প্রকাশ: শুক্রবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২৪, ১:৫৮ অপরাহ্ন
সম্প্রতি নেদারল্যান্ডসের হেগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ধারাবাহিক হামলা ও গণহত্যার অভিযোগে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে মামলা করে দক্ষিণ আফ্রিকা।
মামলার শুনানির প্রথম দিন দক্ষিণ আফ্রিকার আইনজীবীরা তাদের বক্তব্যে গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের আবেদন জানিয়ে বলেন, ফিলিস্তিনিদের ওপর গণহত্যা চালিয়ে গাজা উপত্যকাকে গুঁড়িয়ে দেয়ার বিষয়ে ইসরায়েলের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশ ছিল।
দক্ষিণ আফ্রিকার আইনজীবী হাসিম বলেন, গত ১৩ সপ্তাহে ইসরায়েলের গণহত্যা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, যা এই আদালতের আদেশ ছাড়া বন্ধ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে ফিলিস্তিনিদের ওপর গণহত্যা চালানোর অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে ইসরায়েল। আজ শুক্রবার আইসিজেতে গণহত্যার অভিযোগের বিষয়ে নিজেদের বক্তব্য উপস্থাপন করবে ইসরায়েল।
বার্তা সংস্থা এপি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এদিন দক্ষিণ আফ্রিকা মামলার পক্ষে প্রায় ৮৪ পৃষ্ঠার নথি দাখিল করেছে। শুনানিতে দক্ষিণ আফ্রিকার আইনজীবী ইসরায়েলের বিরুদ্ধে জেনোসাইড কনভেনশনের দুই নম্বর ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার করা এ মামলায় সমর্থন দিচ্ছে ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)। গত ৩০ ডিসেম্বর ৫৭ সদস্যের এই সংস্থায় সৌদি আরব, ইরান, পাকিস্তান, মরক্কোর মতো দেশ দক্ষিণ আফ্রিকাকে সমর্থন জানিয়েছে। ২ জানুয়ারি মালয়েশিয়ার পক্ষ থেকেও সমর্থনের কথা জানানো হয়। এছাড়া তুরস্ক, জর্ডান, বলিভিয়া, মালদ্বীপ, নামিবিয়ার পক্ষ থেকেও সমর্থন জানানো হয়েছে।
এদিকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যা মামলার শুনানির শুরুতে ‘পিস প্যালেস’ নামে পরিচিত আইসিজের বাইরের অংশে কয়েক শত ফিলিস্তিনি সমর্থক পতাকা হাতে স্লোগান দিচ্ছিলেন। বিক্ষুব্ধ ফিলিস্তিনি সমর্থকেরা অস্ত্রবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন। অন্যদিকে ইসরায়েলি সমর্থকেরা আদালতের বাইরে বড় স্ক্রিনে দেখিয়েছেন, গাজায় এখনো জিম্মিদের আটকে রাখা হয়েছে। তাদের সামাল দিতে ডাচ পুলিশের বেশ বেগ পেতে হয়।
প্রসঙ্গত, জাতিসংঘের ১৯৪৮ সালের গণহত্যা সনদে স্বাক্ষরকারী দেশগুলোর অন্যতম ইসরায়েল। জাতিসংঘের ওই সনদে যেসব দেশ সই করেছে তাদের গণহত্যা প্রতিহত করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আর আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের মতো আইসিজে গণহত্যার মতো অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচার করতে পারে না। তবে আইসিজের মতামত জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক অন্যান্য সংস্থায় গুরুত্ব বহন করে।