রাজধানী ঢাকাসহ সিটি করপোরেশনভুক্ত এলাকায় ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৩০ কিলোমিটার গতিতে মোটরসাইকেল চালানো যাবে। মোটরসাইকেলের এমন সর্বোচ্চ গতিসীমা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। মোটরযান গতিসীমা নির্দেশিকা-২০২৪ অনুযায়ী বুধবার (৮ মে) প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। গতিসীমা নির্দেশিকা মতে, মহাসড়কের গাড়ির সর্বোচ্চ গতিসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার।
কিন্তু সব সড়কে অতিরিক্ত গতি নিয়ন্ত্রণে কোনো ব্যবস্থা নেই। আর দেশের সড়কে মোটরসাইকেল সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি অবশ্য শুধু এক্সপ্রেসওয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। মোটরযান গতিসীমা নির্দেশিকা-২০২৪-এর নথিতে দেখা যায়, এক্সপ্রেসওয়েতে সর্বোচ্চ গতি ৮০ কিলোমিটার এবং সর্বনিম্ন গতি ৫০।
জাতীয় মহাসড়ক ক্যাটাগরি-এ সর্বোচ্চ গতি ৮০ কিলোমিটার, সর্বনিম্ন গতি ৫০। জাতীয় মহাসড়ক ক্যাটাগরি-বি সর্বোচ্চ গতি ৭০ কিলোমিটার, সর্বনিম্ন ৪৫। জেলা সড়কে সর্বোচ্চ গতি ৬০ কিলোমিটার সর্বনিম্ন ৪০। সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, জেলা সদরের মধ্য দিয়ে ব্যবহৃত জাতীয় মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কের সর্বোচ্চ গতি ৪০ কিলোমিটার, সর্বনিম্ন ৩০।
জাতীয় মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়ক ছাড়া সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও জেলা সদরের অভ্যন্তরীণ সড়কের সর্বোচ্চ গতি ৩০ কিলোমিটার নির্ধারণ করা হয়েছে। উপজেলা মহাসড়কে সর্বোচ্চ গতি ৪০ কিলোমিটার, সর্বনিম্ন ৩০। শহর এলাকায় প্রাইমারি আরবান সড়কে সর্বোচ্চ গতি ৪০ কিলোমিটার, সর্বনিম্ন ৩০।
শহর এলাকায় সংকীর্ণ/শেয়ার রোড ও অন্যান্য সড়কে সর্বোচ্চ গতি ৩০ কিলোমিটার, সর্বনিম্ন ২০ এবং গ্রামীণ সড়কে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন গতি ৩০ কিলোমিটার। বিআরটিএর সড়ক নিরাপত্তা বিভাগের পরিচালক শেখ মোহাম্মদ মাহবুব-ই-রব্বানী বলেন, ‘প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে গতিসীমার বাস্তবায়ন নির্ধারণ করা হয়েছে। আমাদের সড়কের নকশা অনুযায়ী নির্ধারণ করা গতি ঠিক আছে।’
নির্দেশিকায় বলা হচ্ছে, নির্ধারণ করা গতিসীমা আবশ্যিকভাবে মেনে সড়ক-মহাসড়কে মোটরযান চালাতে হবে। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, আবাসিক এলাকা এবং হাট-বাজার ইত্যাদি সংলগ্ন সড়ক বা মহাসড়কে মোটরযানের সর্বোচ্চ গতিসীমা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান বা রাস্তা নির্মাণকারী বা উপযুক্ত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নির্ধারিত হবে; তবে তা কোনোক্রমেই জাতীয় মহাসড়কের ক্ষেত্রে ৪০ কিলোমিটার এবং আঞ্চলিক মহাসড়কের ক্ষেত্রে ঘণ্টায় ৩০ কিলোমিটারের বেশি হবে না।
জরুরি পরিষেবায় নিয়োজিত মোটরযান, যেমন : অ্যাম্বুল্যান্স, ফায়ার সার্ভিস ইত্যাদির ক্ষেত্রে উক্ত গতিসীমা শিথিলযোগ্য হবে। সর্বোচ্চ গতিসীমার এই বাধ্যবাধকতা শুধু স্বাভাবিক অবস্থায় প্রযোজ্য হবে, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া, প্রখর রোদ, অতিরিক্ত বৃষ্টি, ঘন কুয়াশা ইত্যাদি প্রতিকূল পরিস্থিতিতে নিয়ন্ত্রণযোগ্য নিরাপদ গতিসীমা প্রযোজ্য হবে; দৃষ্টিসীমা বেশি মাত্রায় কমে গেলে বা একেবারেই দেখা না গেলে মোটরযান চালানো বন্ধ রাখতে হবে।
এক্সপ্রেসওয়ে, জাতীয় মহাসড়ক, আঞ্চলিক মহাসড়ক এবং জেলা সড়কের উভয় দিকের প্রবেশমুখ ও নির্দিষ্ট দূরত্বে যানবাহনভিত্তিক নির্ধারিত গতিসীমা সংক্রান্ত চিহ্ন রাস্তা নির্মাণকারী বা উপযুক্ত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রদর্শন করতে হবে। পাহাড়ি এলাকা, আঁকাবাঁকা সড়ক, বাঁক, সেতু, রেল বা লেভেলক্রসিং, সড়ক সংযোগস্থল, বাজার, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালের সামনে চিহ্ন প্রদর্শিত গতিসীমা প্রযোজ্য হবে।
নির্দেশানায় বলা হয়েছে, মালবাহী মোটরযানসহ অন্যান্য স্বল্পগতির মোটরযান সর্বদা সড়কের বাঁ পাশের লেন দিয়ে চলাচল করবে। শুধু ওভারটেক করার সময় ডান লেন ব্যবহার করতে পারবে, কখনো বাম লেন দিয়ে ওভারটেক করা যাবে না। ওভারটেকিং নিষিদ্ধ না থাকলে রাস্তার ট্রাফিক সংকেত, সড়ক চিহ্ন দেখে এবং সামনে, পেছনে পর্যাপ্ত ও প্রয়োজনীয় জায়গা থাকলে নিরাপদ পরিস্থিতি বিবেচনায় ওভারটেক করা যাবে; এবং ওভারটেক করার সময় সামনে বিপরীত লেনে আগত গাড়ি এবং পেছনের গাড়ির অবস্থান ও দেখে ওভারটেকিংয়ের জন্য নিরাপদ দূরত্ব আছে কি না সে সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে।