প্রকাশ: শনিবার, ২৫ মে, ২০২৪, ৯:৩০ অপরাহ্ন সর্বশেষ আপডেট: শনিবার, ২৫ মে, ২০২৪, ৯:৩৯ অপরাহ্ন
সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হিসাবে লভ্যাংশ বা ডিভিডেন্ড দিতে গড়িমসি করছে শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি। এখনো পর্যন্ত গত অর্থবছরের (২০২২-২০২৩) ঘোষিত ডিভিডেন্ড দেয়া সম্পন্ন করতে পারেনি কোম্পানিটি। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটিকে নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মনে হতাশা বিরাজ করছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৩০ জুন ২০২৩ সমাপ্ত বছরে শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য ৫ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করে। গত বছরের (২০২৩) ২৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) এই ডিভিডেন্ড সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদন হয়। এরপর ৩০ দিনের মধ্যে বিনিয়োগকারীদের হিসাবে এই ডিভিডেন্ড পৌঁছে দেয়ার কথা। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য প্রতিষ্ঠানটি তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এরপর ডিভিডেন্ড পৌঁছে দিতে চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সময় চায় শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ। কিন্তু ৩০ এপ্রিলের মধ্যেও ডিভিডেন্ড বিনিয়োগকারীদের হিসাবে সম্পূর্ণ পৌঁছে ব্যর্থ হয়েছে কোম্পানিটি। এসব কারণে ইতোমধ্যে কোম্পানিটি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছেন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা; যা কোম্পানির প্রফাইল থেকে জানা গেছে।
কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত কোম্পানিটিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ছিল ২৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ। ৩০ এপ্রিল তা এসে দাঁড়িয়েছে ২৩ দশমিক ৩০ শতাংশ। মাত্র এক মাসের ব্যবধানে কোম্পানিটিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ কমেছে দশমিক ০৬ শতাংশ।
এদিকে ডিএসই সূত্র বলছে, শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ বিনিয়োগকারীদের হিসাবে ডিভিডেন্ড পৌঁছে দিতে অতিরিক্ত সময় চেয়ে গত ২১ মার্চ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) আবেদন করে। আবেদনে প্রতিষ্ঠানটি এও জানিয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, সম্প্রতি দেশে অর্থনৈতিক সংকট ও ডলার মূল্যের অস্থিরতার কারণে লোকসানে রয়েছে শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ। যেকারণে সঠিক সময়ে ডিভিডেন্ড পৌঁছে দিতে পারেনি। এজন্য ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সময় চায় প্রতিষ্ঠানটি। রুলস অনুযায়ী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত প্রতিদিন ৫ হাজার টাকা জরিমানা গুণতে হবে প্রতিষ্ঠানটিকে। যদিও আবেদনে এই জরিমানা মৌকুফ করতে বলে প্রতিষ্ঠানটি।
সাধারণ বিনিয়োগকারীরা জানান, শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এমনিতেই কাঙ্খিত ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেনি। এরপর আবার সামান্য এই ডিভিডেন্ড দিতে তাদের ভাষ্য অনুযায়ী ঘাম ছুটে যাচ্ছে।
তারা আরো বলেন, কোম্পানিটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির সময় অনেক রঙ্গিন স্বপ্ন দেখিয়েছিল বিনিয়োগকারীদের। কিন্তু যতই দিন গড়িয়েছে, ততই সেসব রঙ্গিন স্বপ দেখানো থেকে দুরে সরে গেছে কোম্পানিটি।
শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) আতাউর রহমান জবাবদিহিকে জানান, আমরা সঠিক সময়ে ঘোষিত ডিভিডেন্ড বিনিয়োগকারীদের হিসাবে পৌঁছে দিতে পারিনি। ডিভিডেন্ড পৌঁছে দিতে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়তি সময় পেয়েছিলাম। কিন্তু সেই সময়ও ডিভিডেন্ড সম্পূর্ণ পৌঁছে দিতে পারিনি। তবে আগামী জুন মাসের মধ্যেই ডিভিডেন্ড দেয়া সম্পন্ন হবে।
ডিএসই’র সিনিয়র জিএম ছামিউল ইসলাম জবাবদিহিকে বলেন, বিনিয়োগকারীদের একাউন্টে ডিভিডেন্ড পৌঁছে দিতে অতিরিক্ত সময় চেয়ে আবেদন করেছিল শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ। তবে এজন্য তাদের জরিমানার মধ্যে পরতে হয়েছে। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জরিমানা মৌকুফ হয়েছে কিনা বলতে পারবো না। কাগজ দেখে বলতে পারবো।