মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
 

অরক্ষিত রেল ক্রসিংয়ে অটোরিকশায় ট্রেনের ধাক্কা : নিহত ৭    চট্টগ্রামে চিন্ময়ের অনুসারীদের হামলায় আইনজীবী নিহত    উত্তাল পাকিস্তান, শান্ত থাকার আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের    ন্যাশনাল মেডিকেলে হামলায় ‘১০ কোটি টাকার’ ক্ষতি    হঠাৎ শিক্ষার্থীদের ভিড় পরীমণির বাড়ির সামনে!    অ্যাডেলের বিদায়ী ভাষণ    দেশ মাতৃকার বিরুদ্ধে চক্রান্ত থেমে নেই : তারেক রহমান   
তরুণদের ভাবনায় দল সাজাতে চায় জাতীয় পার্টি
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: রোববার, ২০ অক্টোবর, ২০২৪, ৮:৩৩ অপরাহ্ন

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ করে যাচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ সংলাপে ইতোমধ্যে কয়েকটি রাজনৈতিক দল আমন্ত্রণ পেলেও ডাকা হয়নি জাতীয় পার্টিকে (জাপা)। দলটিকে সংলাপে ডাকার বিষয়ে কঠোর আপত্তি জানিয়েছে জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেয়া ছাত্রনেতারা। এ কারণেই সংলাপে তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলে জানা গেছে। 

প্রধান উপদেষ্টার সংলাপ ও জাতীয় পার্টির কর্মকাণ্ড নিয়ে কথা বলেছেন দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। তিনি গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় চিফ হুইপের দায়িত্ব পালন করেছেন। 

মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, জাতীয় পার্টিকে সংলাপে কেন ডাকছে না, এটি আমরা বলতে পারবো না। প্রধান উপদেষ্টা বা যারা এ বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছে তারা বলতে পারবেন। এর আগে তারা আমাদেরকে আলোচনার জন্য ডেকেছিলেন তাই আমরা গিয়েছিলাম এবং আমাদের পক্ষ থেকে সংস্কারের জন্য রূপরেখা দিয়েও এসেছি। এবার কেন ডাকে নাই, সেটি আমরা জানি না। তবে সংলাপে ডাকতে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। এটি প্রধান উপদেষ্টা বা উপদেষ্টা পরিষদের নিজস্ব চিন্তা ভাবনা। উনারা যদি আবার ডাকেন আমরা যাবো আর না ডাকলে আমাদের এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য নেই। 

আগামী নির্বাচন ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটবদ্ধভাবে নির্বাচনের বিষয়ে চুন্নু বলেন, আগামী নির্বাচন কখন হবে সেটি আমরা নিশ্চিত না। কার সঙ্গে জোট করবো বা কি করবো সেটিও আমরা বলতে পারবো না। এখন আমাদের রাজনীতিকে নতুনভাবে সাজানোর চেষ্টা করছি। আমাদের দলকে সংস্কারের মাধ্যমে নতুন করে সাংগঠনিক কাঠামো গুছানোর চেষ্টা করছি। আমাদের দলের নেতাকর্মীদের চাঙা করার চেষ্টা করছি। 

জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, সারাদেশের জেলা-উপজেলায় আমরা কিছুদিনের মধ্যে বের হবো। সেখানে সম্মেলন করবো, দলকে আগে ঠিক করবো। এর আগে নির্বাচনের বিষয় আমাদের মাথায় নেই। আমাদের মাথায় হলো তরুণদের নেতৃত্বে দেশে একটি গণঅভ্যুত্থান হয়েছে, তাদের প্রাধান্য দেয়া। তাদের চিন্তাভাবনা তারা কি চায় এটি আমাদের মাথার মধ্যে ঢুকছে। এগুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি। তরুণদের জন্য প্রয়োজনে আমরা নতুন করে রাজনীতি করবো। নতুন করে সাজাবো। 

আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট ও তাদের অন্যায় অনিয়মের দায় জাতীয় পার্টি নেবে কিনা জানতে চাইলে মুজিবুল হক বলেন, গণতান্ত্রিক দেশে ভারতসহ সব দেশেই জোট হয়। বিএনপির সঙ্গে অনেকের জোট হয়েছে। জোট হতেই পারে। জোট হওয়া তো অন্যায় কিছু না। তবে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে যে অন্যায় করেছে, যে সমস্ত দুর্নীতি করেছে সব কুকর্মের বিচার অবশ্যই হওয়া উচিত, হতে হবে সেটা আমরাও চাই। এছাড়া আমরাও যদি কোনো রকম অন্যায় অনিয়ম করে থাকি তাহলে আমাদেরও বিচার হোক, কোনো সমস্যা নেই। 

উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগকে সরকার গঠনে সমর্থন দিয়েছিল সাবেক সেনাপ্রধান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ প্রতিষ্ঠিত জাতীয় পার্টি। পরে তিন বছর পর জোট করে বিএনপির সঙ্গে বেরিয়ে যায় জাতীয় পার্টি। এর পর ২০০৬ সালে আবার যোগ দেয় আওয়ামী লীগের মহাজোটে। 

২০০৮ সালের নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন জোট ২৯ আসন ছেড়ে দেয় এরশাদের জাপার জন্য। ২০০৯ সালে গঠিত হাসিনা সরকারে মন্ত্রী ছিলেন জি এম কাদের। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির বিএনপিবিহীন নির্বাচন এরশাদ বর্জনের ঘোষণা দিলেও রওশন এরশাদের নেতৃত্বে একাংশ অংশ নেয়। দলটি সেই বিতর্কিত নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ২৩টিসহ মোট ৩৪ আসন নিয়ে প্রধান বিরোধী দল হয়। আবার জাপার তিন এমপি শেখ হাসিনা সরকারের মন্ত্রী হন। এতে গৃহপালিত বিরোধী দলের তকমা পায় জাতীয় পার্টি।

অন্যদিকে সব দলের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠেয় ২০১৮ সালে ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে জাপার জন্য ২৭ আসন ছাড়ে আওয়ামী লীগ। রাতের ভোটখ্যাত সেই নির্বাচনে ২২ আসন পেয়ে ফের প্রধান বিরোধী দল হয় জাপা। দলটির এমপিরা সংসদে শেখ হাসিনার প্রশংসায় পঞ্চমুখ থাকতেন। 

২০১৯ সালে জি এম কাদের জাপার নেতৃত্বে আসার পর দলটি লাগাতার সরকারের সমালোচনা করে। কিন্তু গত বছরের আগস্টে ভারত থেকে ফেরার পর অনেকটা চুপ হয়ে যান। ডামি নির্বাচনখ্যাত ৭ জানুয়ারির ভোটে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে ২৬ আসনে ছাড় পায়। নির্বাচনের প্রচারে জাপার প্রার্থীরা পোস্টারে শেখ হাসিনার ছবি দিয়ে ভোট চেয়েছিলেন। দ্বাদশ সংসদে ১১ আসন পেয়ে টানা তৃতীয় মেয়াদে বিরোধী দল হয় জি এম কাদেরের জাপা। 

তবে জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের শুরু থেকেই জি এম কাদের বক্তৃতা-বিবৃতি দিয়ে ছাত্রদের পক্ষে সরব ছিলেন। এখন তিনি বক্তৃতায় অভ্যুত্থানে তার ও দলের ভূমিকার ফিরিস্তি দিচ্ছেন। ২০১৪ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে জাপাকে জোর করে নেয়া হয়েছিল বলেও দাবি জাপা চেয়ারম্যানের।

৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর সেনাসদর ও বঙ্গভবনে ডাক পেয়েছিল জাতীয় পার্টি। কিন্তু অতীত ভূমিকার কারণে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়ক সারজিস আলম এবং হাসনাত আবদুল্লাহ জাপাকে সংলাপে ডাকার প্রকাশ্য বিরোধিতা করেছেন।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. আক্তার হোসেন রিন্টু
বার্তা ও বাণিজ্যিক বিভাগ : প্রকাশক কর্তৃক ৮২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক (৩য় তলা) ওয়্যারলেস মোড়, বড় মগবাজার, ঢাকা-১২১৭।
বার্তা বিভাগ : +8802-58316172. বাণিজ্যিক বিভাগ : +8801868-173008, E-mail: dailyjobabdihi@gmail.com
কপিরাইট © দৈনিক জবাবদিহি সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft