মিশরের কায়রোতে ইসরায়েল ও গাজার শাসকগোষ্ঠী সশস্ত্র হামাসের মধ্যে ফের শান্তি আলোচনা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। মধ্যস্থতাকারী দেশ মিশরের আল ক্বাহেরা নিউজ টিভির বরাতে সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদনে এমনটি বলা হয়েছে। শুরুতে হামাসের কোনো প্রতিনিধি না থাকলেও বৈঠকে ইসরায়েল একটি প্রতিনিধিদল পাঠাবে।
গাজা ভূখণ্ডে প্রায় ছয় মাসের যুদ্ধের পর এটি হবে অস্ত্র বিরতির সবশেষ প্রচেষ্টা।
এ বিষয়ে ইসরায়েলি কর্মকর্তা বলেন, তেলআবিব রোববার কায়রোতে একটি প্রতিনিধিদল পাঠাবে। তবে হামাস জানায় প্রথমে তারা কায়রোর মধ্যস্থতাকারীদের আলোচনার ফলাফল জানার জন্য অপেক্ষা করবেন।
এদিকে সোমবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস হয়। এই প্রস্তাবে গাজায় যুদ্ধবিরতির পাশাপাশি হামাসের হাত থাকা জিম্মিদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির শর্ত রাখা হয়েছে।
এ প্রস্তাবে নিরাপত্তা পরিষদের ১৪টি দেশ প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দেয়। ভোটদানে বিরত ছিল ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র।
প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত প্রস্তাব পাস হয়েছে। এই প্রস্তাব অবশ্যই বাস্তবায়ন হতে হবে। কোনো পক্ষ যুদ্ধবিরতি ও এর শর্তগুলো বাস্তবায়নে যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে তা হবে ক্ষমার অযোগ্য অপরাধের শামিল।
এর আগে যুদ্ধবিরতির আলোচনা থেকে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের প্রতিনিধিদল সরে আসে। তারা বলেছে, তাদের প্রতিনিধি দল মিশর ত্যাগ করেছে, কিন্তু ইসরাইলের সঙ্গে কোনো চুক্তিতে না পৌঁছানো পর্যন্ত গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা আগামী সপ্তাহে অব্যাহত থাকবে। যদিও পরে আর এই আলোচনা এগোয়নি।
ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীটির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সামি আবু জুহরি আলজাজিরাকে বলেছেন, মিশরের রাজধানী কায়রোতে চার দিনের আলোচনায় কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। কারণ, ইসরায়েল গাজায় আক্রমণ বন্ধ, তাদের বাহিনী প্রত্যাহার, ত্রাণের প্রবেশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা এবং বাস্তুচ্যুত লোকদের প্রত্যাবর্তনের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।
সামি আবু জুহরি বলেন, একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য মধ্যস্থতাকারীদের সব প্রচেষ্টা ইসরায়েল ‘নস্যাৎ’ করে দিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রমজানের আগে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য সব পক্ষের মধ্যে আলোচনা চলছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের হামলায় অন্তত ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত ও প্রায় ২৫০ জনকে বন্দি করা হয়। নভেম্বরে এক সপ্তাহব্যাপী যুদ্ধবিরতির সময় ১০০ জনেরও বেশি বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।
এদিকে গাজার হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় মৃতের সংখ্যা ৩০ হাজার ৮০০ ছাড়িয়ে গেছে। যাদের অধিকাংশ নারী ও শিশু।