
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে বসন্তের নানা রকম ফুলের সঙ্গে সৌরভ ছড়াচ্ছে গাছে গাছে আমের মুকুল। মুকুলের সুবাসে আন্দোলিত হয়ে উঠছে চাষীদের মনও। মনে আশা নিয়ে আমচাষি ও বাগান মালিকরা বাগানের পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে।
শহর থেকে গ্রামগঞ্জ সর্বত্র আমগাছ তার মুকুল নিয়ে হলদে রঙ ধারণ করে সেজেছে এক অপরূপ সাজে। গাছে গাছে অজস্র মুকুল দেখে বাম্পার ফলনের আশা করছে আমচাষী ও সংশি¬ষ্ট উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর ।
উপজেলার বরাতীপুর মডেল মোড় এলাকার আম বাগানের মালিক হাফিজুল ইসলাম বলেন, বাগানের অধিকাংশ গাছেই ইতিমধ্যে মুকুলে ছেয়ে গেছে। এবার কুয়াশা কম থাকায় মুকুল ভালোভাবে প্রস্ফুটিত হয়েছে। এখন আমের ভালো ফলন পেতে ছত্রাক নাশক প্রয়োগসহ বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছি। পরিচর্যা আর আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে আমের ফলন বেশি হওয়ার আশা করছি।
কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর গাছে মুকুলের পরিমাণ বেশি। আমচাষী এবং সংশ্লিষ্ট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর এবার আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবং সময় মতো পরিচর্যা হলে চলতি মৌসুমে আমের ভালো ফলন হবে। আর এ কারণেই আশায় বুক বেধে আমচাষীরা শুরু করেছেন পরিচর্যা। তাদের আশা, চলতি মৌসুমে তারা আম থেকে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন। উপজেলার বলগাড়ী, বরাতীপুর, কৃঞ্চরামুর, এসবি কালুপাড়া, শ্যামপুর, খোদাদপুর, কুচেরপাড়া, ঘোড়াঘাট পৌরসহ প্রায় সব এলাকাতেই রয়েছে আমবাগান। লাভ জনক হওয়ায় প্রতি বছরই আম বাগানের সংখ্যা বাড়ছে। তবে গড়ে ওঠা নতুন আম বাগানগুলোর প্রায়ই বনেদি জাতের। বিশেষ করে নিয়মিত জাত ল্যাংড়া, গোপালভোগ, হিমসাগর, আমরুপালী ও মলি¬কা, হাড়িভাঙ্গা জাতেরই গাছ বেশি হচ্ছে।
শ্রী চন্দ্রপুর এলাকার আমচাষী মোশাররফ হেসেন জানান, আমার ৩টি বড় বাগান রয়েছে। এর মধ্যে একটি থাই কাটিমুল বার মাসী আমের বাগান, একটি হাড়ি ভাঙ্গা আমের বাগান। পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে এবার আমের বাম্পার ফলন হবে বলে জানান তিনি।
ঘোড়াঘাট কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার মোট ২৫৯ হেক্টর জমিতে ২৭৮টি ছোট বড় আমবাগান রয়েছে। এছাড়াও বাড়ির আশপাশ, জমির আইলসহ বিভিন্নভাবে আমগাছ রয়েছে প্রায় ৩০ হাজার। এসব ছোট বড় বাগানে ১০ শতক থেকে শুরু করে এক থেকে দেড় হেক্টর জমিতে অনেকের আমবাগান রয়েছে। যারা বাণিজ্যিকভাবে আমবাগান করে ব্যবসা করে আসছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রফিকুজ্জামান জানান, আমের মুকুল আসার আগে- পরে যেমন আবহাওয়ার প্রয়োজন, এ বছর তা বিরাজ করছে। ডিসেম্বরের শেষ থেকে মার্চের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত আম গাছে মুকুল আসার আদর্শ সময়। এ সময়ে মুকুলের প্রধান শত্রু কুয়াশা। এখন পর্যন্ত কুয়াশা কম এবং আকাশে উজ্জ্বল রোদ থাকায় আমের মুকুল সস্পূর্ণ প্রস্ফুটিত হচ্ছে।