প্রকাশ: শুক্রবার, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ১১:২৭ অপরাহ্ন
তাঁকে গুলি করা হয়েছে। এরপর পাঠানো হয়েছে জেলে। তাঁর রাজনৈতিক দলকে কার্যত নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং মূলধারার মিডিয়া থেকে মুছে ফেলা হয়েছে নাম। তবে শেষ করা যায়নি ইমরান খানকে। পাকিস্তানে বৃহস্পতিবারের নির্বাচনের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, সেনাবাহিনীর নজিরবিহীন দমনপীড়ন এবং বেশুমার জালিয়াতির অভিযোগের মধ্যেই ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) পার্টির সঙ্গে যুক্ত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জাতীয় আইনসভায় অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছেন।
নির্বাচনে পিটিআইর বিখ্যাত ক্রিকেট-ব্যাট প্রতীক নিষিদ্ধ করেছে সেনানিয়ন্ত্রিত সরকার। তারপর ইমরানের জয়ের আশঙ্কায় ভোটের দিন দেশব্যাপী মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট বন্ধ রাখা হয়। এতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করে নির্বাচন পরিচালনা করা পিটিআই। সত্যিকার জনমতের প্রতিফলন প্রকাশ রোধে নিষিদ্ধ করা হয় বুথ ফেরত সমীক্ষাও। পিটিআই নেতারা অভিযোগ করেছেন, তাদের এজেন্টদের ভোটকেন্দ্রে বাধা দেওয়া হয়। সর্বশেষ কৌশল হিসেবে ভোটের ফলাফল প্রকাশে অস্বাভাবিক দেরি করা হয়। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এটা ছিল অত্যন্ত সন্দেহজনক পদক্ষেপ।
অবশেষে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ১০ ঘণ্টা পর ফলাফল আসতে শুরু করে। তাতে দেখা যায়, তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজকে (পিএমএল-এন) ব্যাপক ব্যবধানে পেছনে ফেলেছে পিটিআই। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর ছেলে বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) আছে তৃতীয় স্থানে। নওয়াজ পাকিস্তানের শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর পছন্দের প্রার্থী।
বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় বিকেল ৫টায় ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পর শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত পার্লামেন্টের ২৬৬টি আসনের মধ্যে ২২৪টির ফল প্রকাশ করেছে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন (ইসিপি)।
পাকিস্তানের জিও নিউজ জানায়, এসব আসনের মধ্যে পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৯১টি আসনে জয় পেয়েছে। বিপরীতে পিএমএল-এন প্রার্থীরা ৬৪ এবং পিপিপি প্রার্থীরা ৫০টিতে জয় পেয়েছে। ৪১টি আসনের ফল প্রকাশ হয়নি এবং একটিতে ভোট স্থগিত করা হয়েছে।
জাতীয় পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য একটি দলকে অন্তত ১৩৩টি আসনে জয় পেতে হবে। কিন্তু বিশ্লেষকদের ধারণা, সেনাবাহিনীর কারসাজিতে এবারের ভোটে কোনো দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না। ফলে দলগুলোকে জোট গঠনে ঐকমত্যে পৌঁছতে হবে। গঠিত হতে পারে ঝুলন্ত সংসদ। এটা ছিল সেনাবাহিনীর শেষ বিকল্প।
জাতীয় পরিষদের পাশাপাশি ২৯৬ আসনের পাঞ্জাব প্রাদেশিক পরিষদ, ১৩০ আসনের সিন্ধু, ১১৩ আসনের খাইবার পাখতুনখোয়া এবং ৫১ আসনের বেলুচিস্তানের জন্য ভোট গ্রহণ করা হয় বৃহস্পতিবার। সব মিলিয়ে এ নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন প্রায় ১৮ হাজার।