সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলন সহিংস রূপ নিয়েছে মঙ্গলবার। এরই মধ্যে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ (ঢাবি) শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয়েছে হল ছাড়ার নির্দেশ। দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়। ক্যাম্পাসের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঢাবিতে শক্ত অবস্থান নিয়েছে পুলিশ-র্যাব-বিজিবি। সব মিলিয়ে এই মুহূর্তে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে পুরো ঢাবি ক্যাম্পাসে।
তবে এর মধ্যেই বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে সমবেত হচ্ছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
আজ বুধবার (১৭ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে দেখা যায়, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাস ভবনের প্রধান ফটকের সামনে জড়ো হচ্ছেন।
এ সময় শিক্ষার্থীদের কণ্ঠে শোনা যায়, ‘আমার ভাই মরলো কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘পুলিশ দিয়ে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না’, ‘হামলা দিয়ে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না’, ‘ছাত্রলীগের দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে’, ‘ছাত্রলীগের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’ ইত্যাদি স্লোগান।
উপাচার্যের ভবনের নিরাপত্তায় অবশ্য পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে ইতোমধ্যে।
প্রসঙ্গত, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে পুলিশ, ছাত্রলীগ ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রংপুরে ছয়জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে চট্টগ্রামে তিনজন, ঢাকায় দুজন ও রংপুরের একজন রয়েছেন।
এ অবস্থায় দেশের সব সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আবাসিক হল ত্যাগের নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) রাত ১১টার দিকে সরকারের এ সিদ্ধান্ত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এতে স্বাক্ষর করেছেন ইউজিসির সচিব ড. ফেরদৌস জামান।
এর আগে একইদিন উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে দেশের সব স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ক্লাস বন্ধ ঘোষণা করে সরকার।
পাশাপাশি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত দেশের সব কলেজ বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া চলমান এইচএসসি ও সমমানের বৃহস্পতিবারের (১৮ জুলাই) সব পরীক্ষা স্থগিত করে বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি।