প্রকাশ: শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪, ৪:২৮ অপরাহ্ন
নিজ খামারের একটি গরুর মারা যাওয়ার কয়েক ঘন্টা যেতে না যেতেই যুবক জুয়েল রানার সদ্য বিবাহিত স্ত্রী দিশা মনি (১৮) সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে। এই হৃদয় বিদারক ঘটনাটি ঘটেছে, কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলা সদরের চন্দ্রখানা কলেজ পাড়ায়।
সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত স্ত্রীকে বাঁচাতে নিজের এন্ড্রয়েট মোবাইল বন্ধক রেখে চিকিৎসা করালেও প্রিয স্ত্রীকে বাঁচাতে পারেনি যুবক জুয়েল রানা। সে নিজেই এখন ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
জানা গেছে, শুক্রবার (২৬ জুলাই) সকালে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলা সদরের চন্দ্রখানা কলেজ পাড়ার আব্দুল খালেকের ছেলে জুয়েল রানাদের বাড়ির খামারের একটি গরু অসুস্থ্য হয়ে মারা যায়। মৃত গরুরী যুবক জুয়েল রানা ও তার পরিবারের লোকজন মাটি চাপা দেন। গরুটি মারা যাওয়ার শোক কেটে উঠতে না উঠতেই ওইদিন বিকেলে যুবক সোহেল রানা তার স্ত্রীর আহবানে সাড়া দিয়ে নিজের ব্যবহৃত মোটারসাইকেল নিয়ে পার্শ্ববর্তী শিমুলবাড়ী ছড়ার পাড়ে শ্বশুর বাড়িতে যান। সেখানে খাওয়া দাওয়া শেষে স্ত্রীকে মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে পার্শ্ববর্তী ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় বেড়ানোর জন্য যান জুয়েল রানা। সেখানে সোনাহাট সেতু, সোনাহাট স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ঘুরে বিকেল ৪ টার পরে তারা নিজ বাড়ির দিকে রহনা হন।
বাড়ি ফেরার পথে ভূরুঙ্গামারী উপজেলার তালতলা নামক স্থানে জুয়েল রানার স্ত্রী আরোহীত মোটরসাইকেলটি পৌঁছালে সোনাহা স্থলবন্দর থেকে আসা পাথর বোঝাই একটি ট্রাক তাদের মোটরসাইকেলটিকে পিছন থেকে থাক্কা দিলে জুয়েলের স্ত্রী দিশা মনি সড়কে ছিটকে পড়ে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়।
এতে যুবক জুয়েল মোটরসাইকেলসহ রাস্তার পাশে পড়ায় সে তেমন গুরুতর আহত হয়নি। এরপর জুয়েল রানা সড়কে পড়ে থাকা তার গুরুতর আহত স্ত্রীকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় চিকিৎসার জন্য স্থানীয় স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে নিয়ে যায়। সেখানে সে নিজের ব্যবহৃত মোবাইল বন্ধক রেখে চিকিৎসা দেয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। কিছুক্ষণের মধ্যেই জীবন প্রদীপ নিভে স্ত্রী দিশা মনির। পরে এ্যাম্বুলেন্সে করে স্ত্রী দিশা মনির নিথর দেহসহ নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন যুবক জুয়েল রানা। বর্তমান সে মানসিক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ায় ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।