লেবাননে স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েল। অন্যদিকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পাল্টা প্রস্তুতি নিয়েছে লেবাননের প্রতিরোধ যোদ্ধা হিজবুল্লাহ। দুই দেশের সেনাদের পাল্টাপাল্টি এ হামলায় ইসরায়েলের অন্তত দুই সেনা নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৮ জন।
আজ বুধবার (০২ অক্টোবর) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমে বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ ভোরে লেবাননের সীমান্তবর্তী ওদাইশেহ শহরে হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরায়েলি বাহিনীর সংঘর্ষ হয়েছে। এতে দুই সেনা নিহত এবং ১৮ জন আহত হয়েছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার ইসরায়েল লেবাননে স্থল অভিযান শুরুর ঘোষণা দেওয়ার পর এটি প্রথম মুখোমুখি সংঘর্ষ।
আলজাজিরা জানিয়েছে, ইসরায়েলের জন্য দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে স্থল অভিযান গাজায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাসের মুখোমুখি হওয়ার চেয়ে অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং। কেননা হিজবুল্লাহ একটি শক্তিশালী শত্রুপক্ষ, যারা দীর্ঘ প্রশিক্ষণ নিয়েছে এবং তাদের সৈন্যরা সিরিয়ায় বহু বছর ধরে যুদ্ধ করেছে।
এর আগে আলজারিরা জানায়, লেবাননে স্থল হামলা শুরুর পর ইসরায়েলের পদাতিক বাহিনী প্রথমবারের মতো মুখোমুখি প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়েছে। বুধবার ভোরে ওদাইসেহ শহরে অনুপ্রবেশ করার চেষ্টাকালে লেবাননের যোদ্ধারা তাদের গতিরোধ করে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সেখানে ব্যাপক যুদ্ধ চলছে।
এ ব্যাপারে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি আলজাজিরার কাছে পাঠিয়েছে হিজবুল্লাহ। অঞ্চলটিতে থাকা সাংবাদিকরাও যুদ্ধের আঁচ পাচ্ছেন। হিজবুল্লাহ দাবি করেছে, এখন পর্যন্ত লড়াইয়ে তারা সুবিধাজনক অবস্থানে থেকে জয়ের পথে। ইসরায়েলি পদাতিক বাহিনী বাধ্য হয়েছে পিছু হটতে এবং তারা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।
অসমর্থিত সূত্রের বরাতে আলজাজিরার সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, আহতদের হেলিকপ্টারে করে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে সরিয়ে নিচ্ছে ইসরায়েল। তাদের উত্তর ইসরায়েলের সামরিক ঘাঁটিতে একে একে স্থানান্তর করা হচ্ছে। সেখানে অন্তত ২০টি অ্যাম্বুলেন্সের অবস্থান এবং অন্যান্য কর্মযজ্ঞ বড় ক্ষয়ক্ষতির ইঙ্গিত জোরালো করছে। তবে হতাহতদের সংখ্যা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ওদাইসেহ শহরে যুদ্ধের মাত্রা এতই ভয়ংকর পর্যায়ে পৌঁছেছে, তার আশপাশের এলাকা থেকে সংবাদ সংগ্রহ করাও অসম্ভব।
ইসরায়েল স্থল হামলা শুরুর ঘোষণা দিয়েই সীমান্তবর্তী ৩টি অঞ্চলে আর্টিলারি ইউনিট থেকে তীব্র গোলাবর্ষণ করে। এর একটি এলাকা ওদাইসেহ। ধারণা ছিল, তারা এলাকাটিতে নির্বিঘ্নে প্রবেশের পথ তৈরি করেছে। কিন্তু পদাতিক বাহিনী প্রবেশের চেষ্টাকালেই অপ্রত্যাশিত কঠোর প্রতিরোধের মুখে পড়ে। আর এটিই এবারের প্রথম মুখোমুখি যুদ্ধ। হতাহতের বিষয়টি এড়িয়ে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীও এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তা স্বীকার করেছে।