প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৪ এপ্রিল, ২০২৪, ৪:৫২ অপরাহ্ন
দ্য ইকোনোমিক্স টাইমসের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হচ্ছে। প্রায় ৯ দশমিক ৮ মিলিয়ন (৯৮ লাখ) পাকিস্তানি ইতোমধ্যে দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করছে। ব্যাপক অর্থনৈতিক সংকটে থাকা এই দেশে আরও এক কোটিরও বেশি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যেতে পারেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিশ্ব ব্যাংক।
এক দশমিক ৮ শতাংশের কম অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার এবং ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির উপর ভিত্তি করে এই আশঙ্কা দেখিয়েছে ওয়াশিংটনভিত্তিক বৈশ্বিক ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানটি।
এছাড়াও পাকিস্তানের প্রবৃদ্ধির দৃষ্টিভঙ্গির অর্ধ-বার্ষিক প্রতিবেদনে এটি ইঙ্গিত দিয়েছে যে দেশটি প্রায় সবগুলো মূল অর্থনৈতিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, পাকিস্তান তার প্রাথমিক বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারছে না। টানা তিন বছর লোকসানে থাকতে পারে এই দেশ। এটা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের শর্তের পরিপন্থী। মুদ্রা তহবিল মূলত উদ্বৃত্তের শর্ত বজায় রেখেছে।
প্রতিবেদনের প্রধান লেখক (লিড অথর) সৈয়দ মুর্তজা মুজাফফারি এ প্রসঙ্গে বলেছেন, দারিদ্র্য দূরীকরণে যে প্রচেষ্টা চলছে তা যথেষ্ট নয়। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সামান্য ১ দশমিক ৮ শতাংশে স্থিতিশীল থাকবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। একই সময়ে, প্রায় ৯ দশমিক ৮ কোটি পাকিস্তানি ইতিমধ্যেই দারিদ্র্যসীমার নিচে রয়েছে। এতে দারিদ্র্যের হার প্রায় ৪০ শতাংশে স্থির রয়েছে। প্রতিবেদনে দারিদ্র্যসীমার ঠিক উপরে বসবাসকারী মানুষের ঝুঁকির কথাই তুলে ধরা হয়েছে। এর আওতায় এক কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যাওয়ার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন।
এরই মধ্যে কিছুটা আশার আলোও কিন্তু দেখিয়েছে বিশ্ব ব্যাঙ্ক। বিশ্ব ব্যাঙ্ক বলেছে, দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কৃষি উৎপাদনে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু এই লাভগুলি ক্রমাগত উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং নির্মাণ, বাণিজ্য এবং পরিবহনের মতো উচ্চ-কর্মসংস্থান খাতে সীমিত মজুরি বৃদ্ধির দ্বারা অফসেট করা হতে পারে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে দৈনিক মজুরি শ্রমিকদের মজুরি এই আর্থিক বছরের প্রথম প্রান্তিকে মাত্র পাঁচ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যেখানে মূল্যস্ফীতি ৩০ শতাংশের উপরে ছিল। এতে করে দেশটিতে দিনমজুরদের মজুরি মাত্র ৫ শতাংশ বেড়েছে।
প্রসঙ্গত, বিশ্ব ব্যাংক আরও সতর্ক করেছে যে জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ার পাশাপাশি পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণে বিদ্যালয়ে উপস্থিত শিশুদের সংখ্যা কমতে পারে। এছাড়াও, এটি অসুস্থতার ক্ষেত্রে চিকিৎসা সেবার সেবা বিলম্বিত হতে পারে। যারা কোনও ভাবে বেঁচে রয়েছেন, তাদের মাথায় মৃত্যুর হুমকি সবসময় থাকবে। এছাড়াও, এই প্রতিবেদনটি আরও বলেছে যে দেশের কিছু অংশে খাদ্য নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।