প্রকাশ: রোববার, ২৫ আগস্ট, ২০২৪, ৬:০৯ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: রোববার, ২৫ আগস্ট, ২০২৪, ৯:৩৪ অপরাহ্ন
শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অনেক কর্মকর্তা যে দূর্ণীতিতে জড়িত, এটা ওপেন সিক্রেট। তবে সরকার পতনের পরে শুধুমাত্র বিএসইসির বিদায়ী চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামকে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের বিতর্ক উঠেছে। কিন্তু অধ্যাপক শিবলী কোন ফাইলে বিএসইসির সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের আপত্তি থাকলে, তা আটকে দিতেন।
তবে কর্মকর্তারা ম্যানেজ হয়ে ওইসবফাইল চেয়ারম্যানের দফতরে উঠানোরপরেই কেবল অনুমোদন সম্ভব ছিল। এখন ওইসব কর্মকর্তারা নিজেদের বাঁচাতে আড়ালে রাখার চেষ্টা করছে। যারা বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিতর্কিত প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) আসা কোম্পানি থেকে বেনামে শেয়ার ঘুষ নিয়েছেন।
বিএসইসিকে ম্যানেজ করে ফাইল অনুমোদন করে নেওয়া এক কোম্পানির কর্মকর্তা বলেন, আমাদের ফাইলে বিএসইসির সংশ্লিষ্ট বিভাগের ১জন নির্বাহি পরিচালক ও ১জন অতিরিক্ত পরিচালক বিভিন্ন ধরনের বাঁধা দিয়ে আসছিলেন। তাদের কিছু আপত্তি ছিল। যে কারনে বিএসইসি চেয়ারম্যান ফাইলটি অনুমোদন দিচ্ছিলেন না।
তিনি বলেছিলেন, কর্মকর্তাদের কোন আপত্তি থাকলে অনুমোদন দেওয়া হবে না।তারা যদিকোন আপত্তি না জানায়,তাহলেঅনুমোদন দেওয়া হবে। অবশেষে ওইসব কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করার পরে ফাইল অনুমোদন হয়।
বিগত কমিশন আইপিওতে পঁচা কোম্পানি এনেছেন বলে অভিযোগ আছে। এই পঁচা কোম্পানি আনতে বিএসইসির ক্যাপিটাল রেইজিং (বর্তমানে ‘কর্পোরেট ফাইন্যান্স ডিভিশন’) বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের দূর্ণীতির অনেক প্রমাণ আছে। বিএসইসি চেয়ারম্যান যেহেতু সংশ্লিষ্ট বিভাগের আপত্তি নিয়ে আইপিও অনুমোদনদিতোনা, এই সুযোগে ওই বিভাগের কর্মকর্তারা অনৈতিক সুবিধা নিয়েছেন। এছাড়াও আগের কমিশনের সময়ও তারা বাধ্য করেছেন এ জাতীয় সুবিধা নিতে।
আইপিওর ক্ষেত্রে বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারিরা ঘুষ হিসেবে মূলত বেনামে টাকা ছাড়া শেয়ার নিয়েছেন। এক্ষেত্রে উপ-পরিচালক, অতিরিক্ত পরিচালক, পরিচালক, নির্বাহি পরিচালক কেউই বাদ যায়নি। তবে পদবী অনুয়ায়ি শেয়ার নেওয়ার ক্ষেত্রে কম-বেশি হয়েছে। তবে অনেক সময় কর্মকর্তাদের মধ্যে শেয়ার নিয়ে অন্তঃকলহ হয়েছে। একজন আরেকজনের শত্রু হয়েছে। একজন আরেকজনকে ফাঁসানোর জন্যও কাজ করেছেন।
এসব নিয়ে বিসইসিতে ক্যাপিটাল রেইজিং বিভাগের দুইকর্মকর্তার মধ্যে শত্রুতা তৈরী হওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। এরমধ্যে ১জন পরিচালক পদবীর কর্মকর্তা আরেকজন নির্বাহি পরিচালককে ফাঁসাতে চেয়েছেন। কিন্তু তার কোন ক্ষতি করতে পারছিলেন না। অবশেষে ওই নির্বাহি পরিচালকের সঙ্গে ভালো সর্ম্পক্য এমন ১টি মার্চেন্ট ব্যাংকের পেছনে লাগেন পরিচালক। এ নিয়ে গড়িয়েছে অনেক জল। সেক্ষেত্রে অবশ্য ওই নির্বাহি পরিচালকের বেনামের বিও হিসাব আটকে যায়।
ক্যাপিটাল রেইজিং বিভাগের ওইসব দূর্ণীতিবাজ কর্মকর্তাদের নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে অর্থ বাণিজ্যতে। সংবাদে কোন কর্মকর্তা কোন কোম্পানি থেকে, কার নামে কি পরিমাণ শেয়ার ঘুষ নিয়েছেন, ইত্যাদি বিষয়াদি তুলে ধরা হবে।
বিএসইসির দূর্ণীতিবাজ কর্মকর্তাদের নিয়ে ধারবাহিক প্রতিবেদনে ক্যাপিটাল রেইজিং ছাড়াও অন্যসব বিভাগের যেসব কর্মকর্তারা কোম্পানি দখল ও ওটিসির কোম্পানিকে মূল মার্কেটে আনতে সহযোগিতার মাধ্যমে অবৈধ আয় করেছেন, ভয়ভীতি দেখিয়ে এবং অন্যায় আড়াল করতে যে টাকা কামিয়েছেন এবং ইস্য্য়ুার কোম্পানি অ্যাফেয়ার্স এর কর্মকর্তাদের সংবাদ তুলে ধরা হবে।