প্রকাশ: রোববার, ১৩ অক্টোবর, ২০২৪, ৪:১৭ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: রোববার, ১৩ অক্টোবর, ২০২৪, ৪:৪৮ অপরাহ্ন
মা ইলিশ সংরক্ষণে দেশের সাগর ও নদীগুলোতে ইলিশসহ সব ধরণের মাছ শিকারে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। গতকাল শনিবার (১২ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১২টা থেকে আগামী ৩ নভেম্বর পর্যন্ত জারি থাকবে এ নিষেধাজ্ঞা।
এসময় দেশব্যাপী ইলিশ পরিবহন, ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ থাকবে এবং একই সঙ্গে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান বাস্তবায়ন করা হবে। বিজ্ঞানভিত্তিক প্রজনন সময় বিবেচনা করে আশ্বিন মাসের পূর্ণিমাকে সামনে রেখে এই ২২ দিন নিষেধাজ্ঞা কার্যকর রাখার পাশাপাশি মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানও বাস্তবায়ন করা হবে।
জেলার বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা গেছে, হাজারো ট্রলার বিভিন্ন স্থানে এসে নোঙর করতে শুরু করেছে। এই ২২ দিন কর্মহীন হয়ে যাওয়ার চিন্তায় অলস সময় কাটাচ্ছে জেলেরা। পটুয়াখালী উপকূলের জেলেরা সমুদ্রের মাছের ওপর নির্ভরশীল। ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছ বিক্রির টাকা তাদের এক মাত্র আয়ের উৎস। পটুয়াখালীতে জেলের সংখ্যা প্রায় ১ লাখের কাছাকাছি। এই সকল জেলেরা ২২ দিনের জন্য কর্মহীন হয়ে পড়ে। তবে পটুয়াখালীতে সরকারি নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ৮৫ হাজার। বর্তমান সময় বাজার মূল্যের কাছে ২২ দিনের জন্য এই ২৫ কেজি চাল অতি নগন্য। ফলে জেলার জেলে পল্লীগুলোতে জেলেদের মধ্যে উৎকণ্ঠা ও হতাশা বিরাজ করছে। আর তাই ২২ দিনের জন্য নতুন কর্মসংস্থানের বিকল্প পথ খুঁজছে পটুয়াখালীর জেলেরা।
আলীপুর এলাকার জেলে আবুল হোসেন জানান, নিষেধাজ্ঞার ২২ দিনে আমরা ২৫ কেজি চাল পেয়ে থাকি। এই ২৫ কেজি চাল দিয়ে সংসার চলে না। এর সঙ্গে আমাদের আর্থিক সহায়তা দরকার। সরকারের প্রধান উপদেষ্টা আমাদের আর্থিক সহায়তা দিক। না হলে বিকল্প কোন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিক।
মহিপুরের মৎস ব্যবসায়ী সুমন জানান, বাংলাদেশে নদী ও সাগরে ইলিশ ধরা বন্ধ থাকলেও ভারতে এই নিষেধাজ্ঞা নেই। এ কারণে ভারতীয় জেলেরা আমাদের জলসীমায় ঢুকে মাছ ধরে নিয়ে যায়। বাংলাদেশের জলসীমায় ভারতীয় জেলেদের প্রবেশ বন্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তিনি।
কথা হয় সাগর থেকে ফেরা আলামিন নামে এক ট্রলার মাঝির সঙ্গে। তখন তিনি জানান, শুনছি আজ থেকেই ২২ দিনের অবরোধ। এই অবরোধ আর আবহাওয়া আমাদেরকে ঠিকভাবে সাগরে থাকতে দিলো না, সাগরে এখন মাছ ভালো কিন্তু মাছতো আর ধরতে পারবো না। নিম্নচাপের কারণে সাগর ছিল উত্তাল। আর উত্তাল থাকার কারণে সাগরে গেছি আর আসছি। এখন কীভাবে যে কিস্তি আর সংসার চালাবো সেটা নিয়ে চিন্তায় আছি।
মহিপুর মৎস বন্দর এলাকার আরেক জেলে মামুন হাওলাদারের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, গত ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার পরে সাগরে গেলেও তেমন কোন মাছ পাই নাই। তারপর যেই একটু মাছ জালে ধরা পড়তো। তখনই আবার আবহাওয়া খারাপ, সাগর উত্তাল থাকার কারণে আমাদের বেশিরভাগ সময় ঘাটে থাকতে হইছে। ঠিকভাবে মাছও ধরতে পারি নাই। এখন আবার ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা কীভবে সংসার চলবে? এখন এটাই চিন্তা আমাদের। নিষেধাজ্ঞার যে চাল সেটা যদি ঠিকসময় দিতো তাও চলতো কিন্তু নিষেধাজ্ঞার পরে আমরা চাল দিয়ে কী করবো।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম জানান, অবরোধ সফল করতে আমরা ইতিমধ্যে প্রতি ইউনিয়নে আমরা উঠান বৈঠকসহ চলছে ধারাবাহিক গণসংযোগ। এছাড়াও মাইকিং করা হয়েছে। এবার অবরোধের প্রথম দিকেই জেলেদের চাল দেয়ার নির্দেশনা দেয়া আছে। ইতিমধ্যেই চালের বরাদ্দ দেয় হয়েছে হয়েছে।