
মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া বনসহ বিভিন্ন এলাকার বন উজাড় হওয়ায় বন্য প্রাণীরা বন ছেড়ে লোকালয়ে এসে প্রতিনিয়ত মানুষের হাতে ধরা পড়ে। এ অবস্থায় আহত বা সন্ত্রস্ত প্রাণীকে রক্ষা করতে এলাকাবাসীর বেশির ভাগ ফোন পান শ্রীমঙ্গলের বাংলাদেশ বন্য প্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক স্বপন দেব সজল। তিনি ও তার টিম প্রাণীটিকে সেবা ফাউন্ডেশনে এনে সুস্থ করে বনে ফিরিয়ে দেন।
বন্য প্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন মারফত জানা গেছে, বিভিন্ন দিবসে বিভিন্ন দিনে বন বিভাগ ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে বন্য প্রাণীগুলোকে বনে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাসের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত, গত ১৩ বছরে খাদ্য, পানি ও অন্যান্য সংকটে বন ছেড়ে লোকালয়ে আসা ৬৫২টি বন্য প্রাণী উদ্ধার করে পর্যন্ত ৬৫২ টি বন্য প্রাণী অবমুক্ত করা হয়েছে। এরমধ্যে, অজগর সাপ ১৩১টি, লজ্জাবতী বানর ৪০টি, গন্ধগোকুল ৪৬টি, মেছো বিড়াল ৩৩টি, বানর ২৭টি, তক্ষক ১৭টি, সোনালি বিড়াল ৫টি, বনবিড়াল ৪৫টি, হিমালয়ান পাম সিভেট ১টি, কালনাগিন সাপ ৪টি, হনুমান ১টি, বনরুই ১টি, গুঁইসাপ ৪টি, বন্য শূকর ৩টি, উড়ন্ত কাঠবিড়ালী ৫টি, লেজহীন চিকা ১টি, বোম্বেটিনকেট স্নেক ১টি, ধনেশ পাখি ১টি, কাছিম ৩টি, পেঁচা ১৮টি, সবুজ বুড়াল সাপ ১৪টি, শঙ্খিনী সাপ ১২টি, ফনিমনসা সাপ ৮টি, বিভিন্ন প্রজাতির পাখি ১৩৯টি, শিয়াল ১টি ,পদ্মগোখরা সাপ ৩টি, হিমালয়ান ধূরা সাপ ৫১টি, দুধরাজ সাপ ২টি, দাঁড়াশ সাপ ৭টি, সবুজ বুড়াল সাপ ৬টি, বাজপাখি ২টি, খইয়া গোখরা সাপ ২টি, সবুজ ফনিমনসা সাপ ৩টি, কোবরা সাপ ১টি, বিরল লালডোর সাপ ১টি, আইডক্যাট স্নেক ৫টি, কালো বক ১টি, নিশি বক ১টি, রেসাস বানর ১টি, ঘর গিন্নি সাপ ৩টি, গ্রে কেট স্নেক ১টি, ক্যান্টরের ১টি, মেটে সাপ ১টি বনে অবমুক্ত করা হয়েছে।
বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক জামিল মোহাম্মদ খান বলেন, আমাদের বন রেঞ্জ অফিসে সেবা ফাউন্ডেশন থেকে এই তালিকা দেয়া হয়েছে।
বর্তমানে বাংলাদেশ বন্য প্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনে অর্ধশতাধিক বিপন্ন ও বিরল প্রজাতির প্রাণী রয়েছে বলে জানান ফাউন্ডেশনের পরিচালক স্বপন দেব সজল।
তিনি জানান, এখানে উল্লেখযোগ্য প্রাণীদের মধ্যে মেছো বিড়াল, ভল্লুক, উল্লুক, চশমা হনুমান, গাধা, লজ্জাবতী বানর, চিত্রা হরিণ, মায়া হরিণ, ইমু পাখি, গন্ধগোকুল, অজগর, শঙ্খিনীসহ বিভিন্ন প্রজাতির সাপ, সাধারণ প্রজাতির বানর, ধূসর বানর, সোনালি বিড়াল, বন বিড়াল, হিমালয়ান পাম সিভিট, হনুমান, বনরুই, গুইসাপ, বন্য শূকর, উড়ন্ত কাঁঠবিড়ালি, বোম্বেটিনকেট গ্লেইক, ধনেশ পাখি, কাছিম, পেঁচা, বাজপাখি, শকুন, ময়নাসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি রয়েছে।
বন্য প্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক বলেন, এখানে জন্ম নেওয়া প্রাণীগুলো এককভাবে জীবনযাপনে সক্ষম হলেই বনে ছেড়ে দেওয়া হয়। এইসব প্রাণীদের সেবা প্রদানে কোন সরকারী আর্থিক সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। তবে, খরচ সংকুলান কঠিন হয়ে পড়েছে।