জর্জিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে রাজধানী তুবলিসিতে অবস্থিত পার্লামেন্টে আজ রোববার শপথ নিয়েছেন মিখাইল কাভেলাশভিলি। কিন্তু এখনো ক্ষমতা ছাড়েননি বিদায়ী প্রেসিডেন্ট সালোমে জুরাবিশভিলি। পদত্যাগ করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে তিনি নিজেকে 'একমাত্র বৈধ প্রেসিডেন্ট' বলে দাবি করেছেন।
বিবিসি, আল জাজিরাসহ আরও একাধিক সংবাদমাধ্যমে এ তথ্য জানিয়ে বলা হয়, আজ পার্লামেন্টের কাছেই একটি স্থানে বিক্ষোভ করেছেন নতুন প্রেসিডেন্ট মিখাইল কাভেলাশভিলির বিরোধীরা।
সেখানে জুরাবিশভিলি তার সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, তিনি প্রেসিডেন্সিয়াল প্রাসাদ ত্যাগ করবেন, কিন্তু তার উত্তরসূরি অবৈধ।
'যতদিন এখানে একজন বৈধ প্রেসিডেন্ট বসবাস করেছেন, ততদিন ভবনটি সবার কাছে একটি প্রতীক হিসেবে ছিল,' বলেন তিনি।
অক্টোবরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জর্জিয়ান ড্রিম জয়লাভ করলেও তাতে ভোটার জালিয়াতির অভিযোগ উঠে। দেশের চারটি প্রধান বিরোধী দলই এই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে এবং পার্লামেন্ট বয়কট করেছে।
বিদায়ী জুরাবিশভিলিও জর্জিয়ান ড্রিমের সমর্থনেই ২০১৮ সালে ক্ষমতায় এসেছিলেন। কিন্তু ২০২০ সালের পার্লামেন্টারি নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ আসলে ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে তার দূরত্ব বাড়তে শুরু করে। তার ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও পশ্চিম পন্থী অবস্থানও এই দূরত্ব বাড়িয়েছে বলে দাবি করছেন বিশ্লেষকরা।
অক্টোবরের নির্বাচনকে তিনি 'রাশিয়ার বিশেষ অভিযান' বলে অভিহিত করেছেন।
বিবিসি জানায়, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেশ কর্তৃত্ববাদী হয়ে উঠেছে জর্জিয়ান ড্রিম। গণমাধ্যম, বেসরকারি সংস্থাগুলোর নিয়ন্ত্রণে বেশ কিছু নতুন আইন প্রণয়ন করেছে তারা। আঞ্চলিক রাজনীতিতে তাদের রাশিয়ার পক্ষে অবস্থান নিতে দেখা যাচ্ছে। দেশের সিংহভাগ মানুষ ইইউয়ে যোগ দেওয়া পক্ষে থাকলেও দলটি এ ব্যাপারে অনীহা প্রকাশ করেছে।
গত নভেম্বরে দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়, ২০২৮ সালের আগে ইইউতে যোগ দেওয়ার আলোচনায় যাবে না তারা। এই ঘোষণার পর দেশে বিক্ষোভ শুরু হয়।
জর্জিয়া একটি সংসদীয় গণতন্ত্র, যেখানে প্রেসিডেন্ট রাষ্ট্রপ্রধান এবং প্রধানমন্ত্রী পার্লামেন্টের প্রধান। এখানে প্রতি চার বছর পর পর পার্লামেন্ট নির্বাচন এবং পাঁচ বছর পর পর প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সাম্প্রতিক সাংবিধানিক পরিবর্তনের আগ পর্যন্ত প্রেসিডেন্টের মেয়াদ ছিল ছয় বছর।