
অপরাজনীতির করাল গ্রাসে বাংলার আকাশ বাতাস আজ প্রকম্পিত। আজ আমরা নিজের হাতে গণতন্ত্রকে গলাটিপে হত্যা করেছি এবং করছি। আমাদের হাত আজ রক্তাত্ব । যে গঙ্গার স্রোতে ভেসে এসেছিল হাজার করুণ রোদন আজ আমরা সেই রোদনের মাঝে নতুন সুরে পীড়াদায়ক একটি আলোড়ন তৈরি করছি স্বার্থের মোহে পড়ে। আজ আমরা ইতিহাস বিকৃতির হিংস্র জঞ্জালে আবদ্ধ করছি আমাদের মনুষ্যত্বকে। আমরা নতুন নতুন ভাবধারায় প্রতিষ্ঠিত করছি দুঃশাসন। আমরা লোহার শিকলে বেঁধে রাখছি আইন শৃঙ্খলাকে। আমাদের অপশাসনের প্রভাব যেন ছাড়ছেই না। একটি অপশাসন থেকে বের হতে না হতেই আরেকটি অপশাসন আমাদের ঘিরে ফেলে। আমাদের বিভেদপুষ্ঠ চেতনা যেন আমাদের আবেগকে হায়েনার মতো ঘিরে ধরে। সবার মাঝেই কাজ করে প্রতিপক্ষের চেতনা ধ্বংসের পায়তারা। কিন্তু তারা জানেনা চেতনাকে ধ্বংস করা যায়না। যারা এধরনের অপচেষ্ঠা করে তারা যুগে যুগে লাঞ্চিত হয়েছে, অপদস্ত হয়েছে। হারিয়ে গেছে সমাজ থেকে। চেতনা একটি ত্যাজদীপ্ত ভাব যা সমাজকে নাড়িত করে তার আপন শক্তিতে। এই চেতনা কোন বাধা মানে না। পৃথিবীতে কোন কালে কোন চেতনাকে বিলুপ্ত করা যায়নি। সময়ের সাথে সাথে তা শানিত হয়ে আরো গভীরতা নিয়ে নতুন ভাবে জাগ্রত হয়। পশ্চিম পাকিস্থান পূর্ব পাকিস্থানের চেতনাকে ধ্বংস করতে পারেনি। ১৫ই আগষ্ট মুজিব চেতনাকে রুখতে পারেনি, এক ১১ জাতীয়তাবাদী চেতনাকে দমন করতে পারেনি, ২১ আগষ্টও তা করতে পারেনি, তেমনি জামাত-শিবিরের চেতনাকেও ধ্বংস করতে পারেনি গত ১৫ বছরেও। শত প্রতিবন্ধকতায় তারা আরো শক্তিশালী হয়ে নানা রুপে ৫ আগষ্টের রুপ দিয়েছে। এখন কি আওয়ামী চেতনাকে ধ্বংস সম্ভব? নানা হিসেব তা বলে না ধ্বংস সম্ভব নয় ক্ষনিকের জন্য স্থগিত সম্ভব যা সকল সময় সকল শাসকগন অপজিশনদের প্রতি করেছে। এই অপজিশন ধ্বংসের অপচেষ্ঠা খুবই অমানবিক এবং মনুষ্যত্বহীনতার প্রকাশ। এ থেকে বেড়িয়ে আসা আজ আমাদের শেষ দাবী।
আমরা প্রেম শব্দটির সাথে সকলেই পরিচিত। আমরা সবাই প্রেমিক কিন্তু আমাদের মাঝে একজনও দেশপ্রেমিক নেই। আমরা দেশের কথা ভাবতেই ভুলে যাই। আত্মপ্রেমে মশগুল আমরা নিজেদের মাঝে জাগিয়ে তুলি স্বার্থপরতার জ¦াল। নেতৃত্বে দেশপ্রেম জাগিয়েতোলা অনেক জরুরী। অনিয়ম, অত্যাচার, দুর্নীতি যা ঘটে সবই দেশপ্রেমের অভাবে হয়ে থাকে। আমরা নিজের মাঝে সততার ভাঁজ তৈরি করতে প্রস্তুত নই কিন্তু আমরা অন্যের জন্য তৈরি করি পাঠশালা। আত্মশুদ্ধির পথকে উপেক্ষা করে অন্যায়ের পথে চলতেই আমরা স্বাচছন্দ্যবোধ করে থাকি।
আমরা খুবই পরিচিত কিছু শব্দ ব্যবহার দেখতে পাচ্ছি তা হলো সৈরাচার, ফ্যাসিবাদ, ফ্যাসিস্ট, এবং দুঃশাসক। এই প্রতিটি শব্দই ঋনাত্বক। কিন্তু আমরা খুব অবচেতন মনে এই ঋনাত্বক গুনগুলোকে ধারন করে ফেলি ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করার অভিপ্রায়ে। বিগত সকল সরকার ব্যবস্থাপনায় প্রায় সকলের মাঝেই এই দোষ গুলোকে ধারন করে এবং তা বাস্তবায়নের অভিপ্রায়ে হস্তক্ষেপ করে মানুষকে প্রতারনার মাধ্যমে গণতন্ত্রের বানী শুনিয়েছে সবাই। এখানে প্রত্যেকেই প্রচলিত সাংবিধানিক নিয়মকে অনিয়মে পরিনত করতে চেয়েছে আইনের ফাঁক ফোকরের মাধ্যমে। এটা মারাত্বক অন্যায় যে আমরা দেখছি সংবিধানকে কিভাবে অপব্যবহার করে আপন স্বার্থ সিদ্ধির পায়তারায় লিপ্ত হয়েছে। আমরা দেখেছি সামরিক অপশাসন, আমরা দেখেছি একক দলের ভোট পায়তারা, আমরা দেখেছি রাতের ভোট এবং আমরা দেখেছি পুলিশি শাসন যা আমাদের জীবনকে করেছে নিষ্পেশিত, নিগৃহীত ও কলঙ্কজনক।
সৈরাচার বা ফ্যাসিষ্ট শাসকের বৈশিষ্ট নিয়ে নানান ব্যখ্যা রয়েছে। এই রুপের প্রধান বৈশিষ্ট হলো ক্ষমতার অপপ্রয়োগের মাধ্যমে শাসন কাজ দীর্ঘায়িত করার বাসনা। দেশের সাংবিধানিক নিয়মকে নিজের প্রয়োজনে সাজিয়ে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করার পায়তারা। মানুষের সামাজিক অধিকার খর্ব করে শুধু অনুগতদের সুবিধা প্রদানের নিমিত্তে কাজ করা । এর ফলে তারা হয়ে উঠে অত্যাচারী এবং নিকৃষ্টতা তাদের মনকে কঠোর করে তুলে যা অপশাসন, দুঃশাসন এবং ভয়ংকর রুপে আইনের অপপ্রয়োগ করে থাকে। বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের মধ্যেও এই রুপের প্রথম কদম দেওয়ার অবস্থা পরিলক্ষিত হচ্ছে। আর এমন মানষিকতার ফলেই দেশ দেখল মব জাষ্টিজের মতো চরম অন্যায়, ইতিহাস বিকৃতির পায়তারা, মুক্তিযুদ্ধের অবস্থানকে অস্বীকৃতিদান, বুদ্ধিজীবিদের অসম্মান, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা তৈরির পায়তারা এমন আরো হাজার রকম অস্থিতিশীলতার জন্ম দেওয়ার অশুভ কাজ। আর এজন্যই হত্যা, খুন, দখলবাজি, চুরি-ডাকাতি, ধর্ষণ, দুর্নীতি বৃদ্ধিসহ নানবিধ ঘটনা দেখা যাচ্ছে। কোন মানুষ নিজে থেকে সৈরাচার হয় না ঘটনার পরিক্রমা এবং চারিদিকে ভর করা কিছু মানুষের অনাচার মানষিকতা তাকে ফ্যসিষ্ট বা সৈরাচার হতে কাজ করে।
আমরা বর্তমানে কেমন আছি? আমরা কি পুর্বেকার সকল সৈরশাসকের অপশাসনকে টপকিয়ে নতুন কোন দুঃশাসনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি? নাকি আমরা আমাদের সার্বভৌমত্মকে হারিয়ে নতুন কোন বর্গীর হাতে বন্দী হতে চলেছি। সাংবিধানিক উপায়ে ইঞ্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে সৈরশাসক হওয়া যেমন অপরাধ তার চেয়েও ভয়ংকর অপরাধ হলো ইন্ডেমনিটি অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে নিজেদের ভাল মন্দ কাজকে জবাবদিহিতার উর্ধ্বে নিয়ে আসা। আমরা এধরনের অধ্যাদেশকে কি ফ্যাসিবাদের অনুসরন হিসেবে উল্ল্যেখ করতে পারি না? আমাদের কি দোষ ত্রুটির ব্যাপারে সমালোচনা করার অধিকার রাখিনা? নাকি আমরা বরাবরে মতো নিছক নিচুশ্রেণির মানুষ রুপে আমাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া প্রতিটি আদেশ মেনে নিতে বাধ্য? আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে আন্দোলন করেছি। আমরা আমাদের বাকস্বাধীনতা অর্জনের জন্য আন্দোলন করেছি। আমার মুখে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার জন্য আন্দোলন করিনি। আমরা নতুন কোন ফ্যাসিবাদের জন্মদিতে আন্দোলন করিনি।
বর্তমান সময়ে আমরা দেখতে পাচ্ছি পূর্বেকারমতো বাকস্বাধীনতা হারানের পায়তারা, আমরা দেখছি বাজার সিন্ডিকেটের পায়তারা, আমরা দেখছি একদলীয় শাসন কায়েমের অপচেষ্ঠা, আমরা এও দেখছি সরকার তার সকল কাজকে বৈধতা দানে সৈরাচার মনোবৃত্তির মাধ্যমে অধ্যাদেশ জারির হীন মানষিকতা। রাজনৈতিক অধিকার হরণের অপচেষ্ঠায় দেশ ও জাতি আজ অতিষ্ঠ যা সমাজের প্রতিটি স্থরে মানবিকতার চরম বিপর্যয়ে মানুষ তার অস্থিত্ব হারানোর পথে। বাংলার মানুষ আজ তার মানবিক অধিকার আদায়ে ঐক্যবদ্ধ।
যখন ন্যায় অন্যায়ের পার্থক্য বোঝার ক্ষমতা হারিয়ে নতুন কোন অপশাসনের পায়তারা করার প্রবনতা নিজেদের মধ্যে বিরাজ করে তখনি এধরনের হীন অধ্যাদেশ জারি করার সাহস তৈরি হয়। বাংলাদেশকে এমন হীন মানষিকতা সব সময় নির্যাতন করে, লাঞ্চিত করে অপমানের সাগরে নিমজ্জিত করে থাকে। আমরা ক্ষমতার দাপটে সব সময় সৈরাচারের রুপ বুঝতে ভুলে গিয়ে নিজেরাই আপন মনে সেই তকমায় ভুষিত হয়ে পড়ি। আমরা কি কখনো ভাবতে পারি আমাদের মানষিকতায় কতটুকু হিংস্রতা বিরাজ করলে আমরা আমাদের মানুষকে সৈরতন্ত্রের বাসিন্দা বানাতে উদ্যত হই। আমরা ভুলে যাই আমরা মানুষ, আমরা ভুলে যাই আমাদের মানবিকতা।
বাংলাদেশের শাসন কাল বিকেচনা করলে খুবই দুঃখের সাথে বলতে হয় বাংলাদেশের অদ্যবদি কোন শাসকই দেশের জন্য স্বপ্ন দেখেনি। সবাই তার নিজের বা গোষ্ঠির উন্নয়নে কাজ করেছে । তারা ব্যস্ত ছিল বা আছে স্বার্থপরতার মাধ্যমে জীবন উন্নত করার ধান্দায়। কিন্তু তারা জানেনা যে তাদের এই ধান্দা খুবই অদূরদর্শি এবং হটকারিতায় ভরপুর কোন সার্কাস। তাদরে এটা বোঝা উচিত যে আত্ম উন্নয়ন সুখের হয়না যতক্ষন না রাষ্ট্র উন্নয়নের মুখ না দেখে। তাই ক্ষমতার স্বাদ নেওয়ার পূর্বে যোগ্যতা অর্জন বাধ্যতামুলক। বর্তমান বাংলাদেশ অযোগ্য এক দল মানুষের হতে বন্দি। তাদের কাছে মনে হচ্ছে এটা পাড়ার মাঠে হাডুডু খেলার মতো। আমরা এমন এক অপশাসনের কবলে পড়েছি যেখানে অনভিজ্ঞ ও অযোগ্যতার ভীড়ে জাবর কাটার এক বিড়াট প্রতিযোগিতা। মনে হচ্ছে আমরা ডাকাতের হাত থেকে পাগলের হাতে পড়ে আজ অসম নৃত্যে ব্যস্ত।
বর্তমান সময়ে রাজনৈতিক বৈষম্যের শিকার বাংলার মানুষ। হাসিনা সরকারের অত্যাচারী শাসন প্রথাকে হার মানিয়ে লেজুর ভিত্তিক নতুন এক অপশাসনের শিকারে পরিণত আমাদের মানবতা, মানবিকতা, আমাদের নমনীয়তা। সুন্দরবনের বাঘ আজ আনাচে কানাচে ঘোরছে। আজ মামলার হিরিকে মানুষ পাগল প্রায়। হত্যা খুন রাহাজানি যেন কচু পাতা কাটার মতো। দেশের এই হিংস্র শাসন ব্যবস্থা যেন রাষ্ট্রিয় আইনে পরিণত হতে যাচ্ছে। আমরা এই হিংস্রতাকে মনে করছি আইনের শাসন। আমরা দুঃশাসনে জীবন যাপন করতে করতে অপশাসন আর সুশাসনের পার্থক্য করতে ভুলে গেছি। আমরা অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি অধিক মূল্যস্ফিতিতে। আমরা নিম্নমানের জীবনকে মনে করছি আমাদের ভাগ্য রেখার ফলাফল। মনে করছি এটাই আমাদের সৌভাগ্য।
আমরা যুগে যুগে আইন প্রনেতা আর আইন বাস্তবায়নকারীর হতে লাঞ্চিত হয়েছি আর এখনও হচ্ছি । আমরা এই অপমান অপদস্ত অবস্থান থেকে কখনো বের হতে পারবো কিনা তার সন্দেহ রয়েছে । আমরা আমাদের জীবনকে নিষ্পেষিত হতে দেখছি। আমরা দেখছি আপন হাতে দেউলিয়াপনা হতে। এর থেকে মুক্তি পাওয়া সহজ কাজ নয় । কারন আমরা জন্মগতভাবে সৈরাচার। সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীরা প্রজাতন্ত্রের গোলাম না হয়ে নিজেদের গড়ে তুলেছে প্রজাতন্ত্রের মালিক রুপে। এই মানষিকতা আমাদেরকে দুঃশাসনের শিকার বানিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে সকল সুযোগ সুবিধা আর অর্থ বিত্ত।
আমরা সুশসন চাই, জবাবদিহিতা মুলক আইনের প্রয়োগ চাই, আমরা দুর্নীতি মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চাই। আমরা অন্যায় আর অনিয়মকারীদের শাস্তি চাই। দেশের টাকা দেশে রাখতে চাই। আমরা মানবিক সমাজ চাই। কিন্তু সব আশা যেন গুড়ে বালি। যেই লাউ সেই কদু। বাংগালীর স্বভাব এক, এ যেন ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও বাড়া ভানে। সে যেই হোক । যত বড় জ্ঞানীই হোক না কেন সবাই তার আখের গোছাতে ব্যস্ত। নিজের কর মওকুফ করে সবাইকে করদানে উৎসাহ দান এ যেন গোপাল ভাঁড়ের বাংলাদেশ।
কাজের হাজারটা পথ পড়ে থাকলেও আমাদের কাজ করতে হয় আওয়মী নিধন স্বার্থে। আমরা বৈষম্যহীন সমাজ চেয়েছি। আর পেয়েছি একই রুপের একচোখা শাসক। আমরা কিন্তু চেয়েছি নিরাপরাধীর অবাধ বিচরণ সুযোগ আর অপরাধীর শাস্তি সে যে দলেরই হোক কিন্তু কি পেয়েছি কোন গোষ্ঠিকে ধ্বংস করার পায়তারা আর অন্যগোষ্ঠির সকল অপরাধীকে অবাধ বিচরণের সুযোগ করে দেওয়া হীনমানষিকতা। শুধু দায়িত্ব পালনকারীর পরিবর্তন কিন্তু কাজের সেই পুরুনো রুপের বাস্তবায়ন। আসলে বর্তমান মহান এই মানুষটির কাছে চাই আইনের সুষম প্রয়োগ এবং সবার প্রতি সমান দৃষ্টি। কারন তিনি সাধারন কোন রাজনৈতিক মানুষ নন। তার মহানুভবতা থাকবে সকলের প্রতি আর তার কঠোরতা থাকবে প্রকৃত অপরাধীর প্রতি।
আইনের সুষম প্রয়োগ আর ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা কিন্তু এত সহজ কাজ নয়। উড়ে এসে জুড়ে বসলেই ন্যয়পরায়ন শাসক হওয়া যায় না। হাজারটা গ্রন্থ আত্তস্থ করলেই সুশাসক হওয়া যায় না। সুশাসক হতে হলে প্রথমেই হতে হবে নিরহংকারী, সহনশীল ও নমনীয়। আবার সেই বিচার কার্যে হতে হবে কঠোর ও নিরহংকারী। কোন প্রকার অহংকার থাকলে বা প্রতিশোধ পরায়নতা কাজ করলে আপনি কখনোই সুশাসক হতে পারবেন না। কিন্তু আমরা এতই হতভাগা জাতি যে আমরা আজ পর্যন্ত একজন বিনয়ী সুশাসক পায়নি। আমরা জানিনা আমরা তার দেখা কবু পাব কিনা? আমরা হতাশ কারন আমরা সামনে যাদেরকে শাসক হিসেবে দেখতে পাচ্ছি তারা এখন পর্যন্ত নিজের গুণবান মানুষ হিসেবে প্রকাশ করতে ব্যার্থ হয়েছে।
তারা প্রতিশোধ পরায়ন মানষিকতাকে সমর্থন দিচ্ছে। অতীত সরকারের মানষিকতাকে ধারন করে দমন পীড়ন হত্যা লুন্ঠন ইত্যাদিকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে সমর্থন দান পূর্বক দখলদারিত্বের প্রতি আকৃষ্ঠ হচ্ছে। এধরনের মানষিকতা পোষনকারী কখনো সুশাসক হতে পারে না। আমাদের মহানবী (সাঃ) কেন বিধর্মীদের কাছে খুবই প্রিয় ছিলেন ? তার যে গুণাবলি গুলো মানুষকে আকৃষ্ট করেছে সেই সব গুণাবলির ছিটেফোটাও আমাদের পরবর্তী র্কণধার সম্ভাব্য ব্যাক্তিদের মাঝে নেই। অতীত সরকারের মাঝে যতগুলো ঋণাত্বক বিষয় গুলো ছিল সেই সব সকল দোষের এক মহাভান্ডার আজ তাদের মাঝে যারা স্বপ্ন দেখছে আগামীর বাংলাদেশকে শাসন করবে।
আমরা বড় বড় কথা বলতেই পছন্দ করি। কিন্তু তা মানতে কি আমরা আদৌ ইচ্ছা পোষন করতে পারি? আমরা কি আদৌ মানুষ হিসেবে নিজেদের পরিচিত করতে পেড়েছি? আমরা ভুলেই গেছি আমরা মানুষ। আমাদের প্রধান গুণ হলো মনুষ্যত্ব। কিন্তু ভাবতে পারিনা যে আমাদের মানুষ হতে হলে কি কি প্রয়োজন ? আমরা শুধু বুঝি কি পরিমান অর্থ আমাদের উপর্জন করলে আমরা নিজেরা শুধু ভাল থাকতে পারবো। আমরা এটা ভাতে পারি না যে আমার সন্তান বা আমার উত্তরসুরীদের ভাল থাকতে হলে কি কি করতে হবে? আমাদের পরিচয় আমরা দুর্নীতিবাজ, আমরা হত্যাকারী, ধান্দাবজ, দখলবাজ, আমরা প্রতারক হঠকারীতা আমাদের নেশা।
আমরা কখন পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পরবো? আমরা কখন বুক ফুলিয়ে বলতে পারবো আমরা মুসলিম, আমরা বাঙ্গালী আমরা স্বাধীন সার্বভৌম একটি পতাকার মালিক?
লেখক - কথাসাহিত্যিক