মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
 

বাংলাদেশ ব্যাপক শ্রম সংস্কারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: ড. ইউনূস    বৃদ্ধ মজিদের জমি দখল করে কলেজ ক্যাম্পাস নির্মাণ    হাতিয়া ও সোনারগাঁওয়ে ডাকাতির ঘটনায় ২২ জন গ্রেপ্তার    ঘোষণা দিয়ে মাহাবুবুর মোল্লা কলেজে ভাংচুর ও লুটপাটের তাণ্ডব: আহত ৪২    কুমিল্লা মিডিয়া ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ১৬-তম আসরের উদ্বোধন    কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ বাংলাদেশি পর্যটকদের    ১৮১ রানে পিছিয়ে থেকে তৃতীয় দিনশেষ বাংলাদেশের   
বান্দা তওবা করলে আল্লাহ খুশি হন
অনলাইন ডেস্ক:
প্রকাশ: সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪, ৭:৫৭ অপরাহ্ন

কোনো মানুষই ভুলের ঊর্ধ্বে নয়। তবে সে ব্যক্তিই উত্তম যে ভুল করার পর তওবা করে। আমাদের সবারই ত্রুটিবিচ্যুতি রয়েছে। কখনো মুখ ফসকে মুখের দ্বারা গুনাহ হয়েছে। কারও সমালোচনা করছি, কাউকে গালি দিয়েছি, কখনো অন্যায়ভাবে অন্যের সম্পদের দিকে হাত বাড়িয়েছি, কখনো এমন জিনিসের দিকে তাকিয়েছি যা আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন। সর্বোপরি আল্লাহর সঙ্গে শিরক করেছি।

সালাত, জাকাত আদায় করিনি উপরিউক্ত সব কবিরা গুনাহের মুক্তি পাওয়ার একমাত্র উপায় হচ্ছে তওবা। এ জন্য দয়াময় আল্লাহতায়ালা বান্দাদের ওপর তওবা অপরিহার্য করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘হে মুমিনগণ তোমরা আল্লাহর কাছে তওবা কর, বিশুদ্ধ তওবা যাতে তোমরা সাফল্য লাভ করতে পার (সুরা নুর-১০)। শিরককারী, সালাত, জাকাত পরিত্যাগকারী সীমা লঙ্ঘনকারী অন্যের সম্পদ হরণকারী, অপবাদকারীসহ সব ধরনের কৃত পাপের জন্য তওবা করা যে অপরিহার্য এবং আল্লাহ সব পাপকারীদের তওবা কবুল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা তিনি যথাক্রমে কুরআনুল করিমের সুরা ফুরকান আয়াত নং ৭০, নুর-১০ তাহরিম-৮, তওবার-১১, নুর-৫ মায়িদা এর ৩৯নং আয়াতে উল্লেখ করেছেন। বিশ্বনবী মুহাম্মদুর রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, কুরআন মজিদে মানবজাতির জন্য সবচেয়ে আশাব্যঞ্জক আয়াত হচ্ছে ‘হে আমার বান্দা তোমরা যারা নিজেদের প্রতি জুলুম করেছ তারা আমার রহমত প্রাপ্তি থেকে নিরাশ হইও না। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের সক গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন। তিনি ক্ষমাশীল পরম করুণাময় (সুরা যুমার-৫৩)। এই সব বাণী দ্বারা আল্লাহ আমাদের তওবা করতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে আল্লাহ তওবাকারীদের ভালোবাসেন। বান্দা যখন তার অপরাধের জন্য অনুশোচনায় দগ্ধ হয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে তখন তিনি অত্যন্ত আনন্দিত হন

রসুল (সা.)-এর খাদেম আনাস বিন মালেক (রা.) বর্ণিত, কোনো লোক বিজন মরুভূমিতে তার উট হারিয়ে যাওয়ার পর পুনরায় তা ফেরত পেলে যে পরিমাণ আনন্দে উদ্বেলিত হয় মহান আল্লাহ বান্দার তওবাতে তার চেয়ে বেশি আনন্দিত হন। আপনি ও আমি নিজে অনুভব করি যে আমরা এমন এক মরুভূমিতে একাকী অবস্থান করছি যেখানে আশপাশে কোনো মানুষ নেই। নেই কোনো খাদ্যপানীয়। এমন জনমানবহীন মরুভূমিতে সঙ্গের বাহন উট হারিয়ে গিয়েছে যে উটের পৃষ্ঠে খাদ্যপানীয় মজুত ছিল। অনেক খোঁজাখুঁজির করেও উটের হদিস না পেয়ে বেঁচে থাকার সব আশা ত্যাগ করে কোনো একটি গাছের নিচে শুয়ে অনিবার্য মৃত্যুর প্রহর গুনছি। এমন পরিস্থিতিতে চোখ খুলে যদি দেখতে পাই উটটি সামনে দাঁড়িয়ে আছে। সহীহ মুসলিমে বলা হয়েছে, এরূপ মৃত্যুর দুয়ার থেকে পুনর্জীবন লাভকারী ব্যক্তির খুশির চেয়ে তওবাকারীর তওবাতে আল্লাহ খুশি হন।

এটা মূলত আল্লাহর সীমাহীন দয়া ও  অনুগ্রহের অনুপম প্রমাণ বহন করে। তিনি এ কারণে বান্দার তওবাতে আনন্দিত হন না যে আমাদের তওবা তাঁর কাছে বড় প্রয়োজন। তিনি এসব থেকে অমুখাপেক্ষী বরং এটা তাঁর অন্তহীন দয়া। অপরিসীম ক্ষমা ও অনুপম ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। সুতরাং আমরা আর কালবিলম্ব না করে আল্লাহর দিকে ছুটে আসি এবং অনুতপ্ত হৃদয়ে তওবা করি। মহান আল্লাহ ক্ষমাশীল তিনি আমাদের ক্ষমা করতে চান। তিনি দিনের অপরাধীকে রাত পর্যন্ত এবং রাতের অপরাধীকে দিনভর ক্ষমা করার জন্য তাঁর হস্ত প্রসারিত করে রাখেন। রসুল (সা.)-কে এ ক্ষেত্রে আমাদের অনুসরণ করতে হবে। আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণিত তিনি বলেন আমি রসুল (সা)-কে বলতে শুনেছি আল্লাহর শপথ আমি দিনে ৭০ বারের অধিক আল্লাহর কাছে তওবা ইস্তেগফার করি। অপর এক সহীহ হাদিসে ১০০ বারের কথা উল্লেখ আছে।

তওবা করলে তিনটি বড় বড় উপকারিতা লাভ হয়। যথা : (১) আল্লাহ ও তাঁর রসুলের নির্দেশ পালন। এই নির্দেশ পালনে রয়েছে ইহকাল ও পরকালের পরম সৌভাগ্য; সমৃদ্ধি ও কল্যাণ। (২) রসুল (সা.) অনুসরণের মাধ্যমে আল্লাহর ভালোবাসা অর্জন করা যায়। (৩) তওবার মাধ্যমে গুনাহ কেবল মোচন করা হয় না বরং সেগুলো নেকিতে রূপান্তরিত করে দেওয়া হয় (ফুরকান-৭০) গুনাহ থেকে তওবা করলে তা কবুল হয় যদিও গুনাহ বারবার সংঘটিত হয় (সহীহ মুসলিম-৪৯৫৪)।

তাই আমাদের কালবিলম্ব না করে পাপে পুতি দুর্গন্ধময় জগৎ থেকে বের হয়ে অনাবিল সুন্দর ও আলোকিত ভুবনের দিকে ফিরে আসার জন্য তওবা করা উচিত। আমাদের উচিত আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে চির শান্তির নীড় জান্নাতের দিকে ধাবিত হওয়া। তাই আসুন অতীতে কৃত সব অপকর্ম ও গুনাহসমূহের জন্য আন্তরিকভাবে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি। আল্লাহ সুবহানুতায়ালা আমাদের প্রতিদিন বেশি বেশি তওবা করার তাওফিক দান করুন।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. আক্তার হোসেন রিন্টু
বার্তা ও বাণিজ্যিক বিভাগ : প্রকাশক কর্তৃক ৮২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক (৩য় তলা) ওয়্যারলেস মোড়, বড় মগবাজার, ঢাকা-১২১৭।
বার্তা বিভাগ : +8802-58316172. বাণিজ্যিক বিভাগ : +8801868-173008, E-mail: dailyjobabdihi@gmail.com
কপিরাইট © দৈনিক জবাবদিহি সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft