ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের দোসর-দালালদের নির্যাতনের শিকার হয়ে এবং, ৪ মিথ্যা মামলা দিয়ে জমি দখলের চেষ্টাকারীকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়ার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান চিশতী।
সেইসঙ্গে গত ৭ই অক্টোবর ‘চ্যানেল টোয়েন্টিফোর’ টেলিভিশনে ‘বেশভুষা বদলে ভন্ড পীরের ধর্ম ব্যবসা’- শিরোনামে প্রচারিত একটি সংবাদের নিন্দা ও সংবাদটি মিথ্যা, ভিত্তিহীন, অবান্তর ও মানহানিকর দাবি এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি।
আজ শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এইসব দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ভুক্তভোগী সুফী মোখলেছুর রহমান চীশতীসহ মামলার অন্যান্য আসামী, আইনজীবী এবং শুভাকাঙ্খীবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে সুফী মোখলেছুর রহমান চিশতী লিখিত বক্তবে বলেন, জনৈক ডা: হাছান আলী চিশতী নামক এক ব্যক্তির মামলা, হামলাসহ নানা ধরণের নির্যাতন ও সম্মানহানির শিকার হয়ে আমি সর্বশান্ত হতে চলেছি। ডা: হাছান আলী চিশতী ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকারের সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী জনাব আ ক ম মোজাম্মেল হক এবং ঢাকা-১৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব মাইনুল হাসান খান নিখিলের অনুসারী। সেই সূত্র ধরেই তিনি রাজনৈতিক মদদপুষ্ট হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে মাদ্রাসা এবং মসজিদ নির্মাণের জন্য আমার ক্রয়কৃত জমি আত্মসাৎ করার সকল আয়োজন সম্পন্ন করেছেন। আমাকে এবং আমার পরিবার ও শুভাকাঙ্খীদের মামলা, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হুমকি দিয়ে হয়রানী করছেন।
এছাড়াও গত ৭ই অক্টোবর ‘চ্যানেল টোয়েন্টিফোর’ টেলিভিশনে ‘বেশভুষা বদলে ভন্ড পীরের ধর্ম ব্যবস ‘- শিরোনামে আমার সম্পর্কে একটি অবান্তর ও ভুয়া তথ্য সম্বলিত সংবাদ প্রকাশ করার জন্য ওই প্রতিবেদনের প্রতিবেদক সাংবাদিক জনাব রমিজ হোসাইন ভাইকে প্ররোচিত করেছেন। আমি মনে করি, সাংবাদিক রমিজ হোসেন ভাই ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের দোসর ও দালালদের প্ররোচনায় প্ররোচিত হয়ে সংবাদটি প্রচার করেছেন।
তিনি বলেন, আমি হলফ করে বলতে পারি যে, ওই প্রতিদেনে যাদের বক্তব্য প্রচার করা হয়েছে, তাদের অধিকাংশই ডা: হাসান আলীর প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী এবং নিকটাত্মীয়, যারা চাকরি হারানোর ভয়ে এবং নিকটাত্মীয় হওয়ায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন। আমি সুফীবাদ চর্চা করি, সুফীবাদ প্রচার করি, সুফীবাদের দাওয়াত দিয়ে থাকি, যদি আইনগতভাবে এবং সাংবিধানিকভাবে ইহা কোনো অপরাধ হয়, তাহলে সেই অপরাধ আমি করেছি। এছাড়া অন্য যে সকল অভিযোগ করা হয়েছে, তা আমি কোনোদিন করিনি।
সুফী মোখলেছুর রহমান চিশতী জানান, ২০০৮ সালে এটিএন বাংলার “তিন চাকার তারকা” শিরোনামে প্রতিযোগিতামূলক একটি রিয়্যালিটি শো’তে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে লাখো দর্শক-শ্রোতার ভোটে তিনি দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন এবং সেইসঙ্গে তিনি এটিএন বাংলার দেয়া “এটিএন তিন চাকার তারকা” খ্যাতি অর্জন করেন। এর আগে জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে তিনি সিএনজিচালিত অটোরিক্সা ভাড়ায় চালাতেন। কিন্তু তারকা খ্যাতির পর তাকে আর কখনও সিএনজিচালিত অটোরিক্সার হাতল ধরতে হয়নি।
মোখলেছুর রহমান চিশতী বলেন, আমার সঙ্গীত জীবনের উপার্জিত সঞ্চিত অর্থ, গ্রামের বাড়ির পৈতৃক জমি বিক্রি করা/বন্ধক দেওয়া অর্থ এবং আমার চাকুরিজীবী ছেলে সন্তানের ব্যাংক লোন করা অর্থ দিয়ে ঢাকা জেলাস্থ সাভার উপজেলাধীন কাউন্দিয়া ইউনিয়নের উত্তর কাউন্দিয়া মৌজায় একটি জমি ক্রয় করি এবং একজন শুভাকাঙ্খীর ন্যায় ডা: হাছান চিশতী প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত থাকবে বলে একসাথে জমি ক্রয় করেন এবং তার অংশটুকু প্রতিষ্ঠানের নামে ওয়াকফ্ করবে মর্মে ইচ্ছা পোষণ করেন। এই সখ্যতার সূত্র ধরে, ডা: হাছান চিশতী কুটচালে আমাকে ভুল বুঝিয়ে যৌথ মালিকানায় দলিল নং ৩৫৯৪ ও ১৪১৮০ যথাক্রমে ১২.৮৮ ও ১.৭৫ শতাংশ সর্বমোট ১৪.৬৩ শতাংশ ভূমি ক্রয় করেন। যে ক্রয়কৃত সম্পত্তির বাজারমূল্য এবং জমির রেজিস্ট্রি খরচসহ ২৩ লাখ টাকার অর্ধেক সাড়ে ১১ লাখ টাকা আমি জমির মালিককে প্রদান করি এবং বাকি অর্ধেক টাকা জনৈক ডা: সৈয়দ গোলাম হাছান চিশতীও প্রদান করেন। অতপর বিগত ২০২২ সালের শেষের দিকে আমি নিজ খরচে ক্রয়কৃত জমি মাটি দিয়ে ভরাট করি এবং জমির সীমানা প্রাচীর বাঁশে তৈরী বেড়া দিয়ে নির্মাণ করি। এরপর থেকে আমি এবং হাসান চিশতী উভয়েই শান্তিপূর্ণভাবে জমিটি ভোগদখলে বিদ্যমান থাকি। কিন্তু পরবর্তীতে ডা: হাছান আলী চিশতী ওই জমিটি গ্রাস করার ষড়যন্ত্র করছেন। তারই ধারাবাহিকতায় ডা: হাছান চিশতী আমার বিরুদ্ধে ‘চ্যানেল টোয়েন্টিফোর’ টেলিভিশনে ‘বেশভুষা বদলে ভন্ড পীরের ধর্ম ব্যবসা’ শিরোনামে একটি অবান্তর, ভিত্তিহীন, মিথ্যা সংবাদ প্রচারের জন্য চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের সাংবাদিককে প্ররোচিত করেছেন।
মোখলেছুর রহমান চিশতী জানান, মাদ্রাসা এবং মসজিদের জন্য ক্রয়কৃত জমিটি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। তিনি আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই আদালতের কাছে ন্যায় বিচার প্রার্থনা করেছেন। এরই মধ্যে তাকে সামাজিকভাবে হ্যায়-প্রতিপন্ন করার জন্যই ডা: হাছান চিশতী তার বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা সংবাদ প্রচারের জন্য সাংবাদিককে প্ররোচিত করেছেন।