারের নিয়ম নেই। এর প্রভাবটা চোখে পড়বে নিশ্চয়ই। এটা (ইমপ্যাক্ট প্লেয়ারের নিয়ম) অবশ্যই পার্থক্য গড়ে দেবে। এখন দেখার বিষয়, আমরা কীভাবে পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেই।’
এভাবে ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’ নিয়মে বদলে গেছে ব্যাটারদের মানসিকতা। তাদের প্রত্যেকেরই ভাবনায় গেছে স্টাইক রেট বাড়িয়ে রান পাহাড় তৈরি করা। কিন্তু আর্ন্তজার্তিক খেলায় এতো সহজ হবে না মনে করেন ধাওয়ান।
তার ভাষ্য, ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার চালু হওয়ার পর থেকে (খেলোয়াড়দের) মানসিকতা বদলে গেছে। মিডল অর্ডারের একজন ব্যাটসম্যান জানেন, ৮-৯ নম্বর পর্যন্ত ব্যাটসম্যান আছে, সে কারণে তিনি আক্রমণে যেতে পারছেন, আর রানটাও বেশি হচ্ছে।’
এদিকে এ নিয়ে সমালোচনায় মেতেছেন রোহিত-কোহলিও। তাদের দুই জনের মতেও এটার যৌক্তিক কারণ দেখছেন না তারা। কোহলি বেঙ্গালুরুর এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে আরসিবি বনাম সিএসকে ম্যাচের আগে জিও সিনেমাকে বলেছেন, ‘আমি ইমপ্যাক্ট প্লেয়ারের নিয়মের ক্ষেত্রে রোহিত শর্মার সঙ্গে একমত। বোলাররা এখন মনে করে, তাদের প্রতিটি বলেই ৪ বা ৬ হবে।’
কোহলি আরও যোগ করেছেন, ‘বিনোদন একদিকে, তবে বোলারদের দিকেও তাকান এবং ওরা কী অনুভব করছে, সেটাও ভাবতে হবে। এটা উচ্চ পর্যায়ের ক্রিকেট। ব্যাটসম্যান এবং বোলারদের মধ্যে সমান ভাবে লড়াই হবে। প্রতিটি দলেই বুমরাহ বা রশিদ নেই। আমি জানি জয় ভাই (জয় শাহ) বলেছেন যে, আমি জানি যে জয় শাহ বলেছেন যে, তিনি ২০২৪ আইপিএল মৌসুমের পরে এটি পর্যালোচনা করবে। এমন পরিস্থিতিতে দেখা যাক কী হয়।’
বিরাট এখানেই না থেমে আরও বলেছেন, ‘একজন অতিরিক্ত ব্যাটার খেলায়, আমি নিশ্চিন্ত হয়ে পাওয়ারপ্লেতে ২০০-এর বেশি স্ট্রাইক রেট নিয়ে ব্যাট করছি। আমি জানি, ৮ নম্বর পর্যন্ত আমাদের ব্যাটার আছে। যে কারণে আমি স্বাধীন ভাবে খেলতে পারছি।’
আইপিএলের মাঝেই ইমপ্যাক্ট প্লেয়ারের নিয়ম নিয়ে রোহিত বলেছিলেন, ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার নিয়মটা আমার খুব একটা পছন্দ নয়। এর ফলে অলরাউন্ডারদের প্রয়োজন কমে গিয়েছে। ক্রিকেটটা এখন ১২ জনের খেলা হয়ে গিয়েছে। এর ফলে ক্রিকেটটা নষ্ট হচ্ছে। দর্শকের জন্য যদিও খুব উপভোগ্য হচ্ছে ব্যাপারটা। ভারতীয় ক্রিকেটের দিক থেকে দেখতে গেলে ওয়াশিংটন, শিবমেরা বল করছে না। এটা দলের জন্য ভালো দিক নয়।’
‘কী করব জানি না। দলে ১২ জন ক্রিকেটার রয়েছে। খেলার পরিস্থিতি বুঝে এক জনকে দলে আনা হচ্ছে। এটা দেখতে খুব ভালো লাগছে। কিন্তু এই বাড়তি ক্রিকেটার দলে আসার পর থেকে সাত বা আট নম্বরের ব্যাটার সুযোগ কম পাচ্ছেন। আলাদা করে ব্যাটার নামানোর সুযোগও পাওয়া যাচ্ছে।’