মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
 

চলতি মাসেই ডেঙ্গুতে মৃত্যু দেড়শ ছাড়িয়েছে    অন্তর্বর্তী সরকার ব্যর্থ হলে আবারও অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে দেশ: ফখরুল    অবিলম্বে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তি চাইলেন ফরহাদ মজহার    সরকারের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে হবে : শীর্ষ নির্বাহীদের প্রধান উপদেষ্টা    সমগ্র বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দৃষ্টিনন্দন ১০ মসজিদ    ধৈর্য্য ধরুন, উসকানিতে সাড়া দেবেন না: উপদেষ্টা আসিফ    অরক্ষিত রেল ক্রসিংয়ে অটোরিকশায় ট্রেনের ধাক্কা : নিহত ৭   
সামাজিক অবক্ষয়ে বাড়ছে নবজাতক ফেলে দেয়ার ঘটনা
গত ৫ বছরে ঢাবি এলাকা থেকে ১৬ নবজাতকের মৃতদেহ উদ্ধার
খন্দকার হানিফ রাজা:
প্রকাশ: রোববার, ৩ মার্চ, ২০২৪, ১:২২ অপরাহ্ন

মাতৃগর্ভে আসার পর নবজাতককে পৃথিবীতে স্বাগত জানাতে অন্তহীন প্রতীক্ষায় থাকেন মা-বাবাসহ গোটা পরিবারের। অথচ অনেক নবজাতককে পৃথিবীতে আসার পরই নিষ্ঠুরতার বলি হতে হয়। তার ঠাঁই মায়ের কোলে না হয় ডাস্টবিন, নর্দমা বা রাস্তায়। এদের মধ্যে জীবিতের চেয়ে বেশি পাওয়া যায় মৃত অবস্থায়। সামাজিক অবক্ষয়, অবৈধ শাররীক সম্পর্ক ও লোক লজ্জার ভয়ে নবজাতকদের এমন ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে।

বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের তথ্যানুযায়ী জানা যায়, গত ২০১৮ সালের ২১ নভেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ১৬টি নবজাতকের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ ও ঢাবি প্রক্টরিয়াল টিম। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট সীমানা প্রাচীর না থাকা, বহিরাগতদের অবাধ বিচরণ ও ব্যাপক যানবাহন আসার কারণে এমন অপরাধ দমন করা অসম্ভব। 

তবে পুলিশ, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, সড়ক বিভাগসহ অন্যান্য সংস্থার সমন্বয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা জোরদারে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন ঢাবি প্রশাসন।

বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২১ নভেম্বর কার্জন হলের বাস স্টপেজ থেকে একটি নবজাতকের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ২০১৯ সালের ২৭ জুন শহীদুল্লাহ হল এলাকা থেকে একটি। 

পরের বছর ২০২০ সালের ২৮ অক্টোবর সেন্টার লাইব্রেরির পিছন থেকে একটি, একই বছর ৯ ডিসেম্বর শহীদুল্লাহ হলের পেছনে পানি পাম্প সংলগ্ন কেচি গেইটের পাশ থেকে একটি এবং ওই বছরের ৫ ডিসেম্বর জগন্নাথ হলের পাশ থেকে একটি, ২০২১ সালের ২৬ অক্টোবর গণিত ভবনের পাশ থেকে একটি, ২০২২ সালের ১৮ জানুয়ারি রাসেল টাওয়ারে ফুটপাত থেকে একটি, একই বছর ১৩ ফেব্রুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ছবির হাটের গেট এলাকা থেকে দুটি, ওই বছর ১৭ মার্চ অমর একুশে হলের পাশের ফুটপাত থেকে একটি, একই বছর ২০ সেপ্টেম্বর শহীদ মিনার এলাকা থেকে একটি, ২০২৩ সালের ১২ আগস্ট অমর একুশে হলের ফুটপাত থেকে দুটি এবং সর্বশেষ গত ২৯ ফেব্রুয়ারি উপাচার্য বাংলো এলাকা ও টিএসসির ফুটপাত থেকে একটি করে মোট দুটি নবজাতকের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।

সর্বশেষ ভিসির বাংলো এলাকা থেকে এক নবজাতকের মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় জানা যায়, গত ২৯ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার দুপুরে ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাংলোর সীমানা দেয়ালের বাইরে থেকে ভেতরের অংশে ব্যাগে মোড়ানো এক নবজাতকের মৃতদেহ ছুঁড়ে ফেলা হয়। পরদিন ১ মার্চ শুক্রবার মো. সুলতান মিয়া (৩৫) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে সিসিটিভির ফুটেজ ও সুলতানের শ্যালক মুত্তাকীর মাধ্যমে অভিযুক্ত সুলতানকে শনাক্ত ও গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, তার স্ত্রী খাদিজা বেগম বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে একটি মৃত কন্যাশিশুর জন্ম দেয়। সুলতান নবজাতকের মৃতদেহটি বাজারের ব্যাগে ভরে উপাচার্যের বাসভবনের সীমানা দেয়ালের পাশে বাগানের উত্তর-পূর্ব কোণে ফেলে দেয়।

এ প্রসঙ্গে ঢাবি প্রক্টর অধ্যাপক ড.  মাকসুদুর রহমান বলেন, রোকেয়া হলের স্টাফ কোয়ার্টারের দিক থেকে নবজাতকের মৃতদেহটি উপাচার্যের বাংলোর মধ্যে ছুঁড়ে ফেলা হয়। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ওই ব্যক্তিকে শনাক্তের চেষ্টা করা হয়। পরে পুলিশকে বিষয়টি জানানো হলে তদন্ত করে জড়িত ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ঢাবি ক্যাম্পাস পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, নবজাতকের জন্ম-মৃত্যু হয় মূলতঃ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে (ঢামেক) হাসপাতালে। পরে অসহায় মা-বাবা বা কোনো চক্র এই মৃতদেহ ক্যাম্পাসের ভেতরে ফেলে যায়। পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের চারদিকে কোনও সীমানা প্রাচীর না থাকায় ক্যাম্পাস অনেকটা উন্মুক্ত। এখানে বহিরাগত প্রচুর মানুষ ও যানবাহন চলাচল করে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক পরিবেশের সাথে সংগতিপূর্ণ নয়। কীভাবে ক্যাম্পাসের পরিবেশ আরও নিরাপদ করা যায় তার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সিটি করপোরেশন, সড়ক বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কাজ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। 

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. আক্তার হোসেন রিন্টু
বার্তা ও বাণিজ্যিক বিভাগ : প্রকাশক কর্তৃক ৮২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক (৩য় তলা) ওয়্যারলেস মোড়, বড় মগবাজার, ঢাকা-১২১৭।
বার্তা বিভাগ : +8802-58316172. বাণিজ্যিক বিভাগ : +8801868-173008, E-mail: dailyjobabdihi@gmail.com
কপিরাইট © দৈনিক জবাবদিহি সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft