প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ, ২০২৪, ২:৪৭ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ, ২০২৪, ২:৪৮ অপরাহ্ন
বেনাপোল বন্দরে অর্ধকোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির ঘটনায় গত একমাস ভারতীয় পণ্যবোঝাই একটি ভারতীয় ট্রাক আটকে আছে বন্দরে। ট্রাকটিতে আইপিএস বোঝাই পন্য রয়েছে বলে বন্দর কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছেন।
বর্তমানে ট্রাকটি বন্দরের ৩৬ নম্বর শেডের সামনে সিসি ক্যামেরার আওতায় নিরাপত্তাকর্মীদের নজরদারিতে আছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, ট্রাক ও রাজস্ব ফাঁকির বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কাস্টমসকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বলছে, ট্রাকটির পন্য খালাশের জন্য বেনাপোলের সিএন্ডএফ এজেন্ট বিজনেস মিডিয়া কাস্টমস কমিশনার বরাবর আবেদন করেছেন।বিজনেস মিডিয়া এই আমদানিকারকের একই জাতীয় পন্য ইতিপূর্বে খালাশ নিয়েছেন। বর্তমানে বিজনেস মিডিয়া এই আমদানিকারকের নিয়োগপ্রাপ্ত সিএন্ডএফ এজেন্ট।
বন্দর সূত্রে জানা যায়, ভারত থেকে যেসব পণ্যবাহী ট্রাকটি বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করে সাধারণত একজন সিঅ্যান্ডএফ প্রতিনিধি ট্রাকটি গ্রহণ করে কাস্টমস কার্গো শাখায় পণ্যের তথ্যাদি কম্পিউটারে এট্রি করে থাকেন। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ভারত থেকে ( ডাব্লিউ -১১-ই ৬৩৬৬) নম্বরের ট্রাকটি নিয়ম না মেনে বন্দরের ৩৬ নম্বর শেডের সামনে অবস্থান করে। ট্রাকের পণ্যে অর্ধকোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে এমন ধরনের গোপন খবর আসে কাস্টমস, বন্দরসহ একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার কাছে। ট্রাকটিতে বড়ধরনের শুল্ক ফাঁকি দিয়ে গোপনে ট্রাকটি বন্দর থেকে পাচার করার চেস্টা করছে সংশ্লিস্ট সিএন্ডএফ এজেন্ট। এরপর থেকে ট্রাকটি সিসি ক্যামেরা ও বন্দরের নিরাপত্তাকর্মীদের নজরদারিতে রাখা হয়।
সাধারণ আমদানিকারক রুবেল হোসেন বলেন, ট্রাকটিতে কী আছে আর কেন এত দিন এটি বন্দরে পড়ে আছে, তা নিয়ে কৌতূহল ও ভীতি বিরাজ করছে। এখন পর্যন্ত কেউ ট্রাকটির মালিকানা দাবি করছে না। ধারণা করা হচ্ছে, শুল্ক ফাঁকির উদ্দেশ্যে ট্রাকটি নিয়ম না মেনে বন্দরে ঢুকেছে। এ ধরনের নানা অনিয়মের কারণে ২০১১ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত টানা ১২ বছর রাজস্ব ঘাটতি যাচ্ছে বেনাপোল কাস্টমস হাউসে।
বেনাপোল কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানান, পণ্যবাহী ট্রাকটির আমদানিকারক ঢাকার টিআর অটোমোবাইলস। ট্রাকটিতে ৫১১ কার্টুন আইপিএস ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ট্রাকটিতে বিপুল পরিমান রাজস্ব ফাঁকির তথ্য রয়েছে। বিজনেস মিডিয়া নামে একজন সিএন্ডএফ এজেন্ট পণ্য চালানটি গোপনে খালাশের চেস্ট করছিল।
বেনাপোল বন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) রেজাউল করিম জানান, বড় ধরনের রাজস্ব ফাঁকি দিতে ট্রাকটি বন্দরে কোথাও এন্ট্রি না করে প্রবেশ করায় সিএন্ডএফ এজেন্ট বিজনেস মিডিয়া। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বন্দরে হেফাজতে ট্রাকটি রেখেছে। ট্রাকটির বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য কাস্টমসকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। পন্যচালানটি গোপনে বন্দর থেকে বের করে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাস্টমস ও বন্দরের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করতে ব্যর্থ হওয়ায় আটকে যায় ট্রাকটি।
তিনি আরও জানান, বন্দরের নিয়ম অনুযায়ী এক মাসের মধ্যে পণ্যের চালান বন্দর থেকে খালাস না হলে তা নিলামের তালিকায় তোলা হয়। তখন বন্দর কর্তৃপক্ষ তালিকা দিলে, কাস্টমস সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করে থাকে।