প্রকাশ: শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১২:৪২ অপরাহ্ন
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা শেষে পটকা ফুটানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে মো. ইয়াকুব নামে এক যুবক সমর্থক নিহত হয়েছে। এতে নিমিষেই বিলীন হয়ে যায় খেলার আনন্দ। এ ঘটনায় আরো অন্তত পাচজন আহত হয়।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের নরসিংসার গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। খুন হওয়া ইয়াকুব নরসিংসার উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত মো. আবদুল্লাহ’র ছেলে। তিনি একজন পেশায় নির্মাণ শ্রমিক ছিলেন।
পুলিশ ও খেলা আয়োজক কমিটি সূত্রে জানা গেছে, গত ১৩ এপ্রিল সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের নরসিংসার গ্রামে 'সামিউন বাছির ফুটবল টুর্ণামেন্ট' শুরু হয়। টুর্ণামেন্টে গ্রামের ১৪টি দল অংশ নেয়। শুক্রবার ফুটবল টুর্ণামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। খেলায় গ্রামের নাজাত গোষ্টির নরসিংসার পশ্চিমপাড়া স্পোর্টিং ক্লাব ও উত্তরপাড়ার একই গোষ্ঠীর টাইগার স্পোর্টিং ক্লাব অংশ নেয়। বিকেল পাঁচটায় খেলা শুরু হয়। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে কোনো দলই গোল করতে পারেনি। ট্রাইবেকারে খেলার ফলাফল নির্ধারণ করা হয়। ট্রাইবেকারে ২-১ গোলে নরসিংসার পশ্চিমপাড়া স্পোর্টিং ক্লাব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে
খেলা শেষ হওয়ার পর চ্যাম্পিয়ন দলের খেলোয়াড় ও সমর্থকেরা মাঠে ফটকা ফুটিয়ে আনন্দ করতে থাকে। এ সময় আয়োজকদের পক্ষ থেকে মাইকে ফটকা ফুটানো বন্ধের জন্য ঘোষণা দেওয়া হয়। এক পর্যায়ে দ্বীন ইসলাম দিলু নামে একজন এগিয়ে গিয়ে চ্যাম্পিয়ন দলের পশ্চিমপাড়ার খেলোয়াড়দের পটকা ফুটানো বন্ধ করতে বলেন। এ নিয়ে একই গোষ্টির পশ্চিমপাড়ার সাবেক ইউপি সদস্য কুদ্দুস মিয়ার ছেলে চিকিৎসক মো. তারেকের সঙ্গে তারই চাচাতো ভাই দ্বীন ইসলামের কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। এক পর্যায়ে তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পশ্চিমপাড়ার চিকিৎসক তারেক, তার বড় ভাই রায়হান ও ছোট মো. তারিফ সংঘর্ষে সম্পৃক্ত হয়। তারেক এক পর্যায়ে ছুরি নিয়ে উত্তরপাড়ার ইয়াকুবকে উপর্যপুরি আঘাত করে। সংঘর্ষে অন্তত সাত থেকে আটজন আহত হয়।খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।তবে ঘটনার পর থেকে চিকিৎসক তারেক ও তার পক্ষের লোকজন পলাতক রয়েছেন।
এদিকে আহতদের উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎক ইয়াকুবকে মৃত ঘোষণা করেন। আহতদের মধ্যে মো. কামাল (৩৮) ও জুয়েল মিয়াকে (২৭) উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসলাম হোসন জানান, ফুটবল টুর্ণামেন্টের ফাইনাল খেলা শেষ হলে পটকা ফুটানোকে কেন্দ্র করে একই গোষ্টির দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি থেকে সংঘর্ষ হয়। পশ্চিমপাড়ার দলের চিকিৎসক মো. তারেকের ছুরিকাঘাতে ইয়াকুব নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে লোকজন অভিযোগ করছে। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে সে অনুযায়ি প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।