
সৌদি আরবে আরেক দফায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে আলোচনা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
তিনি আশা প্রকাশ করেছেন যে এই বৈঠকটি ফলপ্রসূ হবে এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে কাজ করবে।
যদিও জেলেনস্কি নিজে এই আলোচনায় সরাসরি অংশ নেবেন না, তবে তিনি সে সময় সৌদি আরবেই উপস্থিত থাকবেন।
এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল একটি কাঠামোগত আলোচনা করতে চায়, যার মাধ্যমে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটানোর পথ বের করা সম্ভব হবে।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের সম্পর্ক কিছুটা টানাপোড়েনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প ও জেলেনস্কির মধ্যে প্রকাশ্য বাদানুবাদের পর যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের সামরিক সহায়তা স্থগিত করে এবং গোয়েন্দা তথ্য আদানপ্রদান বন্ধ করে।
এমন পরিস্থিতিতে, জেলেনস্কি দুঃখপ্রকাশ করেছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, কারণ যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের সবচেয়ে বড় সামরিক সহযোগী।
বৃহস্পতিবার, উইটকফ জানান যে ট্রাম্প জেলেনস্কির কাছ থেকে একটি চিঠি পেয়েছেন, যেখানে তিনি দুঃখপ্রকাশ করেছেন এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেন, আশা করি, আমরা ইউক্রেনের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে পারবো এবং সবকিছু আবার আগের মতোই চলবে।
তবে এই আলোচনার আগে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইউক্রেনের ওপর কিছু শর্ত আরোপের চাপ রয়েছে, যেখানে কিয়েভকে কিছু ছাড় দিতে বলা হয়েছে। অন্যদিকে, জেলেনস্কি নিশ্চিত নিরাপত্তা গ্যারান্টি ছাড়া কোনো সমঝোতায় যেতে নারাজ।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার সামরিক অভিযান চালায় এবং বর্তমানে দেশটির প্রায় ২০ শতাংশ ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণ করছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার, ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক বিশেষ শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেওয়ার পর, জেলেনস্কি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘোষণা দেন যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেন আবার আলোচনার টেবিলে ফিরেছে।
এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, আমরা আশা করি, আগামী সপ্তাহের বৈঠকটি ফলপ্রসূ হবে। যুদ্ধের প্রথম দিন থেকেই ইউক্রেন শান্তি চেয়েছে। আমরা সবসময় বলেছি, এই যুদ্ধ চলতে থাকার একমাত্র কারণ রাশিয়া।
তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যেন তারা মস্কোর ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করে, যাতে রাশিয়া যুদ্ধের অবসানের প্রয়োজনীয়তা বুঝতে বাধ্য হয়।
এদিকে, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এই সপ্তাহে একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছেন, যেখানে আকাশ ও সমুদ্রপথে সংঘর্ষ বন্ধ রাখা এবং জ্বালানি ও বেসামরিক অবকাঠামোর ওপর হামলা বন্ধের কথা বলা হয়েছে। তবে রাশিয়া এখনো এই প্রস্তাবের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
বৃহস্পতিবার, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, মস্কো এমন একটি শান্তি চায়, যা দীর্ঘমেয়াদে রাশিয়ার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। পুতিন বলেন, আমরা কারও জমি চাই না, কিন্তু যা আমাদের, তা কোনোভাবেই ছাড়বো না।