
পবিত্র ঈদুল ফিতরের টানা ৯ দিনের ছুটি শেষ। এরই মধ্যে কর্মক্ষেত্রে যোগ দিতে রাজধানী ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছেন অনেকে। বাস কিংবা ট্রেনে স্বস্তিতে রাজধানীতে ফিরছেন কর্মজীবী মানুষরা। অন্যান্য বারের চেয়ে এবার ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন হওয়ায় সন্তুষ্ট তারা।
বাসস্ট্যান্ডে অনেকক্ষণ পর পর দূরপাল্লার গাড়ি এসে পৌঁছালেও অধিকাংশ গাড়িতেই ছিল স্বাভাবিক সময়ের মতো যাত্রী উপস্থিতি।
আজ শনিবার (৫ এপ্রিল) রাজধানীর প্রবেশমুখ গাবতলী বাস টার্মিনাল, মাজার রোড ও টেকনিক্যাল এলাকা ঘুরে ঈদ শেষে ফিরতি যাত্রার এমন চিত্র দেখা গেছে।
ছুটি চলাকালীন বিগত দিনের তুলনায় সড়কে বেড়েছে যান চলাচল। বেড়েছে সাধারণ মানুষের উপস্থিতিও। কিছুক্ষণ পর পর রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনালে আসছে ফিরতি ঈদযাত্রার দূরপাল্লার পরিবহন। তবে ফিরতি এই যাত্রায় দূরপাল্লার পরিবহনে যাত্রীর চাপ লক্ষ্য করা যায়নি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তেমন কোনো সমস্যা হচ্ছে না। গাড়ি ছাড়তে দু-এক মিনিট দেরি হলেও চাপ কম।
এদিকে, ঈদকে কেন্দ্র করে যাত্রাপথে সড়কে দীর্ঘ যানজটসহ কোনো ধরনের ভোগান্তির শিকার না হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করছেন যাত্রীরা।
ঠাকুরগাঁও থেকে নাবিল পরিবহনে রাজধানীতে ফিরেছেন সাকিব। তিনি বলেন, বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবার ঈদে বাড়ি যাওয়া এবং ঢাকায় ফিরে আসা ছিল অনেকটা স্বস্তির।
তিনি বলেন, এবার যাওয়ার সময় টিকিট পেতেও সমস্যা হয়নি আবার আসার সময়ও না। আবার যাওয়া-আসার পথে যানজট বা কোনো ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়নি।
বনপাড়া থেকে পরিবার নিয়ে ঢাকায় ফিরেছেন আমিনুর রহমান। তিনি বলেন, রাস্তায় কোনো ধরনের সমস্যা বা কোনো ভোগান্তিতে পড়া লাগেনি। খুব স্বাচ্ছন্দ্যে ঢাকায় ফিরতে পেরেছি। কোনো ভোগান্তি ছিল না।
তিনি বলেন, মূলত পদ্মা সেতু হওয়ার পর থেকেই এই রুটে যানবাহন ও যাত্রীর চাপ কমে গেছে। তবে বিভিন্ন জায়গায় সড়কের ঝামেলা আর ফোর লেনের কাজের কারণে আগের ঈদগুলোতে কিছুটা যানজটে পড়তে হয়েছিল। কিন্তু এবার আর সেই যানজট নেই।
বগুড়া থেকে ঢাকায় ফিরলেন মো. খোকন। তিনি বলেন, যাওয়া এবং আসার সময় কোথাও কোনো সমস্যা হয়নি। কোনো ভোগান্তিতেও পড়তে লাগেনি। অনলাইন থেকে টিকিট কেটেছিলাম যার কারণে বাড়তি ভাড়াও দেওয়া লাগেনি। ভোগান্তি ছাড়া ঈদ যাত্রাটা ভালো ছিল।
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থেকে ঈদ শেষে পরিবার নিয়ে ঢাকায় ফিরলেন সাব্বির হোসেন। তিনি বলেন, নাইটের গাড়িতে ঢাকা এসেছি। বর্তমানে চুরি-ডাকাতির যে পরিস্থিতি তাতে আসার সময় কিছুটা ভয় ভয় করছিল। তবে রাস্তায় কোনো সমস্যা হয়নি। গাড়িতেও অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ ছিল না। রাস্তায় কোনো যানজট নেই। সবমিলিয়ে ভালোই হয়েছে এবারের ঈদযাত্রা।
এদিকে, শ্যামলি পরিবহনের চালকের সহকারী মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, এবার যাত্রীর চাপ অনেকটা কম। আগে যে সময়ে তিনটা গাড়ি ছাড়তো এবার সেই সময়ে একটা গাড়ি ছাড়ছে। রাস্তায়ও কোনো সমস্যা ছিল না।
তিনি বলেন, এবার মূলত লম্বা ছুটির কারণে সবাই পর্যায়ক্রমে ঢাকায় চলে আসছে। যার কারণে একবারে চাপ পড়েনি।
নাবিল পরিবহনের চালকের সহকারী মো. আলী বলেন, যাত্রী নেই তেমন একটা। আগে আমরা যাত্রী নামিয়ে দিয়ে আবার খালি গাড়ি নিয়ে ব্যাক করেছি যাত্রী আনতে। আর এবার গাড়ি যাত্রী নিয়ে এক ট্রিপ আসলেই গাড়ি বসিয়ে দিচ্ছে।
হানিফ পরিবহনের চালকের সহকারী বলেন, আগে আমরা গাড়িতে জায়গা দিতে পারিনি যাত্রীর। মানুষ ইঞ্জিন কাভারে বসে আসছে। গাড়ির মাঝে টুল পেতে বসে আসছে। যাত্রীর চাপে অতিরিক্ত গাড়ি দিতে হয়েছে। কিন্তু এবার সেসব কিছুই নেই। বিগত কয়েক বছরই এমনটা আর নেই। পদ্মা সেতু হওয়ার পর বিভিন্ন রাস্তায় গাড়ি ভাগ হয়ে গেছে, এই জন্য মূলত যাত্রীর চাপ কম।