
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার পাচুড়িয়া ইউনিয়নের ধুলজুড়ি গ্রামে মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) গভীর রাতে ঘটে গেল এক চাঞ্চল্যকর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা। আনুমানিক রাত তিনটার সময় দুর্বৃত্তরা একযোগে আগুন দেয় একটি মন্দির, একটি করাতকল ও তিনটি পরিবারের রান্নাঘরে। মুহূর্তেই দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে একাধিক স্থাপনা।
খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসে ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় বাসিন্দারা। তাদের প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও, ততক্ষণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়ে গেছে।
এই অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন সুজন সরকার, দেবাশীষ রায়, জাহিদ শেখ ও আকবার মোল্লা। সুজন সরকারের গোয়ালঘর সম্পূর্ণ পুড়ে যায়, দেবাশীষ রায়ের করাতকলের মূল্যবান যন্ত্রপাতি আগুনে ছাই হয়ে গেছে। রান্নাঘর পুড়ে গেছে জাহিদ শেখ ও আকবার মোল্লার। তবে বসতবাড়িগুলো আগুনের বাইরে থাকায় বড় ধরণের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।
অগ্নিকাণ্ডে মন্দিরের কালির মূর্তি ও শিবের প্রতিমা, ঘরে রাখা ধান, বিচালি, স্যালো মেশিন ও সেচ পাইপ পুড়ে গেছে।
সংবাদ পেয়ে সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আজমীর হোসেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাসেল ইকবাল, থানার অফিসার ইনচার্জ হারুন অর রশিদ এবং সেনাবাহিনীর বোয়ালমারী ক্যাম্প ইনচার্জ।
ধুলজুড়ি সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরের সভাপতি দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, রাতের আঁধারে কে বা কারা মন্দিরে আগুন দিয়ে কালি ও শিব প্রতিমা পুড়িয়ে দিয়েছে। প্রথমে আমি বিষয়টি দেখতে পেয়ে সবাইকে জানাই।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এটি পূর্বপরিকল্পিত ও সমন্বিত একটি নাশকতা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে, দোষীদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
এবিষয়ে আলফাডাঙ্গা থানা অফিসার ইনচার্জ হারুন-অর রশীদ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের সনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার জন্য কাজ করছে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে থানায় আনা হয়েছে।
ঘটনার পর পুরো ধুলজুড়ি গ্রামে নেমে এসেছে আতঙ্ক ও শোকের ছায়া। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো প্রশাসনের সহযোগিতা ও পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছেন।