ছাত্র-জনতার জুলাই-গণঅভ্যুত্থাণের একমাস উপলক্ষে আজ দেশব্যাপী শহীদী মার্চ কর্মসূচি পালন করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বিকেল ৩ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে এই মার্চ শুরু হবে।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমম্বয়ক সারজিস আলম এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
তিনি জানান, মার্চটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নীলক্ষেত, সাইন্সল্যাব, ধানমন্ডি ২৭, সংসদ ভবন, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, বাংলামোটর, শাহবাগ হয়ে শহীদ মিনারে শেষ হবে। ঢাকা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় শহর, জেলা, উপজেলায় এই কর্মসূচি পালিত হবে।
শহীদী মার্চে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদদের ছবি, তারা অনুপ্রেরণা পেয়েছেন এমন বাণী বা কথাসহ বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড থাকবে। এতে শহীদ পরিবারের সদস্যদের অংশগ্রহণের আহবান জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
মিছিলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল, সরকারি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকার বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
২০২৪ সালের ৫ জুন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর বাংলাদেশ সরকারের জারি করা পরিপত্রকে অবৈধ ঘোষণার পর কোটা পদ্ধতির সংস্কার আন্দোলন আবার নতুনভাবে আলোচনায় আসে।
শুরুতে আন্দোলন সভা-সমাবেশের মধ্যে স্থির থাকলেও ১৪ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার এক বক্তব্যে কোটা আন্দোলনকারীদের পরোক্ষভাবে “রাজাকারের নাতি-পুতি” হিসেবে অভিহিত করেন। এর পরেরদিন ১৫ জুলাই আওয়ামী লীগ ও সরকারের বিভিন্ন কর্মকর্তা, মন্ত্রী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’ নষ্ট করার অভিযোগ আনেন।
একই দিন দেশের বিভিন্ন স্থানে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেতৃত্বে শিক্ষার্থী ও আন্দোলনকারীদের উপর রড, লাঠি, হকি স্টিক, রামদা, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা করা হয়। একই সাথে পুলিশও লাঠি, রাবার বুলেট দিয়ে হামলা করে।
প্রতিবাদে আন্দোলনকারীও তাদের দিকে ইটের টুকরা ছুড়ে ও উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এসব হামলায় ১৬ জুলাই থেকে আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হয়। ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আবু সাঈদ পুলিশের গুলিতে নিহত হলে আন্দোলন স্ফুলিঙ্গের মত পুরো দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে পড়ে।
১৯ জুলাই পর্যন্ত ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের অনান্য সংগঠন, বিজিবি, র্যাব, পুলিশ দিয়ে ও ইন্টারনেট বন্ধ করেও আন্দোলন থামাতে কার্যত ব্যর্থ হলে সরকার দেশজুড়ে কারফিউ জারি করে এবং মাঠে সেনাবাহিনী নামায়। এইসব ঘটনায় কয়েক হাজার শিক্ষার্থী (প্রায় ২১ হাজার শিক্ষার্থী) ও আন্দোলনকারী আহত হওয়ার পাশাপাশি ৬৭৩ জনের অধিক নিহত হন।