মৃদু তাপদাহ আর ভ্যাপসা গরম। মাঝে মাঝে মেঘের চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে মুজিবনগরে পর্যটকদের ঢল নেমেছে। বাঁধভাঙ্গা আনন্দে মেতেছে দর্শনার্থীরা।
আজ শনিবার দিনের শুরু থেকে একেবারে শেষ পর্যন্ত লোকে লোকারন্য মুজিবনগর কমপ্লেক্স। ঈদের তৃতীয় দিনে পর্যটকের সংখ্যা বেড়েছে ইদের দিন ও দ্বিতীয় দিনের চেয়ে বেশি। স্বাধীনতার সূতিকাগার মেহেরপুরের মুজিবনগর বিনোদন পিয়াসুদের আকর্ষণের অন্যতম জায়গা ঐতিহাসিক মুজিবনগর কমপ্লেক্স। যেখানে দাঁড়িয়ে একনজরে মুক্তিযুদ্ধের সেক্টরভিত্তিক বাংলাদেশটাকে দেখা যায়।
ঈদুল ফিতরের ছুটিতে একদিনের জন্য হলেও বিনোদনের প্রত্যাশায় বাস-ট্রাক, মোটর সাইকেল, নছিমন, করিমন, আলমসাধুযোগে এছাড়াও ব্যাক্তিগত কার ও মটরসাইকেল যোগে মুজিবনগরে ভিড় জমাচ্ছে বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ ও শিশুরা।
স্থানীয় দর্শনার্থী ছাড়াও মাইক, ব্যান্ড ও ভেঁপু বাজিয়ে চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, যশোর, মাগুরা, ফরিদপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে হাজার-হাজার মানুষের ভিড় জমেছে মুজিবনগরে। ভ্রমণ পিপাসু এসব মানুষের ভিড়ে মুখর হয়ে উঠেছে মুজিবনগর কমপ্লেক্স। সেই সাথে বৈশাখের অগ্রিম সাজে সেজেছে তরুণ তরুণীরা। ঈদের আনন্দের পালে হাওয়া দিয়েছে বৈশাখ।
মুজিবনগরে বিশাল আম্রকানন ও পার্শ্ববর্তী এলাকা জুড়ে গড়ে ওঠা কমপ্লেক্সে মুক্তিযুদ্ধের সেক্টরভিত্তিক বাংলাদেশের মানচিত্র, স্মৃতিসৌধ, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিভিন্ন মুর্যাল, সরকারি শিশু পরিবার, ছয়স্তরবিশিষ্ট গোলাপ বাগান, শাপলা চত্বরসহ বিভিন্ন স্থাপনা ঘুরে ঘুরে দেখছেন দর্শনার্থীরা। এছাড়াও ভির করছে ব্যাকক্তগত মালিকানায় গড়ে পার্ক গুলোতে।
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলা শহরের কাপড় ব্যবসায়ী জহিরুল ইসলাম বলেন, বিনোদনের জন্য সপরিবারে এখানে ঘুরতে এসেছি। সন্তানদের বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সেক্টরভিত্তিক মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানাতে পারছি। তাই খুব ভালো লাগছে।
চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে নানাবাড়ি ঈদ করতে এসেছেন শাহীন। মুজিবনগরে বেড়াতে এসেছেন তিনি। তিনি বলেন, শুনেছি ঐতিহাসিক মুজিবনগরের কথা। আজ চোখে দেখলাম। মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি। কিন্তু সেসময়ের পাকিস্তানি সমর্থকরা যে নির্যাতন করেছে নিরীহ বাঙালির ওপর সেই চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এখানে ভাস্কর্যের মাধ্যমে। ভালো লাগলো মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে পেরে।
পর্যটকদের নিরাপত্তায় ও আনন্দদায়ক ভ্রমণ নিশ্চিতে কাজ করছে মুজিবনগর থানা ও উপজেলা প্রশাসন।
মুজিবনগর ট্যুরিস্ট পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুক হোসেন বলেন, প্রায় প্রতিবারই মুজিবনগরে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে দর্শনার্থীদের প্রান হারানোর ঘটনা ঘটে। তবে এবার আমাদের পুলিশ রাস্তায় শৃঙ্খলা আনার জন্য থানা পুলিশের পাশাপাশি ব্যাপক পরিশ্রম করছে। দর্শনার্থীদের সচেতন কারার জন্য মোড়ে মোড়ে পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।