আজ রোববার দুপুরে গাজীপুর শিমুলতলী সালনা রোড এলাকায় গ্যাসের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীসহ দুইজন দগ্ধ হয়েছেন।
আহতরা হলেন- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. ফারহান হাসান (২৬) ও ভবনের কেয়ার টেকার খাইরুল ইসলাম (৩৬)। ফারহানের গ্রামের বাড়ি ঠাকুরগাঁও।
জয়দেবপুর ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. আব্দুস সামাদ স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানান, ৮তলা ভবনের নীচ তলায় রোববার দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে এ দুর্ঘটনা ঘটে। অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই বাড়ির লোকজন আগুন নিভিয়ে ফেলেছে। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। এদের মধ্যে ফারহানের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢাকা শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারী ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে। কেয়ার টেকার খাইরুল ইসলাম শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর বাসায় ফিরে গেছেন। তিনি আশঙ্কামুক্ত।
আহত ফারহানের স্বজনরা জানান, ফারহান ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়ি গিয়েছিল। গ্রামের বাড়ি থেকে ফিরে শনিবার প্রথমে ভুরুলিয়া এলাকায় আমাদের বাড়িতে উঠেছিল। সেখান থেকে রোববার দুপুরে ৮তলা ভবনের নীচতলায় তার কক্ষে ব্যাগ-মালামাল রাখতে গিয়ে বৈদ্যুতিক বাতি জ্বালাতে সুইচ চাপ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উচ্চ শব্দে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ সময় পাশে থেকে কেয়ার টেকার ফারহানকে উদ্ধার করতে গিয়ে তিনিও আহত হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, ওই কক্ষে গ্যাস লাইন বা চুলা থেকে গ্যাস লিকেজ হওয়ার পর জমা হয়েছিল। বাতি জ্বলাতে গিয়ে সুইচের স্পার্কিং থেকেই ওই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারী ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন মো. তরিকুল ইসলাম জানান, ফারহাহের শরীরের ৩০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে, তার শ্বাসনালীতেও পোড়া রয়েছে।
তবে জয়দেবপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার আব্দুস সামাদ বলেন, নীচতলার ওই কক্ষে রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার পাওয়া গেছে। ঈদের ছুটিতে কক্ষের দরজা-জানালা ও তালা আটকিয়ে ফারহান হাসান যায়। ধারণা করা হচ্ছে বন্ধ থাকা অবস্থায় ঘরে থাকা গ্যাস সিলিন্ডারের কোনো লিকেজ থেকে গ্যাস বেরিয়ে ওই রান্না ঘরে জমেছিল। রোববার দুপুরে ওই কক্ষের অদূরেই কেয়ার টেকার রান্না করছিলেন। ওই চুলা থেকে অগ্নিস্ফুলিঙ্গ কিংবা ভবনের লিফট থেকে কোনোভাবে স্পার্কিয়ের ফলে রান্নার কক্ষে জমে থাকা গ্যাসে উচ্চ শব্দে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের সৃষ্টি হয়েছে। আগুনে কেয়ার টেকারের রান্নার হাড়ি-পাতিলাসহ চুলা এবং লিফটের নীচতলা, ৫ম তলা, ৬ষ্ঠ তলা ও ৭তম তলার লিফটের দরজাও ভেঙে গেছে। এ ছাড়া রান্না ঘরের দরজা-জানালা ভেঙে গেছে এবং সেখানে থাকা খাটসহ-বিছানা ও তৈজষপত্র পুড়ে গেছে।
গাজীপুর সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাফিউল করীম রাফি জানান, ওই কক্ষে গ্যাস সিলিন্ডার ছাড়াও তিতাস গ্যাসের লাইন রয়েছে। বিষয়টি তদন্তের পর বিস্তারিত বলা যাবে।