ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে চলে গেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশ ছাড়ার পর একবার বিবৃতি দিয়েছেন তিনি। এর পর থেকে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো নির্দেশনা বা স্টেটমেন্ট পাওয়া যায়নি।
তবে সম্প্রতি শেখ হাসিনার কণ্ঠ-সদৃশ ফোনালাপ ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
নেটিজেনরা দাবি করছেন, ভারতে বসে শেখ হাসিনা তার নেতকর্মীদের সঙ্গে কথা বলছেন। সেসব ফোনালাপই ঘুরছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
নতুন এই ফোনালাপে শেখ হাসিনা-সদৃশ কণ্ঠকে দাবি করতে শোনা যায়, তিনি পদত্যাগ করেননি।
ইউনূস অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছেন। এ সময় তিনি নিজেকে এখনো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলে দাবি করেছেন।
ফোনকলের অন্য প্রান্তের কণ্ঠটি নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী থানার ছাত্রলীগের সাবেক সেক্রেটারির বলে দাবি করা হচ্ছে। তিনি বর্তমানে বেলজিয়ামে অবস্থানরত।
ফোনালাপে শেখ হাসিনার সদৃশ কণ্ঠ বলেন, ‘সে তো জবরদখল করছে। তার কোনো লিগালিটি নাই। উপদেষ্টা বলে আমাদের কোনো পদ নাই। মানুষ খুন করে মেরে, একটা সিচ্যুয়েশন তৈরি করে তারপর সে ক্ষমতায় গেল।’
এ সময় অন্য প্রান্ত থেকে (সাবেক ছাত্রলীগ নেতা) বলেন, ‘জি আপা জি আপা এগুলো আমরা ইউরোপীয় পার্লামেন্টকে জানাচ্ছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি তো পদত্যাগ করি নাই। আমাদের কনস্টিটিউশনের আর্টিক্যাল ৫৭ অনুযায়ী যেভাবে পদত্যাগ, আমার কিন্তু সেভাবে পদত্যাগ করা হয়নি। সে কিন্তু ৬ তারিখের জায়গায় ৫ তারিখে (লং মার্চ) নিয়ে আসলো। ৫ তারিখে নিয়ে আসার ফলে এমনভাবে চারদিকে লোক ঘেরাও আমি দেখলাম যে এখন যদি ফায়ার ওপেন করে আমার এখানের সিকিউরিটি তাহলে অনেক লাশ পড়বে। লাশ ফেলে আমি ক্ষমতায় থাকতে চাই না।’
তখন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘জি আপা, জি।’
শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘যখন এমন সিচ্যুয়েশন হয়ে গেল যে আমার সিকিউরিটি যারা ছিল তারা বাধ্য হয়ে তখন আমাকে সরে যেতে হলো গণভবন থেকে। যার ফলে বঙ্গভবনে গিয়ে মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা আমি দিইনি। কাজেই আমার কিন্তু পদত্যাগ হয়নি। আমি এখনো বাংলাদেশের কনস্টিটিউশনাল ইলেকটেড প্রাইম মিনিস্টার।’
জবাবে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘ইনশাআল্লাহ আপা, আপনি চলে আসবেন তো। আর বেশি দিন নাই।’
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সেদিন বিকেলে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে হাসিনার পদত্যাগের কথা জানান।
এরপর যুক্তরাষ্ট্র থেকে এক ভিডিও বার্তায় হাসিনাপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় দাবি করেন তার মা পদত্যাগ করেননি। তিনি এখনো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। এবার এই ফোনালাপে নিজেকে দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দাবি করতে শোনা যায়।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার তানভীর নামের এক যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীর সঙ্গে শেখ হাসিনার ফোনালাপ ফাঁস হয়। ওই ফোনালাপে শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমি দেশের খুব কাছাকাছি আছি। যাতে আমি চট করে ঢুকে পড়তে পারি।’ এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চলছে ব্যাপক আলোচনা।