প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ১১:৪৬ পূর্বাহ্ন
লাগাতার গুলি ও বোমার শব্দে টানা তিনদিন তিন রাত ভয়-আতঙ্কে নির্ঘুম কেটেছে সীমান্তবাসীর। আজ আবারও মর্টারশেল পড়েছে ঘুমধুমে। মঙ্গলবার (৬ জানুয়ারি) সকালে ঘুমধুম এলাকার মধ্য পাড়ায় মর্টারশেল পড়েছে।
অন্যদিকে ঘুমধুমবাসী আরেকটি নির্ঘুম রাত পার করেছে। রাতভর গুলির আওয়াজ শোনা গেছে ওপারে। ভয় আর আতঙ্কের মধ্যে আবারও মিয়ানমার থেকে মর্টারশেল এসে পড়েছে। প্রাণ ভয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ঘর ছেড়েছে সীমান্তঘেঁষা স্থানীয়রা।
ঘুমধুম ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের ইউনিয়নে ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার বাইশ পারি তঞ্চঙ্গ্যা পাড়া থেকে ২০ পরিবার, ভাজাবনিয়া তঞ্চঙ্গ্যা পাড়া থেকে ৩০ পরিবার, তুমব্রু কোনার পাড়া থেকে ৩০ পরিবার, ঘুমধুম পূর্ব পাড়া থেকে ২০ পরিবার, তুমব্রু হিন্দু পাড়া থেকে ১০ পরিবার নিরাপদ আশ্রয়ে পাশবর্তী কক্সবাজার উখিয়া, মরিচ্যা, কোট বাড়িসহ বিভিন্ন এলাকার আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে সোমবার বিকেল থেকেই আশ্রয় নিয়েছে।
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ.কে.এম জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, আজকে টানা ৫-৬ দিন ধরে সীমান্তে মায়ানমারের ওপারে গোলাগুলির কারণে আতঙ্কে আছে একালাবাসী। আজকে রাতব্যাপী সীমান্তের ওপারে গোলাগুলির আওয়াজ শোনা গেছে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে চেয়ারম্যান আরও জানান, যতটুকু শুনেছি, ঘুমধুম ইউনিয়নের সম্মুখে মিয়ানমার সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর (বিজিপি) ক্যাম্প ও ফাঁড়ি আরাকান আর্মিরা দখলে নেওয়ার পর এখন ঢেঁকিবুনিয়া বিজিপি ক্যাম্প দখলের যুদ্ধ চলছে। স্থানীয়রা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে চলে গেছে। গোলাগুলি চলমান আছে। কখনও থেমে থেমে কখনও লাগাতার আওয়াজ শোনা যাচ্ছে।
ঘুমধুম পুলিশফাঁড়ির ইনচার্জ (আইসি) মাহাফুজ ইমতিয়াজ ভুঁইয়া জানান, সারা রাত গোলাগুলির আওয়াজ শোনা গেছে। সকাল পৌনে দশটা পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো ক্ষতি হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। মিয়ানমার থেকে যাতে কেউ অনুপ্রবেশ করতে না পারে সে ব্যাপারে পুলিশ-বিজিবি কড়া সতর্ক পাহাড়ায় আছে এবং জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী সীমান্তে বসবাসকারীদের স্থানীয় বাসিন্দাদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানান তিনি।
৩৪ বিজিবি ও বিজিবির প্রধান কার্যালয়ের গণসংযোগ বিভাগের তথ্য মতে, গেল রোবরার (৪ ফেব্রুয়ারি) থেকে সীমান্তে ওপারে প্রতিবেশী মায়ানমারে স্বাধীনতাকামী বিদ্রোহী গ্রুপ আরাকান আর্মির বনাম জান্তা সরকার মধ্যকার সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীদের ক্যাম্প, ফাঁড়ি দখলের চলমান লড়াইয়ে তুমুল যুদ্ধ চলছে। যুদ্ধে টিকতে না পেরে প্রাণ বাঁচাতে গত রোববার ৪ ফেব্রুয়ারি সালের ভোর রাত থেকে এই পর্যন্ত মোট ১১৪ জন মায়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের সদস্য (বিজিপি) বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) কাছে অস্ত্র সমর্পণ দিয়ে আশ্রয় নিয়েছে।