রাশিয়ার বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধ তদারকির দায়িত্বে নিয়োজিত শীর্ষ সামরিক কমান্ডারকে (সেনা প্রধান) বরখাস্ত করার পরিকল্পনা করছে ইউক্রেন। একথা হোয়াইট হাউজকে জানিয়েছে কিয়েভ। শুক্রবার এ বিষয়ে ওয়াকিবহাল দুটি সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে সামরিক ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন জেনারেল ভ্যালেরি জালুঝনি। গত বছর ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণের সময়, রুশ নিয়ন্ত্রণ থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অঞ্চল পুনরুদ্ধারে ব্যর্থ হন এই জেনারেল। এর পর বিরোধের সূত্রপাত হয় এবং তাকে পদচ্যুত করার এই পদক্ষেপ নেয়া হয়।
জেলেনস্কির কার্যালয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, নতুন সেনা সমাবেশ নিয়েও দুজনের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। জালুঝনি প্রস্তাব করেছেন, আরো ৫ লাখ নতুন সেন্য নিয়োগ দেয়ার জন্য। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি তার এই প্রস্থাবের বিরোধিতা করছেন।
সূত্র আরও বলেছে, কর্মকর্তারা এখন জেনারেল জালুঝনির স্থলে কাকে নিয়োগ দেওয়া হবে তা বিবেচনা করছেন। এ কারণে ইউক্রেন সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফ পদ থেকে জালুঝনিকে অপসারনের প্রক্রিয়া সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে।
আরেকটি ওয়াকিফহাল সূত্র বলেছে, জালুঝনির অপসারণ পরিকল্পনার বিষয়ে হোয়াইট হাউজ এখন পর্যন্ত তাদের অবস্থান বা কোনো মতামত প্রকাশ করেনি। হোয়াইট হাউজ বলেছে, ইউক্রেন তার কর্মকর্তাদের বিষয়ে নিজস্ব সার্বভৌম সিদ্ধান্ত নেবে।
ইউক্রেনের সেনাপ্রধান ও প্রেসিডেন্টের মধ্যে বেশ কয়েকবার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতানৈক্য দেখা দিয়েছিল। বর্তমানে ইউক্রেনে জেলেনস্কির চেয়ে বেশি জনপ্রিয় হলেন জেনারেল জালুঝনি। সম্প্রতি চালানো একটি জরিপে দেখা গেছে— যদি এ মুহূর্তে ইউক্রেনে নির্বাচন হয়; তাহলে এতে জালুঝনির কাছে হারবেন জেলেনস্কি। গত কয়েক মাস ধরে জেলেনস্কির জনপ্রিয়তা বহুলাংশে হ্রাস পেয়েছে।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে রাশিয়ার সেনাদের বিরুদ্ধে বহুল প্রত্যাশিত পাল্টা আক্রমণ শুরু করে ইউক্রেনীয় সেনারা। তবে সেটি পুরোপুরি ব্যর্থ হয়। এরপর নভেম্বরে সংবাদমাধ্যম দ্য ইকোনোমিস্টকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জেনারেল জালুঝনি বলেন, যুদ্ধ অচলাবস্থায় চলে যাচ্ছে।
শীর্ষ এই জেনারেল সাক্ষাৎকারে এমন বক্তব্য দেওয়ার পর সেটি প্রত্যাখ্যান করেন জেলেনস্কি। এছাড়া সামরিক বাহিনীতে সেনা নেওয়া নিয়েও রাজনৈতিক ও সামরিক বাহিনীর মধ্যে বিবাদ দেখা দিয়েছে।
ওয়াশিংটন পোস্ট তাদের প্রতিবেদনে আরও জানিয়েছে, জেলেনস্কি জেনারেল জালুঝনিকে বলেছেন, সাধারণ ইউক্রেনীয়রা যুদ্ধ নিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। এছাড়া পশ্চিমা মিত্ররাও আগের মতো অস্ত্র সহায়তা দিচ্ছে না। ফলে সাধারণ মানুষের ক্লান্তভাব কাটাতে এবং অস্ত্র সহায়তায় গতি আনতে সেনাবাহিনীতে ব্যাপক রদবদল প্রয়োজন।