আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের আদেশ উপেক্ষা করে রাফায় হামলা বন্ধ না করলে ইসরায়েলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মন্ত্রীরা।
আয়রাল্যান্ডের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম আরটিই’র বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
আয়ারল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইকেল মার্টিন বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রথমবারের মতো গাজা যুদ্ধের জন্য ইসরায়েলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে আলোচনা করেছে।
মার্টিন বলেন, ইসরায়েল যদি রাফায় আক্রমণ বন্ধ করার জন্য আইসেজের রায় মেনে না নেয়, তাহলে সম্ভাব্য ব্যবস্থা হিসেবে নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে আলোচনা করবে ইইউ।
আয়ারল্যান্ড এ নিষেধাজ্ঞা সমর্থন করবে বলেও উল্লেখ করেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্টিন। তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলের কাছ থেকে যদি যুদ্ধ বন্ধে সম্মতি না পাওয়া যায়, তবে আমাদের সব বিকল্পগুলো বিবেচনা করতে হবে।’ এটিই প্রথমবার ইইউর মন্ত্রীরা ‘নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা’ করলেন।
মার্টিন আরও বলেন, যেসব ইসরায়েলি কর্মকর্তা পশ্চিম তীরে সহিংসতা সৃষ্টি ও বসতি স্থাপনকারীদের সহায়তা সহায়তা করছে, তাদের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার বিষয়টি উত্থাপন করেছেন, বেশ কয়েকজন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এ ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের বিষয়ে আলোচনা করতে আরব দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে দেখা করেন। ইউ মন্ত্রীরা সৌদি আরব, জর্ডান, মিসর, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকটের দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের বিষয়ে আলোচনা করেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতির প্রধান জোসেপ বোরেল সোমবার ব্রাসেলসে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের বলেন, বৈঠকে কীভাবে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান বাস্তবায়ন করা যায়, সে সম্পর্কে একটি যৌথ সম্মেলন আয়োজনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
গত সপ্তাহে আয়ারল্যান্ড, স্পেন ও নরওয়ে ঘোষণা করেছে, তারা আজ (২৮ মে) থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে।
অপরদিকে, জাপান ইসরায়েলকে বলেছে, রাফায় হামলা বন্ধ করার জন্য আইসিজের আদেশ বাস্তবায়ন আইনিভাবে বাধ্যতামূলক এবং অবশ্যই তা পালন করা উচিত। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী কামিকাওয়া ইয়োকো ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেন, টোকিও গাজায় ‘অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি’ দেখতে চায়। আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের রায় আন্তর্জাতিক আইনের অনুযায়ী বাধ্যতামূলক এবং যথাযথভাবে পালন করা আবশ্যক৷
এদিকে, রাফার আল-হাশাশিন এলাকায় একটি বাড়িতে ইসরায়েলি হামলায় সাতজন নিহত এবং ছয়জন আহত হয়েছে।
হামলার প্রত্যক্ষদর্শী একজন ফিলিস্তিনি আলজাজিরাকে বলেন, ‘এটি একটি নিরাপদ অঞ্চল ছিল। এখানে বাস্তুচ্যুত লোকজনের আশ্রয় শিবির। হঠাৎ একটি ক্ষেপণাস্ত্র এসে পড়ে। আমরা রাস্তায় মানুষ, বাস্তুচ্যুত মানুষ ও বাসিন্দাদের ছুটতে দেখেছি। এখানে কোনো (হামাস) যোদ্ধা বা কিছু ছিল না। এটি একটি নিরাপদ অঞ্চল ছিল!’
রাফা শহরে বাস্তুচ্যুত লোকদের একটি শিবিরে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৪৫ জন নিহত হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মাথায় এ হামলা চালানো হলো।