প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৯:৪৯ অপরাহ্ন
মুয়ানাকা বা কোলাকুলি ভালোবাসা প্রকাশের শ্রেষ্ঠ পন্থা ও স্নেহের নিদর্শন। আমাদের সমাজে এটি ঈদের দিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। তবে এটি ঈদের দিনের জন্য খাস কোনো আমল নয়। বরং দীর্ঘদিন পর একে অন্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে কোলাকুলি করা সুন্নত।
আনাস (রা.) বলেন, সাহাবায়ে কেরাম একে অন্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে মুসাফাহা করতেন। আর সফর থেকে প্রত্যাবর্তন করলে মুয়ানাকা করতেন। (তাবারানি কাবির: ৯৭; মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা: ২৬২৩৪; মাজমাউজ জাওয়ায়েদ: ১২৭৬৫
হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- ‘জায়েদ বিন হারেসা (রা.) মদিনায় এলেন। তখন রাসুল (স.) আমার গৃহে ছিলেন। জায়েদ এসে রাসুল (স.)-এর দরজায় কড়া নাড়লেন। রাসুল (স.) তখন বেরিয়ে গেলেন খালি গায়েই। আল্লাহর কসম আমি এর আগে কখনো রাসুল (স.)-কে খালি গায়ে দেখিনি। তারপর তিনি তার সাথে কোলাকুলি করলেন এবং তাকে চুমু খেলেন। (তাহাবি: ৬৯০৫, সুনানে তিরমিজি: ২৭৩২, শরহুস সুন্নাহ: ৩৩২৭)
কোলাকুলির পদ্ধতি
কোলাকুলি বা মুয়ানাকার সুন্নত পদ্ধতি হলো- একে অপরের ডান দিকের ঘাড়ের সঙ্গে ঘাড় মেলানো। বুকের সঙ্গে বুক মিলে গেলে কোনো সমস্যা নেই। তবে মুয়ানাকা শুধু একবার করতে হয়। তিনবার করার কথা হাদিস বা ফিকহের কিতাবে নেই। (আহসানুল ফতোয়া: ৯/৭৭)
মুয়ানাকা করার সময় এই দোয়া পড়া উচিত— اللهم زد محبتي لله ورسوله উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা জিদ মুহাব্বাতী লিল্লাহি ওয়া রাসুলিহি।’ অর্থ: ‘আল্লাহ আমাদের মধ্যে আল্লাহর ওয়াস্তে পরস্পর ভালোবাসা বৃদ্ধি করে দিন।’ (জামেউস সুনান: ১৫৯)
ঈদের দিন কোলাকুলির বিধান
ঈদের জামাতের পর সবার সঙ্গে কুলাকুলি শুরু করে দেওয়া একটি প্রথা মাত্র; সুন্নত বা মোস্তাহাব কিছুই নয়। তবে ঈদের দিন যদি কোনো কাছের মানুষের সঙ্গে দীর্ঘদিন পর দেখা হয়, তাহলে সালাম বিনিময়ের পর মুসাফাহা ও মুয়ানাকা করতে সমস্যা নেই। কিন্তু এটিকে ঈদের নামাজের পরের সুন্নত মনে করলে বিদআত হবে। (রদ্দুল মুহতার: ৬/৩৮১; আসসিআয়াহ: ২/২৬৪, ২৬৫)
রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন- مَنْ أَحْدَثَ فِي أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ مِنْهُ فَهُوَ رَدٌّ ‘যে ব্যক্তি আমাদের দ্বীনের মাঝে এমন বিষয়ের নতুন কিছু চালু করে, যা এর অন্তর্ভুক্ত ছিল না, তাহলে সে কাজটি বর্জনীয়।’ (সহিহ মুসলিম: ১৭১৮; সহিহ বুখারি: ২৬৯৭ ইবনে মাজাহ: ১৪ সহিহ ইবনে হিব্বান: ২৭)