প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৪:০৫ অপরাহ্ন
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের পতনঊষারে এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গত শুক্রবার গভীর রাতে স্থানীয় পতনঊষার ইউনিয়নের শ্রীরামপুর নয়া বাজারে বাজারের নৈশ্যপ্রহরীসহ চারজন মিলে ওই নারীকে ধর্ষণ করা হয়। পরদিন শনিবার ভোরে এ ঘটনায় জড়িত চারজনকে স্থানীয়রা আটক করলে এলাকার বদনামের কথা বলে বিষয়টি ধামাচাপা দেন স্থানীয় ব্যবসায়ী নেতা হেলালসহ কয়েক সালিশকারক। গুঞ্জন রয়েছে মোটা অংকের বিনিময়ে অভিযুক্তদের আইনের হাতে তুলে না দিয়ে স্থানীয় সালিশে জুতাপেটা করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
তবে এ ঘটনায় জড়িত ওই বাজারের দুই নৈশ্যপ্রহরী বাবুল ও তজমুলকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত অপর দুইজন নয়া বাজার সিএনজি স্ট্যান্ডের অটোরিকশা চালক বাবুল ও আহাদ বলে জানা যায়।
বিলম্ব প্রাপ্ত খবরে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, বেশ কিছুদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন নয়া বাজারে ঘোরাফেরা করে আসছিল। শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে ওই নারীকে বাজার পাহারাদারসহ চারজন মিলে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। শনিবার ভোরে বিষয়টি জানাজানি হলে ধর্ষক চারজনকে স্থানীয়রা আটক করেন। খবর পেয়ে শ্রীরামপুর নয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হেলাল আহমেদ চৌধুরীসহ স্থানীয় কয়েক সালিশগণ এলাকার বদনামের কথা বলে সালিশে বসেন। সালিশে অভিযুক্তদের জুতা পেটা করে তাদের কাছ থেকে সাদা কাগজে টিপসই-সাক্ষর রেখে ছেড়ে দেওয়া হয়। ঘটনাটি রোববার সকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় সংবাদকর্মীদের নজরে আসে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে শ্রীরামপুর নয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হেলাল আহমেদ চৌধুরী বলেন, ওই নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় বাজারের ব্যবসায়ীসহ পাবলিকরা চারজনকে আটক করে। পরে সালিশে তাদের বিচার করে শাস্তি দেওয়া হয়। জড়িত বাজার প্রহরীদের বাজার থেকে বাতিল করা হয়েছে। চালক যারা ছিল তাদের চালক সমিতির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ভিকটিম না পাওয়ায় তাদের বাঁচাতে উপস্থিতিতে এটা করা হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে বাজার সভাপতি হেলাল মোটা অংকের বিনিময়ে সালিশ করার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, সামাজিকভাবে বিষয়টি দেখা হয়েছে। আইনিভাবে দেখতে হলে পরে দেখা যাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, আমরা এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। পাশেই থাকা এক টমটম চালক বলেন, তাদের কঠোর বিচার হওয়া দরকার।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সৈয়দ ইফতেখার হোসেন বলেন, বিষয়টি আমি অবগত নই। খোঁজ নিয়ে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখছি।