উইমেন'স সাফ চ্যাম্পিয়ন বিজয়ী পাহাড়ের তিন কন্যা রূপনা চাকমা, ঋতুপর্ণা চাকমা ও মনিকা চাকমাকে আগামীকাল শনিবার রাঙ্গামাটিতে জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে সংবর্ধনা দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে রাঙ্গামাটি চিং হ্লা মং চৌধুরী মারী স্টেডিয়াম স্টেজ, প্যান্ডেলসহ নানান আয়োজনের প্রস্তুত। জেলা প্রশাসন মূলত আয়োজন করলেও সহযোগিতায় থাকছে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড, সেনাবাহিনীর রাঙ্গামাটি রিজিয়ন, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ ও জেলা পুলিশ।
এদিকে, গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শহরজুড়ে করা মাইকিং করা হচ্ছে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সাঁটানো হচ্ছে ফেস্টুন। এবারের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিন কৃতী ফুটবলার ছাড়াও তাদের সাবেক ফুটবল, প্রাথমিক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, ফিফার রেফারি ও রাঙ্গামাটির কৃতী সন্তান জয়া চাকমাসহ ছয়জনকে সম্মাননা জানানো হবে।
রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান জানান, আগামীকাল শনিবার (২৩ নভেম্বর) রাঙ্গামাটির কাউখালী উপজেলার তাদের বিদ্যালয় ঘাগড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে সকাল ১০টায় সুসজ্জিত তিনটি ট্রাক সাফজয়ী ঋতুপর্ণা, মনিকা ও রূপনাদের নিয়ে যাত্রা শুরু করবে। প্রথম ট্রাকে গণমাধ্যমকর্মী, ২য় ট্রাকে ঋতু, রূপনা, মনিকা এবং কয়েকজন রাঙ্গামাটির সাবেক ফুটবলার এবং শেষ ট্রাকে পুলিশের ব্যান্ড পার্টি থাকবে। গাড়ির বহরে সঙ্গে শতাধিক মোটরসাইকেলও থাকবে।
গাড়ি বহরটি ঘাগড়া থেকে শহরে প্রবেশ করে ভেদভেদি দিয়ে রাঙাপানি, আসামবস্তী, তবলছড়ি হয়ে দোয়েল চত্বর ঘুরে বনরূপা হয়ে রাঙ্গামাটি চিং হ্লা মং চৌধুরী মারী স্টেডিয়ামে পৌঁছাবে। পরে সেখানে কৃতী ফুটবলার ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন, সম্মাননা স্মারক ও উপহার প্রদান করা হবে। এরপর সাফ বিজয়ীদের অনুভূতি ব্যক্ত ও সাংস্কৃতিক আয়োজনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানমালা শেষ হবে।
রাঙ্গামাটির অতিরিক্ত জেলাপ্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ রুহুল আমীন জানান, সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ বিজয়ী তিন কৃতী ফুটবলারকে রাঙ্গামাটিবাসীর পক্ষ থেকে জাঁকজমকপূূর্ণভাবে সংবর্ধনা দেওয়ার জন্য বর্ণাঢ্য আয়োজন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শহরে মাইকিং ও পোস্টার-ফেস্টুন লাগানো হয়েছে। এই আয়োজনে রাঙ্গামাটির বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনী সহযোগিতা করছে।
এর আগে, ৩০ অক্টোবর (বুধবার) নেপালের কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে নেপালকে ২-১ গোলে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের মুকুট ধরে রাখে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলও। ফাইনাল ম্যাচে দেশের হয়ে আলো ছড়ান পাহাড়ের বীর কন্যারা। নেপালের গোলবারে যে দুইটি বল গিয়েছে; তার দুটোই দিয়েছেন পাহাড়ের বীর কন্যা কনিকা চাকমা ও ঋতুপর্ণা চাকমা। খেলায় সেরা খেলোয়াড় হয়েছে রাঙ্গামাটির কন্যা ঋতুপর্ণা চাকমা এবং টুর্নামেন্টের সেরা গোলরক্ষক হয়েছে রূপনা চাকমা।
পাহাড়ের মেয়ে ঋতুপর্ণা চাকমার গ্রামের বাড়ি রাঙ্গামাটি জেলার কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের দুর্গম মগাছড়ি গ্রামে। রূপনা চাকমার বাড়ি রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচর উপজেলার ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের ভূঁইয়াদাম গ্রামে। আর মনিকা চাকমার বাড়ি খাগড়াছড়ি জেলার লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার লক্ষ্মীছড়ি ইউনিয়নের সুমান্ত পাড়ায়।
গত ৩০ অক্টোবর টানা দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়নশিপের মুকুট ধরে রাখায় ৩১ অক্টোবর পাহাড়ের কন্যাদের রাঙ্গামাটিবাসীর পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়ার ঘোষণা জানিয়েছিল জেলা প্রশাসন। এর আগেও, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে প্রথমবার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ বিজয়ী হওয়ায় ২৯ সেপ্টেম্বর সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছিল। এবারও একই ধরণের কর্মসূচি নিয়েছে জেলা প্রশাসন।