শুক্রবার ২৫ অক্টোবর ২০২৪ ৮ কার্তিক ১৪৩১
 

জানা গেলো শেখ হাসিনার অবস্থান    এ বছর সরকারি অর্থে কেউ হজে যাবে না    ডেঙ্গুতে আরও ৪ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১০২৯    দক্ষিণ কোরিয়ায় ইসরায়েলি দূতাবাসে হামলা    ডিবি হারুন ও তার স্ত্রীসহ ১২ জনকে দুদকে তলব    সচিবালয়ে ঢুকে বিক্ষোভ, ২৬ শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার     ঢাকা থেকে ৫ রুটের নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা   
দুষ্টু লোকদের সুবিধা দিতেই প্লেসমেন্ট সিস্টেম: আবু আহমেদ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: বুধবার, ২১ আগস্ট, ২০২৪, ৭:৩৫ অপরাহ্ন

শেয়ারবাজারে দুষ্টু লোকদের সুবিধা দেয়ার জন্য সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন প্লেসমেন্ট সিস্টেম শুরু করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবু আহমেদ।

তিনি বলেন, আমার নজরে প্লেসমেন্ট দরকারই নেই কারণ আন্ডাররাইটিং সিস্টেম আছে। একটা আইপিও যদি সাবস্ক্রাইব না হয় তাহলে আন্ডাররাইটার নেবে, এই সিস্টেমই ছিলো। হঠাৎ দেখি প্লেসমেন্ট। এটা কেনো হলো? এই সিস্টেমে অনেকেই টাকা না দিয়েই শেয়ার নিয়েছে। এর মাধ্যমে বড় প্রতারণা হয়েছে।

গতকাল রাজধানীর পল্টনে ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরাম (সিএমজেএফ) আয়োজিত প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সিএমজেএফ সভাপতি গোলাম সামদানী ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবু আলীর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন ডিএসই ব্রোকার অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. সাইফুদ্দিন।

এসময় আরো বক্তব্য রাখেন সিএমজেএফের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জিয়াউর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক ইব্রাহিম হোসাইন (রেজোয়ান), সাবেক অর্থ সম্পাদক নিয়াজ মাহমুদ প্রমুখ।

আবু আহমেদ বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশে মিউচুয়াল ফান্ড হচ্ছে শেয়ারবাজারের প্রাণ, অথচ আমাদের দেশে মিউচুয়াল ফান্ডের অংশগ্রহণ শূন্য। গত ১০ বছরে কোনো ভালো আইপিও আসেনি। রবি, ওয়ালটন ছাড়া বেশিরভাগই বাজে আইপিও। ভালো আইপিও আনার জন্য চেষ্টাও করা হয়নি।

তিনি বলেন, নলেজের কোনো বিকল্প নেই। নলেজ হচ্ছে সম্পদ। ১৯৯০ দশকের দিকে পত্রিকাগুলো শেয়ারবাজার সম্পর্কিত কোনো নিউজ ছাপাতে আগ্রহ দেখাতো না। তবে বর্তমানে অনেকগুলো সংবাদপত্র অর্থনীতির ওপর আলাদা গুরুত্ব দিচ্ছে।

তিনি আরো নলেন, ১৯৯৩ সালের সেপ্টেম্বরে আমার ব্যক্তিগত প্রচেষ্টার ফলাফল হিসেবে সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশন প্রতিষ্ঠা হয়। তখন অনেকে বলেছিলো এই কমিশনই বাজারের জন্য দানব হয়ে দাঁড়াবে। বাস্তবতা এখন অনেকটা তা-ই দেখছি।

সংসদে তালিকাভুক্ত কোম্পানগুলোর করহার বাড়িয়ে দিয়ে অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহার কমিয়ে দেয়া হয়েছে জানিয়ে আবু আহমেদ বলেন, এই বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলার কেউ নেই। মাফিয়া গ্রুপগুলো এক হয়ে ব্যাংক লুট করেছে। পদ্মা ব্যাংক যখন ফেল করছিলো সেটাকে ফেল করতে দেয়া হয়নি। সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংকসহ পাবলিকের অর্থ নিয়ে জোড় করে পদ্মাকে সাপোর্ট দেয়া হয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ব্যাংকটি টেকেনি। এখন যে ন্যাশনাল ব্যাংকের বোর্ড ভেঙে দিছে, এটা আরো ১০ বছর আগে ভাঙা উচিত ছিল।

ইসলামী ব্যাংক সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই অধ্যাপক বলেন, ইসলামী ব্যাংকে এতো রিজার্ভ কেন, এতো আমানত কেন, এই ভেবে শকুনের নজর পড়েছিলো ব্যাংকটির প্রতি। তারা ২০১৭ সালে রাতের অন্ধকারে ব্যাংকটি নিয়ে গেছে। এজন্য বর্তমান সরকারকে বলবো ইসলামী ব্যাংককে বাঁচান।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের জন্য বোঝা হচ্ছে এই অর্থনীতিকে ম্যানেজ করা। যা ম্যানেজ করা কঠিন। অধ্যাপক ইউনূস যদি ব্যর্থ হয় তাহলে বাংলাদেশ আর কখনো দাঁড়াবে না। সরকারি শেয়ারগুলো বিক্রি করলে বাজেট ঘাটতি কিছুটা পূরণ হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ডিবিএ’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. সাইফুদ্দিন বলেন, সাংবদিক হিসেবে সবচেয়ে বড় কাজ হলো, বস্তুনিষ্ঠ প্রতিবেদন লেখা। শেয়ারবাজারের জন্য এই দিকটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বেশি লেখার দরকার নেই, যতটুকু লিখেন সেটা যেন বস্তুনিষ্ঠ হয়, এটাই মুখ্য। মানুষকের কাছে সঠিক তথ্যটি প্রচার করতে হবে।

তিনি বলেন, ব্রোকারেজ এসোসিয়েশন থেকে বিশ্লেষণে সহায়তার জন্য বড় একটা সাপোর্ট আমরা দিতে চাই। আমি এসোসিয়েশনের কাছে সেই দাবি রাখবো। আমার বিশ্বাস আপনাদের এই প্রশিক্ষণের মহৎ উদ্যোগটি শেয়ারবাজার বিষয়ক রিপোর্টিংয়ে বড় ভূমিকা রাখবে।

সিএমজেএফের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জিয়াউর রহমান বলেন, একটা সময় অর্থনীতি তথা  শেয়ারবাজার নিয়ে বিশ্লেষণ দেয়ার মতো তেমন কোনো লোক পাওয়া যেত না, সেই সময় থেকে সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছেন অধ্যাপক আবু আহমেদ স্যার। আমাদের এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আগামীতে যেন আমরা আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ নিউজ করতে পারি, সেটাই চাই।

এসময় জিয়াউর রহমান সরকার পতনের আন্দোলনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের কৃতজ্ঞতা শিকার করে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে তিনি বলেন, আন্দোলনে আহতদের পাশে সরকারকে থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। তারাই আমাদের বাক স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়েছে এবং মুক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস নেয়ার সুযোগ করে দিয়েছে।

ট্রেনিং প্রোগ্রাম সম্পর্কে তিনি বলেন, সাংবাদিকদের জন্য প্রশিক্ষণ খুবই ইফেক্টিভ। বাজারের সকল কারসাজি পত্রিকায় তুলে ধরলে বিনিয়োগকারীরা সতর্ক হবেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থা ব্যবস্থা নিতে পারবে। আগেও অনেক ভালো ভালো রিপোর্ট হয়েছে।  কিন্তু সেটার দৃশ্যমান কেন প্রতিকার দেখা যায়নি। তাই বলে কি আমরা ব্যর্থ হয়েছি? না। সেই রিপোর্ট গুলো এখন কাজে আসবে। তাই আমাদের চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।

সিএমজেএফের যুগ্ম সম্পাদক ইব্রাহিম হোসাইন (রেজোয়ান) বলেন, আমাদের এই প্রশিক্ষণটা মূলত আড্ডা বিষয়ক ছিলো। প্রথমে আমরা ১৫ থেকে ২০ জন শুরু করেছিলাম। যেহেতু আমরা শেয়ারবাজার নিয়ে রিপোর্ট করি সেহেতু আমাদের বেসিক জায়গাগুলো আরো পরিষ্কার হওয়ার জন্য এই প্রোগ্রাম শুরু করি। এই প্রোগ্রামটাকে আমাদের সিএমজেএফ আনুষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে বলে ধন্যবাদ জানাই।

সিএমজেএফের সাবেক অর্থ সম্পাদক নিয়াজ মাহমুদ বলেন, সংবাদকর্মী হিসেবে আমি সব সময়ই একজন শিক্ষার্থী। আমাদের সবার শেখার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আমরা আরো বেশি জেনে আমাদের পাঠকদের বস্তুনিষ্ঠ তথ্য সরবরাহ করবো। এই প্রশিক্ষণ শুরুর পর থেকে গত পাঁচ মাসে অনেকের রিপোর্টিংয়ের মাধ্যমে তা প্রতিফলিত হচ্ছে।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. আক্তার হোসেন রিন্টু
বার্তা ও বাণিজ্যিক বিভাগ : প্রকাশক কর্তৃক ৮২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক (৩য় তলা) ওয়্যারলেস মোড়, বড় মগবাজার, ঢাকা-১২১৭।
বার্তা বিভাগ : +8802-58316172. বাণিজ্যিক বিভাগ : +8801868-173008, E-mail: dailyjobabdihi@gmail.com
কপিরাইট © দৈনিক জবাবদিহি সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft