
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে চলন্ত বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানির অভিযোগে আরও দুই জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ডাকাতির 'মূল পরিকল্পনাকারী' রয়েছে বলে দাবি পুলিশের।
গতকাল সোমবার রাতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান আজ নিজ কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান।
গতরাতে যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা হলেন- মো. আলমগীর (৩৪) এবং তার ভাই মো. রাজিব (২১)। পুলিশ জানায় আলমগীরকে নেত্রোকোনা জেলার পূর্বধলা ও তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী ঢাকার আশুলিয়া থেকে তার ছোট ভাই রাজিবকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, আলমগীরের কাছ থেকে ওই দিন বাসে ডাকাতির ঘটনায় লুন্ঠিত নগদ টাকার মধ্যে থেকে ৪২০০ টাকা ও দুটি রুপার আংটি এবং রাজিবের কাছ থেকে ১০টি মোবাইল ফোন সেট, কয়েকটি ব্যাগ ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত দুটি ছুড়ি উদ্ধার করা হয়েছে।
গত শুক্রবার এ ঘটনায় তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছিল টাঙ্গাইলের গোয়েন্দা পুলিশ। তাদের মধ্যে মো. সবুজ (৩০) ও শরীফুজ্জামান (২৮) ইতোমধ্যে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে বলে জানায় পুলিশ। গ্রেপ্তার অপরজন শহিদুল ইসলামকে (২৯) পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার সাংবাদিকদের জানান, রিমান্ডে থাকা ডাকাত দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড মুহিতের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ডাকাতির ঘটনার 'মাস্টারমাইন্ড' আলমগীরকে এবং আলমগীরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী তার ছোটভাই রাজিবকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বাস ডাকাতির কথা স্বীকার করলেও আলমগীর ও রাজিবকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ। তাদের মধ্যে আলমগীরের বিরুদ্ধে ঢাকার আশেপাশের থানায় কমপক্ষে তিনটি ডাকাতির মামলা রয়েছে।
বাসে শ্লীলতাহানির প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার জানান, টাঙ্গাইল পুলিশের একটি দল ইতোমধ্যে বাসের যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শ্লীলতাহানির বিষয়টি জানা গেছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে, যোগ করেন তিনি।
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা থেকে রাজশাহীর উদ্দেশে ছেড়ে আসা ইউনিক রোড রয়েলসের (আমরি ট্রাভেলস) একটি বাসে মধ্যরাতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বাসটি নিয়ন্ত্রণে নেয় ডাকাতেরা। তিন ঘণ্টা ধরে বাসটিকে বিভিন্ন স্থান ঘুরিয়ে যাত্রীদের টাকাপয়সা, মালামাল লুণ্ঠন করেন। এ সময় নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ আছে। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে বাসের যাত্রী ওমর আলী বাদী হয়ে মির্জাপুর থানায় মামলা করেন।