প্রকাশ: শুক্রবার, ১৫ মার্চ, ২০২৪, ৫:৪৬ অপরাহ্ন
এশার নামাজের পর থেকে ফজরের আগ পর্যন্ত বিতির নামাজের সময়। বিতির নামাজ তিন রাকাত। অন্য ফরজ নামাজের মতো দুই রাকাতশেষে প্রথম বৈঠকে বসে তাশাহুদ পড়বে, কিন্তু সালাম ফিরাবে না। তারপর তৃতীয় রাকাত পড়ার জন্য উঠে সুরা ফাতিহার সঙ্গে অন্য সুরা বা আয়াত মিলাবে।
কিরাত (সুরা বা অন্য আয়াত মিলানোর পর) শেষে তাকবির বলে দু’হাত কান পর্যন্ত উঠিয়ে তাকবিরে তাহরিমার মতো হাত বাঁধবে। তারপর নিঃশব্দে দোয়া কুনুত পড়বে। এরপর যথানিয়মে রুকু-সেজদা ও শেষ বৈঠক শেষে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করবে।
বিতির নামাজের এই পদ্ধতি সুপ্রমাণিত। রাসুলুল্লাহ (স.) সাধারণত তাহাজ্জুদের পর বিতির পড়তেন এবং বিতির তিন রাকাত পড়তেন।
বিতির নামাজ ওয়াজিব। বিতির নামাজে দোয়া কুনুত পড়াও ওয়াজিব। যদি কেউ বিতির নামাজে ভুলে দোয়া কুনুত না পড়ে, তার ওপর সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে। অন্যথায় তার বিতির নামাজ সহিহ হবে না। (কিতাবুন নাওয়াজেল: ৩/৩৬০ ফতোয়া কাসিমিয়া: ৭/৬২৪)
হাসান (রহ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- إِذَا نَسِيَ الْقُنُوتَ فِي الْوِتْرِ سَجَدَ سَجْدَتَيِ السَّهْوِ ‘যে ব্যক্তি দোয়া কুনুত ভুলে যায়, সে সেজদায়ে সাহু আদায় করবে।’ (আসসুনানুল কুবরা, বায়হাকি: ৩৯৮৩)
দোয়া কুনুত পড়লে আল্লাহ খুশি হন। বান্দার চাওয়া-পাওয়া পূর্ণ করে দেন। দুনিয়ার সব বিপদ-আপদ থেকে মুক্তি দেন। এশার নামাজের পর বিতির নামাজের তৃতীয় রাকাতে সুরা ফাতেহার সঙ্গে অন্য সুরা মিলানোর পর দোয়া কুনুত পাঠ করতে হয়। এই দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে গুরুত্বপূর্ণ আবেদনগুলো তুলে ধরা হয়। রাসুল (স.) দোয়া কুনুত পাঠ করতেন।
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘আমি একরাতে নবী (স.)-এর নিকটে ছিলাম। তিনি শয্যাত্যাগ করলেন এবং দুই রাকাত নামাজ পড়লেন। এরপর উঠে বিতর পড়লেন। প্রথম রাকাতে ফাতেহার পর সুরা আ’লা পাঠ করলেন। এরপর রুকু ও সেজদা করলেন। দ্বিতীয় রাকাতে ফাতেহা ও কাফিরুন পাঠ করলেন এবং রুকু-সেজদা করলেন। তৃতীয় রাকাতে ফাতেহা ও ইখলাস পাঠ করলেন। এরপর রুকুর আগে কুনুত পড়লেন।’ (কিতাবুল হুজ্জাহ: ১/২০১; নাসবুর রায়াহ: ২/১২৪)
অগ্রগণ্য মাজহাবমতে, কুনুতের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো দোয়া নেই। তাই যেকোনো দোয়া পড়লে কুনুত হয়ে যাবে; এমনকি দোয়া সম্বলিত এক বা একাধিক কোরআনের আয়াত পড়লেও কুনুতের উদ্দেশ্য হাসিল হয়ে যাবে। তবে হাদিসে যে দোয়া এসেছে সেটা পড়া উত্তম। (ইমাম নববির ‘আল-আজকার, পৃষ্ঠা-৫০)