বুধবার ২৭ নভেম্বর ২০২৪ ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
 

ভারতের ভিত্তিহীন বিবৃতিতে ঘটনার ভুল উপস্থাপন হয়েছে: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়    চিন্ময় দাসের গ্রেপ্তার নিয়ে বিকৃত তথ্য ছড়াচ্ছে ভারত: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়    অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার, বিচার নিশ্চিতের দাবি হাসনাত ও সারজিসের    চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যা প্রধান উপদেষ্টার নিন্দা, আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ    একদিনের ব্যবধানে সোনার দাম আরও কমলো    ২০১ রানের বড় হার বাংলাদেশের    চলতি মাসেই ডেঙ্গুতে মৃত্যু দেড়শ ছাড়িয়েছে   
শিবলী রুবাইয়াত-উল- ইসলামসহ ৮ জনের ব্যাংক হিসাব জব্দ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২০ আগস্ট, ২০২৪, ৭:১৬ অপরাহ্ন

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল- ইসলাম, মার্চেন্ট ব্যাংকারদের সংগঠন বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সাবেক সভাপতি মোঃ ছায়েদুর রহমান ও শেয়ারকারসাজিতে ব্যাপক আলোচিত আবুল খায়ের (হিরু) সহ শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট ৮ জনের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে।

গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠিয়ে অ্যাকাউন্ট জব্দ করতে বলেছে।

অন্য যাদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে- শিবলী রুবাইয়াত-উল- ইসলামের ছেলে জুহায়ের সারার ইসলাম, শেয়ারবাজারের আলোচিত ব্যক্তি জাভেদ এ মতিন, সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি সিডব্লিউটি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিজা চৌধুরী, মোঃ দেলোয়ার হোসাইন ও শরিফুল ইসলাম।

শেয়ারবাজারে গত কয়েক বছরে শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে যেসব ব্যক্তি বিপুল অর্থসম্পদের মালিক হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম জাভেদ এ মতিন, আবুল খায়ের ও ছায়েদুর রহমান অন্যতম।

জাভেদ এ মতিন হচ্ছেন বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের বন্ধু। মতিনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে আর্থিক প্রতারণা করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসার অভিযোগ রয়েছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে যে অর্থ পাচার করেছেন, তার একটি অংশ শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে পাঠানো হয়। এত মারাত্মক অপরাধের অভিযোগ থাকা সত্তে¡ও জাভেদ এ চৌধুরীর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো তাঁকে একটি ট্রেকের (ব্রোকারহাউজ) লাইসেন্স দিয়েছেন শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। মোনার্ক হোল্ডিংস নামের ওই ব্রোকারহাউজের অংশীদারদের মধ্যে আছেন ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও আবুল খায়ের হিরু’র স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসান।

আবুল খায়ের হিরু একজন সরকারি চাকরিজীবী। সমবায় ক্যাডারের বিসিএস কর্মকর্তা হিরু বর্তমানে সমবায় অধিদপ্তরে উপ-নিবন্ধক হিসেবে কর্মরত আছেন। বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের সরাসরি ছাত্র। আভিযোগ আছে, শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের প্রশ্রয়ে হিরুর নেতৃত্বে পুঁজিবাজারে একটি শক্তিশালী কারসাজি চক্র গড়ে উঠে। এ চক্রের সদস্যদের মধ্যে আছে জাভেদ এ মতিন, এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল, ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের চেযারম্যান মুহাম্ম ইউনুসসহ বেশ কয়েকজন ব্যক্তি। এই চক্রটি বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারে কারসাজি করে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তাদের খপ্পরে পড়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন হাজার হাজার নিরীহ বিনিয়োগকারী।

ব্যাপক সমালোচনার মুখে হিরু ও তার চক্রের বেশ কয়েকজনকে শেয়ারকারসাজির দায়ে জরিমানা করতে বাধ্য হয় শিবলী কমিশন। কিন্তু জরিমানার পরিমাণ ছিল অতি সামান্য। কোনো কোম্পানির শেয়ার কারসাজি করে ২ কোটি টাকা মুনাফা করে থাকলে তার বিপরীতে ১০ লাখ/২০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হয়েছে। বাজার সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, এই জরিমানা ছিল নিছকই লোক দেখানো।

মোঃ ছায়েদুর রহমান বেসরকারি ইস্টার্ন ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইবিএল সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি ইম্পেরিয়াল ক্যাপিটাল নামের মার্চেন্ট ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডার হিসেবে একাধিক মেয়াদে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বেনামে আরও কয়েকটি মার্চেন্ট ব্যাংক নিয়ন্ত্রণ করেন বলে জানা যায়। তাঁর বিরুদ্ধে বাজার সংশ্লিষ্টদের আভিযোগ, তিনি বাজারে একটি দুষ্ট চক্র গড়ে তুলেছিলেন, যারা নানা কৌশলে বিভিন্ন দূর্বল কোম্পানিকে আইপিওর মাধ্যমে পুঁজিবাজারে নিয়ে এসেছেন। হিসাব কারসাজি করে এসব কোম্পানির আর্থিক স্বাস্থ্য ভাল দেখিয়ে আইপিওর বৈতরনি পার করানো হয়। কিন্তু তালিকাভুক্ত হবার কয়েক বছরের মধ্যে এদের আসল চিত্র প্রকাশিত হতে থাকে। খারাপ হতে থাকে কোম্পানির পারফরম্যান্স। কোনো কোনো কোম্পানি বন্ধও হয়ে যায়।

হিসাব জব্দ করা ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সব  লেনদেন বন্ধ থাক‌বে। আগামী ৩০ দিন এসব হিসাবে কোনো ধরনের লেনদেন করতে পরবে না। প্রয়োজনে লেনদেন স্থগিত করার এ সময় বাড়ানো হবে।

লেনদেন স্থগিত করার এ নির্দেশের ক্ষেত্রে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা সংশ্লিষ্ট ধারা প্রযোজ্য হবে বলে বিএফআইইউর চিঠিতে বলা হয়েছে। চিঠিতে উল্লেখিত সবার জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য দেওয়া হয়েছে।

বিএফআইইউর নির্দেশনায় আরো বলা হয়েছে, কোনো হিসাব স্থগিত করা হলে হিসাব সংশ্লিষ্ট তথ্য বা দলিল যেমন হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি ও লেনদেন বিবরণী ইত্যাদি চিঠি দেওয়ার তারিখ থেকে ৫ কার্যদিবসের মধ্যে তাদের কাছে পাঠানোর জন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বলা হয়েছে।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. আক্তার হোসেন রিন্টু
বার্তা ও বাণিজ্যিক বিভাগ : প্রকাশক কর্তৃক ৮২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক (৩য় তলা) ওয়্যারলেস মোড়, বড় মগবাজার, ঢাকা-১২১৭।
বার্তা বিভাগ : +8802-58316172. বাণিজ্যিক বিভাগ : +8801868-173008, E-mail: dailyjobabdihi@gmail.com
কপিরাইট © দৈনিক জবাবদিহি সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft