বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘লাখ লাখ মানুষ যখন গণভবনের দিকে যাচ্ছিল তখন হাসিনা ভয়ে পালিয়ে গেলেন। পালিয়ে গেলেও চুপ করে বসে নেই। ভারতে বসে ষড়যন্ত্র করছে। আমরা হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান একসঙ্গে নতুন স্বাধীনতাকে সুসংহত করতে সম্প্রীতির সমাবেশ করছি। জনরোষ থেকে রক্ষা পেতে শেখ হাসিনা ভয়ে লেজ গুটিয়ে পালিয়েছেন। অথচ উনি বড় গলায় বলতেন, আমি শেখ মুজিবুর রহমানের মেয়ে, আমি পালাবো না। কিন্তু সত্যি সত্যি তিনি লেজ গুটিয়ে পালিয়েছেন।’
আজ বুধবার (১৪ আগস্ট) বিকালে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার জাফরপাড়া বাবনপুর মাদ্রাসা মাঠে সম্প্রীতি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আমাদের দলের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গুম, খুন করছে। লাখ লাখ মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে। শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার প্রেতাত্মারা এখনও রয়েছে। আমরা দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করছি, সব পুলিশ, নিরীহ শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিচার করতে হবে। এদের মূলহোতা হাসিনার বিচার করতে হবে। তার মন্ত্রিসভার সদস্যদের লুটপাট ও খুনের বিচার করতে হবে। ইতোমধ্যে তাদের গ্রেফতার করা শুরু হয়েছে। আল্লাহ করে দিয়েছেন। ধর্মের কল বাতাসে নড়ে। তারা আজ নিজেরাই পালিয়েছে, আর দেশের মানুষ জেগে উঠেছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আবু সাঈদ বুকের রক্ত দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। যে ইতিহাস হচ্ছে তরুণদের আত্মত্যাগের ইতিহাস। ফ্যাসিবাদী, খুনি হাসিনা সরকারের পতনের দাবিতে শত শত মানুষ বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘হাসিনার বিচার দাবিতে সব রাজনৈতিক দল আজ সমাবেশ করছে। হাসিনা শত শত মানুষকে হত্যা, গুম করেছেন। দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছেন। সমস্ত প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে একটা একনায়কতন্ত্র, পরিবারতন্ত্র, ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিলেন।’
বিএনপি মহাসচিব দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘বাংলাদেশ সব ধর্মের দেশ, এখানে সংখ্যালঘু বলে কিছু নেই- সবাই বাংলাদেশি।’ সবাইকে অপশক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।
এর আগে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে আবু সাইদের কবর জিয়ারত করে সেখানে ফাতেহা পাঠ শেষে মোনাজাত করেন। এরপর আবু সাঈদের বাসায় গিয়ে তার বাবা মকবুল হোসেন ও মা মনোয়ারা বেগমসহ স্বজনদের সঙ্গে দেখা করে সমবেদনা জ্ঞাপন করেন তিনি।