প্রকাশ: বুধবার, ২৭ মার্চ, ২০২৪, ২:৪৮ অপরাহ্ন
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে মহিলা যাত্রী সেজে অটোরিকশা চুরির ঘটনায় মহিলাসহ চোর চক্রের ৭ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঘোড়াঘাট থানা পুলিশ।
মহিলা যাত্রী দিয়ে ব্যাটারিচালিত অটোভ্যান ও মিশুক ভাড়া করত তারা। এরপর চালকের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলত। পরে অসুস্থতার ভান করে চালককে দিয়ে বাজার খরচ করাতে পাঠাত অথবা খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে খাইয়ে অচেতন করে যানবাহন নিয়ে পালিয়ে যেত।
সোমবার (২৫ মার্চ) সকালে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট সৌলা এলাকা থেকে চুরি হওয়া ব্যাটারিচালিত একটি মিশুক ভ্যান উদ্ধারসহ দুজনকে ও আন্তঃজেলা ওই চক্রের আরও পাঁচজনসহ মোট সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- দিনাজপুর নবাবগঞ্জের শাল্টি মুরাদপুর এলাকার আক্তারুজ্জামান (২৮) ও মজনু মিয়া (৩৪)। ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁওয়ের শাহাবুদ্দিন মোল্লা (৫০) ও একই এলাকার মুক্তাগাছার শাওন হাসান (২৭), কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুরের কার্তিক বাবু গৌর রনি (২৬), রংপুর জেলার পীরগঞ্জের চৌধুরী পাড়ার আব্দুর রশিদ (৪১) ও একই এলাকার আনোয়ারা বেগম (৩৮)।
ঘোড়াঘাট থানার ওসি আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে দিনাজপুরের ১৩টি থানাসহ আশপাশের জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিনব কায়দায় অটোরিকশা, ভ্যান ও মিশুক চুরি করে আসছিল। এর আগে গত মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বিকেলে উপজেলার ডুগডুগি বাজার এলাকা থেকে রাণীগঞ্জ বাজারে যাওয়ার জন্য একটি অটো মিশুক ভাড়া করে চক্রটি। যার যাত্রী ছিল একজন মহিলা।
যাত্রীবেশী ওই মহিলা উপজেলার রাণীগঞ্জ বাজার এলাকায় পৌঁছার পর অসুস্থতার ভান ধরেন এবং অটোচালক আব্দুল্লাহ আদিল মাহমুদকে দুইশ টাকা হাতে ধরিয়ে দিয়ে কিছু বাজার করে নিয়ে আসতে বলে। সরল বিশ্বাসে অটোচালক বাজার করতে যান এবং এসে দেখেন তার অটোটি আর নেই। পরে অটোচালক বাদী হয়ে ওই অজ্ঞাত ব্যক্তিদের নামে একটি এজাহার দায়ের করেন।
মামলার তদন্তে গিয়ে এসআই অসীম কুমার মোদক ঘটনাস্থল ও এর আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনায় জড়িত প্রথমে ওই মহিলাকে শনাক্তের পর জড়িত আরও চারজনকে গেল রোববার ভোরে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে। পরে গ্রেপ্তারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে অন্য দুই জন মোট সাতজনকে গ্রেপ্তার এবং চুরি হওয়া অটোটি উদ্ধার করা হয়।
এ সময় চোর চক্রের সদস্যরা স্বীকার করে জানায়, টার্গেট করা যানবাহনটি ভাড়া নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়ানোর একপর্যায়ে চালকের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলে তাদের চক্রের মহিলা সদস্য। তারপর সুযোগ বুঝে অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যায় এবং তারা বিভিন্ন এলাকা থেকে রিকশা চুরি করে সেই রিকশা বিক্রি করে দিত।