তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান মুসলিম দেশগুলোর কড়া সমালোচনা করেছেন। বলেছেন, তারা ব্যর্থ।
গতকাল সোমবার (১১ নভেম্বর) সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে অরগানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি) এবং আরব লীগের একটি যৌথ শীর্ষ বৈঠকে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বৈঠকে গাজায় চলমান গণহত্যা মোকাবিলায় মুসলিম দেশগুলোর প্রতিক্রিয়ার অভাবের সমালোচনা করেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট। তিনি মনে করেন, যখন কিছু পশ্চিমা দেশ ইসরায়েলকে পূর্ণ সমর্থন দিচ্ছে তখন আরব দেশগুলোর ভূমিকা অসাড়। রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেন, মুষ্টিমেয় কিছু পশ্চিমা দেশ ইসরায়েলকে সব ধরনের সামরিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নৈতিক সমর্থন দিয়েছে। অথচ মুসলিম দেশগুলো পর্যাপ্ত প্রতিক্রিয়া জানাতে ব্যর্থতার কারণে পরিস্থিতি এই পর্যায়ে পৌঁছেছে।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ইসরায়েলের লক্ষ্য হলো গাজায় বসতি স্থাপন করা। পূর্ব জেরুজালেমসহ পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের উপস্থিতি দূর করা এবং শেষ পর্যন্ত এই অঞ্চলকে তাদের ভূখণ্ড হিসেবে সংযুক্ত করা। এই লক্ষ্যের দিকে ধীরে ধীরে এগোচ্ছে ইসরায়েল। আমাদের অবশ্যই এটি প্রতিরোধ করতে হবে।
এরদোগান বলেন, ইসরায়েল এ পর্যন্ত গাজা ও অন্যান্য ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে প্রায় ৫০,০০০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। যাদের মধ্যে ৭০% নারী ও শিশু।
যুদ্ধবিধ্বস্ত উপত্যকাটিতে মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য জরুরি সমাধানের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে এরদোয়ান বলেন, ইসরায়েল গাজায় মানবিক ত্রাণ বিতরণ সহ্য করতে পারছে না। তুরস্ক যেসব ত্রাণ পাঠাচ্ছে সেসব কয়েক মাস ধরে মিসরে অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে।
এরদোয়ানের তথ্য মতে, আঙ্কারা এ পর্যন্ত গাজায় ৮৪,০০০ টনেরও বেশি সাহায্য পাঠিয়েছে এবং নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলে আরও অনেক কিছু পাঠাতে প্রস্তুত। মুসলিম দেশগুলোকেও এ কাজে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। এদিকে নীরবতা ভেঙে যুদ্ধ বন্ধ চেয়েছেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। সোমবার (১১ নভেম্বর) আরব লীগ ও অরগানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশনের যৌথ সম্মেলনের (ওআইসি) আগে তিনি এ দাবি জানান। আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান রিয়াদে আরব ও মুসলিম নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনে ইসরায়েলকে অবিলম্বে গাজা ও লেবাননে তাদের সামরিক আগ্রাসন বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন।
সোমবার আরব লীগ এবং অরগানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশন (ওআইসি) যৌথভাবে আয়োজিত শীর্ষ সম্মেলনের আগে এক ভাষণে তিনি ফিলিস্তিনি ও লেবাননের জনগণের বিরুদ্ধে সংঘটিত গণহত্যার নিন্দা জানান। তিনি ইসরায়েলকে আর কোনো আগ্রাসন না চালানোর জন্য আহ্বান জানান এবং ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানান।