হেপাটাইটিস ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন ৩ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে এবং বিশ্বব্যাপী এই সংখ্যা আরো বেড়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দ্বিতীয় বৃহত্তম সংক্রামক ঘাতকের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সংস্থাটি এ কথা জানায়।
এই সপ্তাহে পর্তুগালে বিশ্ব হেপাটাইটিস সম্মেলন উপলক্ষ্যে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
ডব্লিউএইচও-এর ওই প্রতিবেদন অনুসারে, ১৮৭টি দেশের নতুন তথ্যে দেখা গেছে, ভাইরাল হেপাটাইটিসে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ২০২২ সালে ১৩ লাখে দাঁড়িয়েছে। যা ২০১৯ সালে ছিল ১১ লাখ।
ডব্লিউএইচও -এর গ্লোবাল এইচআইভি, হেপাটাইটিস এবং যৌন-সংক্রমিত সংক্রমণ কর্মসূচির প্রধান মেগ ডোহার্টি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘সংখ্যাটি আশঙ্কাজনক।’ প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, হেপাটাইটিস সংক্রমণে বিশ্বব্যাপী প্রতিদিন ৩ হাজার ৫০০ জন মারা যাচ্ছে।
এদের মধ্যে হেপাটাইটিস বি-এ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৮৩ শতাংশ, হেপাটাইটিস-সি-এর কারণে মারা গেছে ১৭ শতাংশ।
হেপাটাইটিস ভাইরাসের কিছু কার্যকর জেনেরিক ওষুধ রয়েছে। যার মাধ্যমে এই ভাইরাসগুলো প্রতিরোধ করা সম্ভব। তবে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দীর্ঘস্থায়ী হেপাটাইটিস-বি আক্রান্তদের মধ্যে মাত্র তিন শতাংশ ২০২২ সালের শেষ নাগাদ অ্যান্টিভাইরাল চিকিৎসা পেয়েছে।
এ ছাড়া হেপ সি-এর আক্রান্ত মাত্র ২০ শতাংশ - বা ১২.৫ মিলিয়ন লোককে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
ডব্লিউএইচও প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রিয়েসাস এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘হেপাটাইটিস সংক্রমণ প্রতিরোধে বিশ্বব্যাপী অগ্রগতি সত্ত্বেও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। কারণ হেপাটাইটিসে আক্রান্ত খুব কম লোকেরই নির্ণয় এবং চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফ্রিকার নতুন হেপ বি সংক্রমণের ৬৩ শতাংশের জন্য দায়ী, তবুও মহাদেশে প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজনেরও কম শিশুকে জন্মের সময় টিকা দেওয়া হয়। জাতিসংঘের সংস্থাটি দুঃখ প্রকাশ করে বলেছে, ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোতে জেনেরিক হেপাটাইটিস ওষুধের পর্যাপ্ত অ্যাক্সেস নেই এবং তাদের আরো বেশি অর্থ প্রদান করা উচিত।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, হেপাটাইটিসের দুই তৃতীয়াংশই রোগীই বাংলাদেশ, চীন, ইথিওপিয়া, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, রাশিয়া এবং ভিয়েতনামের।
ডব্লিউএইচও এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘২০২৫ সালের মধ্যে এই ১০টি দেশে প্রতিরোধ, রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার সার্বজনীন সুবিধা প্রয়োজন। পাশাপাশি আফ্রিকান অঞ্চলে জোর প্রচেষ্টার পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী এর কার্যক্রম সঠিক পথে ফিরিয়ে আনা অপরিহার্য।’