
২০২৬ বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে উত্তর আমেরিকার তিন দেশ যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো এবং কানাডায়। এ উপলক্ষে বিশ্বকাপ আয়োজনের প্রস্তুতি যেন সুন্দরভাবে সম্পন্ন করা যায়, সে লক্ষ্যে একটি টাস্কফোর্স গঠন করেছেন যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি নিজেই এই টাস্কফোর্সের নেতৃত্ব দেবেন।
এমন এক সময়ে এই টাস্কফোর্স গঠন করলেন ট্রাম্প, যখন বারবার, বারবার শুল্ক আরোপের ঘোষণায় পুরো মহাদেশজুড়ে এক ধরনের উত্তেজনা বিরাজ করছে। দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর দুই প্রতিবেশী মেক্সিকো এবং কানাডা নিয়ে বেশ কঠোর ট্রাম্প। শুল্ক আরোপ করা নিয়ে এ দুই দেশের সঙ্গেই ট্রাম্পের সম্পর্ক এখন বেশ শীতল।
এমন পরিস্থিতিতে টাস্কফোর্স গঠন করার ফলে বিশ্বকাপের তিন আয়োজকের মধ্যে আরও বেশি উত্তেজনা তৈরি করে কি না, সে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ট্রাম্প নিজেই এ বিষয়ে বলেন, ‘আমি মনে করি, এটা আরও অনেক বেশি উত্তেজনা তৈরি করবে। উত্তেজনা (টেনশন) ভালো জিনিস।’
ট্রাম্পের নেতৃত্বে এই টাস্কফোর্সের কাজ হবে, ফেডারেল সরকারের নিরাপত্তা এবং টুর্নামেন্ট আয়োজনের পরিকল্পনায় সমন্বয় সাধন করা। যে বিষয়টা বিশ্বব্যাপি লাখ লাখ পর্যটককে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং মেক্সিকো সফরে আকর্ষণ করবে বলা আশা করা হচ্ছে।
ফুটবলের আন্তর্জাতিক অভিভাবক সংস্থা ফিফা কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকের পর ট্রাম্প বলেন, ‘বিশ্বকাপের আয়োজন করার বিষয়টি আমাদের দেশের জন্য গর্বের।’ একই সঙ্গে তিনি এটাও জানিয়ে দেন, আরও খেলাধুলার আয়োজন করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্র এবং তার প্রতিবেশি দেশগুলোর মধ্যে শুল্ক আরোপ সম্পর্কিত উত্তেজনার মধ্যেই মহাদেশজুড়ে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি এগিয়ে চলছে। ট্রাম্প প্রতিবেশি দেশগুলোর ওপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা একবার দেন তো আরেকবার পিছিয়ে আসেন। যার ফলে এই মহাদেশে এক ধরনের অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। বাজার ব্যবস্থাকে ভীত-সন্ত্রস্ত করে তুলছে তার এসব পদক্ষেপ। সে সঙ্গে এই দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ এবং অর্থনৈতিক মন্দার শঙ্কা তৈরি করছে। যার প্রভাব পড়তে পারে বিশ্বকাপের ওপর।
ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতার দায়িত্বভার গ্রহণের আগেই কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সম্পর্কে অবজ্ঞাপূর্ণ কথা বলে এবং কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের আরেকটি রাজ্য হিসেবে ঘোষণা দিয়ে দু’দেশের মধ্যে অস্থিরতা এবং উত্তেজনা বাড়িয়ে দেন।
২০২৬ বিশ্বকাপে অংশ নেবে ৪৮টি দেশ। যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো এবং কানাডায় মোট অনুষ্ঠিত হবে ১০৪টি ম্যাচ। এর মধ্যে ৭৮টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে যুক্তরাষ্ট্রে। বাকিগুলোর মধ্যে ১৩টি করে অনুষ্ঠিত হবে মেক্সিকো এবং কানাডায়। একদিনে সর্বোচ্চ ৬টি ম্যাচও অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ২০২৬ সালের ১৯ জুলাই নিউ জার্সির মেটলাইফ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ।
ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফ্যান্তিনো বলেন, ‘এই টাস্ক ফোর্স নিশ্চিত করবে যে, সারাবিশ্ব থেকে যে সব ভ্রমণকারী এই অঞ্চলে আসবে, প্রতিটি দর্শনার্থী যাতে নিরাপদ বোধ করেন, খুশি বোধ করেন এবং অনুভব করেন যে, আমরা বিশেষ কিছু করছি।’
ইনফ্যান্তিনো আরও বলেন, ‘এ কারণে আমরা এখানে (আমেরিকায়) এসেছি যেন বিশ্বের সর্বকালের সেরা একটি বিশ্বকাপ আয়োজন করতে পারি।’