বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে তোপের মুখে গত ৫ আগষ্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতন হয়। এরপর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়ার কয়েক দিনের মধ্যে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবং ভাইস চেয়ারম্যানদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। বাদ দেয়া হয় পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলরদেরও।
বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয় মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ।
যার ফলে ওইসব প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব এসে পড়ে দেশের বিভিন্ন উপজেলায় কর্মরত ইউএনওদের কাঁধে। নতুন সরকার গঠনের পর থেকে উপজেলা পর্য়ায়ে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্যও মানুষ সবার আগে ছুঁটছেন ইউএনওদের দপ্তরে। এখন যেন জনসাধারণের সেবা প্রাপ্তির একমাত্র ভরসাস্থল উপজেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাব্যক্তির কার্যালয়। আইনের মধ্যে থেকেই স্ব-স্ব এলাকার জনগণের সেবায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তারা।
মানিকগঞ্জের সিংগাইরে বিগত শাসনামলে একাধিক কমিটিতে উপদেষ্টা এবং সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন স্থানীয় এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়র। এখন তারা না থাকায় সব কমিটিসহ শতাধিক পদের অতিরিক্ত দায়িত্ব এখন সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পলাশ কুমার বসুর কাঁধে।
এছাড়াও তিনি রয়েছেন- উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা এবং ৩০ টি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির দায়িত্বে। অন্যদিকে, জন্ম নিবন্ধন সংক্রান্ত কার্যক্রম, বিরোধ মিমাংসা, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ ও বিভিন্ন সভাসহ নানাবিধ কর্মকান্ড পরিচালনা করছেন তিনি। বিরামহীন দিন-রাত চলছে তার সেবা প্রদান কার্যক্রম। ইউএনও পলাশ কুমার বসুর কান্তিহীন সেবা দানে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন সেবা গ্রহীতারা।
জানা গেছে, আইনশৃঙ্খলা কমিটি থেকে শুরু করে শিক্ষা, কৃষি উন্নয়ন, হাট- বাজার ব্যবস্থাপনা, চোরাচালান প্রতিরোধ, এনজিও সমন্বয়, টিআর- কাবিটা, টেন্ডার, বিভিন্ন দিবস উদযাপনসহ সরকারি দপ্তরগুলোর বিভিন্ন কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন ইউএনও।
এ প্রসঙ্গে সিংগাইর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু বকর সিদ্দিকী বলেন, ইউএনও স্যার আমাদের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল মাদ্রাসা এবং কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে তার কাছেই যেতে হয়। অনেক ব্যস্ততার মধ্যেও স্যার উপজেলার সর্বোচ্চ প্রশাসনিক কর্মকর্তা হয়েও আমাদের কাজগুলো আন্তরিকতার সাথে করে দিচ্ছেন।
আরেক সেবা গ্রহিতা মোঃ শাহাদৎ হোসেন বলেন, নামের প্রত্যয়ন নিয়ে ভোগান্তির শিকার ইউএনও স্যারের কাছে গেলে বিষয়টি তিনি তাৎক্ষনিক সমাধান করে দেন।
এ ব্যাপারে সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পলাশ কুমার বসু বলেন, সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে রাষ্ট্র যে দায়িত্ব দিবে, সেটাই পালন করতে হবে। নাগরিক সেবা প্রদানে আমি বদ্ধপরিকর ।