সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে দ্বিগুণ হয়েছে কাঁচা মরিচের দাম। গত সপ্তাহে যা ছিল ১০০ থেকে ১২০ টাকা। বর্তমানে পণ্যটির দাম ২০০ টাকা ছুঁয়েছে। কোথাও কোথাও দাম ২২০ টাকাও নেওয়া হচ্ছে।
বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে কাঁচা মরিচের সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে। এ ছাড়া ডিম ও সবজির বাজারেও নেই স্বস্তি।
আজ শুক্রবার (২৪ মে) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাজধানীর সব বাজারেই কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, তবে যেসব মরিচের মান কিছুটা ভালো তা ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা জানায়, কিছুদিনের বৃষ্টির কারণে কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে। কারণ দেশের মরিচ গাছগুলো বৃষ্টি হলেই পচে যায়। এ ছাড়া কিছুদিনের তীব্র গরমে মরিচ গাছগুলো আগেভাগেই নষ্ট হয়ে গেছে। বর্তমানে মরিচের মৌসুম শেষ হয়ে আসায় গাছগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। সব মিলিয়ে বাজারে কাঁচা মরিচের সরবরাহ আগের তুলনায় কম হচ্ছে, ফলে দাম বেড়েছে।
এ ছাড়া গত সপ্তাহেই বাজারে ডিমের হালি হাফ সেঞ্চুরি ছাড়িয়েছে। দোকানগুলোতে ৫৫ টাকা হালিতে ডিম বিক্রি হতে দেখা গেছে। যা গত সপ্তাহে ছিল ৪৫ টাকা, আর তিন সপ্তাহ আগে ছিল ৪০ টাকা।
ব্যবসায়ীরা আরো জানিয়েছে, গত সোমবার পাইকারিতে প্রতি ১০০ পিস বাদামি ডিম বিক্রি হয়েছে এক হাজার ১৮০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকায়।
বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার গণমাধ্যমকে বলেন, সারাদেশে ম্যাসেজের মাধ্যমে তারা ডিমের দাম নির্ধারণ করেন। হুট করে দাম কমিয়ে খামারিদের থেকে ডিম নিয়ে হিমাগারে সংরক্ষণ করেন। এরপর আবার দাম বাড়িয়ে বাড়তি মুনাফা লুটে সিন্ডিকেট।
তিনি বলেন, ঢাকার আড়তগুলোতে প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ লাখ ডিম বিক্রি হলেও মজুতদাররা সারাদেশে দৈনিক বিক্রিত প্রায় চার কোটি ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে মোবাইলে ফোনে মেসেজ বা খুদে বার্তার মাধ্যমে। প্রতিদিন তারা ম্যাসেজ দিয়ে বাজারদর জানিয়ে দেয় সারাদেশের আড়তদারদের। তারাই এখন ডিমের বাজারে সবচেয়ে বড় সিন্ডিকেট।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সবজির দামও চড়া। বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি বেগুন ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বরবটির ও কাঁকরোলেও একই দাম। এমনকি বছরজুড়ে তুলনামূলক সস্তায় পাওয়া পেঁপেও ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
সরবরাহ কম থাকায় বাজারে বেড়েছে মাছের দামও। মাছ কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ক্রেতাদের। নদী ও হাওরের মাছ সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে গেছে অনেক আগেই। চাষের মাছও বেশ চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে এখন।
কারওয়ান বাজারের মাছ বিক্রেতা পলাশ হাসান বলেন, গত মাসের চেয়ে প্রত্যেক জাতের মাছ কেজিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেড়েছে। দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের বেচাকেনাও কমে গেছে। এ ছাড়া আড়তে মাছ নেই। যা পাই তারও দাম চড়া। বাড়তি দামে কাস্টমাররা মাছ নিচ্ছে না। ব্যবসা করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
এ ছাড়া বাজারে বর্তমানে ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকায়। আর সোনালি মুরগি আগের মতোই ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যা সাধারণত ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায় বিক্রি হয়।