পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিনেও ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে থেমে নেই ইসরায়েলি বাহিনীর হত্যাযজ্ঞ। গত ২৪ ঘণ্টায় গাজার শাসকগোষ্ঠী ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের শীর্ষ নেতা ইসমাইল হানিয়ার তিন ছেলে ও এক নাতিসহ ১২২ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন ৫৬ জন। বুধবার (১০ এপ্রিল) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই তথ্য জানিয়েছে।
স্থানীয় সময় বুধবার (১০ এপ্রিল) আল-জাজিরা আরবিকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে হানিয়াহ জানিয়েছেন, তার সন্তান হাজেম, আমির এবং মোহাম্মদসহ তার ১ নাতি হামলায় প্রাণ হারিয়েছে।
তিনি আরো জানিয়েছেন, ঈদ উপলক্ষ্যে আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে শাতি শরণার্থী ক্যাম্পে গিয়েছিলেন তার ছেলেরা। ওই সময় হামলা চালানো হয়। তিনি বলেন, নেতাদের বাড়িঘর ও পরিবারের সদস্যদের ওপর হামলা চালিয়ে হামাসকে থামানো যাবে না।
তিনি বলেছেন, কোনো সন্দেহ নেই এই শত্রুরা প্রতিশোধ, হত্যা এবং রক্তপাতে উদ্বুদ্ধ হয়েছে এবং তারা কোনো আইন মানেনা। হানিয়া জানিয়েছেন, চলমান যুদ্ধে এখন পর্যন্ত তার পরিবারের ৬০ সদস্য নিহত হয়েছেন।
“ফিলিস্তিনের সন্তানদের চেয়ে আমার সন্তানদের রক্তের মূল্য বেশি নয়। ফিলিস্তিনের সকল শহীদ আমার সন্তান।” যোগ করেন হানিয়া।
গাজার মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, আল শাতি শরণার্থী ক্যাম্পে হানিয়ার ছেলেরা নিহত হয়েছেন। সেখানে বেসামরিকদের বহনকারী একটি গাড়িতে ইসরায়েলি বিমান থেকে হামলা চালানো হয়।
ঈসমাইল হানিয়ার পরিবার-পরিজন গাজাতে থাকলেও নিরাপত্তার কারণে তিনি কাতারে বসবাস করেন। সেখান থেকেই দলটির সব কার্যক্রম পরিচালনা করেন তিনি।
হানিয়ার বাড়িটি ‘সন্ত্রাসী অবকাঠামো হিসেবে ব্যবহৃত হতো’ বলে অভিযোগ করেছে আইডিএফ।তারা বলেছে, 'হানিয়ার বাড়ি সন্ত্রাসী অবকাঠামো হিসেবে ব্যবহার করা হতো আর প্রায়ই সেটি ইসরায়েলের বেসামরিক ও আইডিএফ সেনাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলা পরিচালনার জন্য জ্যেষ্ঠ হামাস নেতাদের বৈঠক স্থলের কাজ করতো।' প্রতিবেদনে বলা হয়, তারা ইসরায়েলের এসব অভিযোগ স্বাধীনভাবে যাচাই করতে সক্ষম হয়নি।
হানিয়াকে ব্যাপকভাবে হামাসের সামগ্রিক নেতা বলে বিবেচনা করা হয়। ২০১৭ সালে তিনি হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর প্রধান নির্বাচিত হন। তবে কয়েক বছর ধরে তিনি কাতারে বসবাস করছেন।
২০০৬ সালে হানিয়াকে ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। কিন্তু ২০০৭ সালে হামাস প্রাণঘাতী এক সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে আব্বাসের ফাতাহ পার্টিকে গাজা থেকে হটিয়ে দেয়। এরপর আব্বাস হানিয়াকে বরখাস্ত করেন। আব্বাসের এই পদক্ষেপকে ‘অসাংবিধানিক’ অভিহিত করে নাকচ করে দেন হানিয়া। সূত্র: আল-জাজিরা