প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১:৪৩ অপরাহ্ন
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবং বিভিন্ন সংস্থার তথ্য পর্যালোচনায় সাবেক প্রতিমন্ত্রী বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের নসরুল হামিদ বিপু ব্যাপক দুর্নীতির প্রমান পাওয়া গেছে। গুরুত্বপূর্ণ এ মন্ত্রণালয়ের সরাসরি দায়িত্বে ছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাগজে-কলমে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকলেও সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতেন মূলত মন্ত্রণালয়টির প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু।
টানা ১০ বছরের বেশি সময় ধরে বিপু এ দায়িত্বে ছিলেন। আর এ সময়ে সরকারের অন্যতম সব ব্যয়বহুল প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নকারী মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে তিনি বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে ব্যাপক লুটপাট করেন।
বিপুর দুর্নীতিতে জড়িয়েছিলেন তার পরিবারের সদস্যরাও। এর মধ্যে সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর ভাই ইন্তেখাবুল হামিদ অপু মামা, শ্যালকসহ অন্য আত্মীয় এবং কাছের লোকজনদের নাম এসেছে। অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে অনুসন্ধানে নেমেছেন দুুদকের কর্মকর্তারা।
তার স্ত্রী ও দুই সন্তানের ব্যাংক হিসাবও জব্দ করা হয়েছে।
অনুসন্ধানে সংশ্লিষ্ট দুদক কর্মকর্তারা জানান, নসরুল হামিদ বিপুর দুর্নীতির নানা তথ্য তাদের হাতে এসেছে। এসব বিষয় তারা অনুসন্ধান করছেন। এর মধ্যে বিদ্যুৎ খাতে লুটপাটের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা, প্রিয় প্রাঙ্গণ আবাসন প্রকল্পের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিতে সরকারি ঝিলমিল প্রকল্পের কাজ কৌশলে বাধাগ্রস্ত করা এবং বিদেশে অর্থ পাচারের বিষয়গুলো প্রাধান্য পাবে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সিঙ্গাপুরে নসরুল হামিদ বিপুর হাজার কোটি টাকার ব্যবসা-বাণিজ্যের তথ্য পেয়েছে দুদক।
এর মধ্যে পথ ফাইন্ডার ইন্টারন্যাশনাল’ নামে মোবিল গ্যাস স্টেশনসহ দেড় ডজনের মতো ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান গড়েছেন।
কক্সবাজারের মাতারবাড়ীতে দেশের বৃহত্তম এলপিজি টার্মিনাল নির্মাণের কাজ সাবেক প্রতিমন্ত্রী তার মামার মালিকানার পাওয়ারকো ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানিকে পাইয়ে দেয়ার জন্য জালিয়াতির আশ্রয় নেন।
এরই মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) নির্দেশে নসরুল হামিদ বিপু, তার স্ত্রী সীমা হামিদ, ছেলে জারেফ হামিদ ও মেয়ে আলিফা হামিদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের মালিকানাধীন ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের লেনদেনও স্থগিত করা হয়েছে। লেনদেন স্থগিত করার এ নির্দেশের ক্ষেত্রে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালার সংশ্লিষ্ট ধারা প্রযোজ্য হবে বলে বিএফআইইউর চিঠিতে বলা হয়েছে। গত ২০ আগস্ট এ নির্দেশ জারি করা হয়।