প্রকাশ: সোমবার, ২৭ মে, ২০২৪, ২:৫৯ অপরাহ্ন
ক্ষমতার অপব্যবহারের দৃষ্টান্তমূলক জবাবদিহি ও দুর্নীতি শ্বেতপত্র প্রকাশের আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
গতকাল রোববার (২৬ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানায় সংস্থাটি। ক্ষমতাসীন দলের এক সংসদ সদস্যকে হত্যা, সাবেক সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা এবং অবসরপ্রাপ্ত পুলিশপ্রধানের সম্পদ জব্দ করার আদালতের আদেশের পটভূমিতে এমন মন্তব্য করল টিআইবি।
বিবৃতিতে বলা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতি ও রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন ঘিরে ক্ষমতাসীন দলের একজন সংসদ সদস্যের হত্যাকাণ্ড, সাবেক সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের শাস্তিমূলক নিষেধাজ্ঞা এবং অবসরে যাওয়া র্যাব ও পুলিশ প্রধানের ব্যাংক হিসাব, স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ জব্দ করার জন্য আদালতের নির্দেশনা দিয়েছে। এতে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের শূন্য সহনশীলতার ঘোষণার যথার্থতা প্রমাণের বাধ্যবাধকতা অভূতপূর্ব গুরুত্ব লাভ করেছে।
নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সরকার ও ক্ষমতাসীন দল শুধু বিব্রত বোধ থেকে বিভিন্নভাবে দায়সারা ব্যাখ্যার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে তা যেমন জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না, তেমনি সরকারের জন্যও আত্মঘাতী হবে। দেশের জনগণ এরই মধ্যে এটুকু উপলব্ধি করার মতো সক্ষম, ব্যাপক আলোচিত তিন ঘটনাই কোনো বিচ্ছিন্ন বিষয় নয়; বরং উচ্চ পর্যায়ের দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়নের ব্যাপক প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের বহিঃপ্রকাশ, যা হিমশৈলের চূড়ামাত্র। একইভাবে এটি সহজেই বোধগম্য যে এ ধরনের অপরাধের দায় শুধু প্রত্যক্ষভাবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।
অতএব সরাসরি দায়ী ব্যক্তির পাশাপাশি পরোক্ষভাবে সহায়ক, যোগসাজশকারী, অংশীদারিত্বের ফলে লাভবান, বিশেষ করে সুরক্ষাকারী মহলকে জবাবদিহির আওতায় আনা সম্ভব না হলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতার সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার আরও এক দফা ফাঁকাবুলি হিসেবেই রয়ে যাবে। এ ধরনের দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়ন ব্যাপকতর ও গভীরতর হবে। যথাযথ প্রক্রিয়ায় অপরাধ প্রমাণ সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক জবাবদিহির পাশাপাশি উচ্চ পর্যায়ের দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।
তিনি আরও বলেন, সেনাবাহিনী, র্যা ব ও পুলিশের মতো রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ বাহিনীর সাবেক প্রধানসহ একজন আইনপ্রণেতার এহেন দায়বদ্ধহীন কর্মকাণ্ড জনমনে সরকার, রাষ্ট্রব্যবস্থা ও শাসনকাঠামো নিয়ে সংশয় ও উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়েছে, যার বিশ্বাসযোগ্য নিরসন জরুরি। একইসঙ্গে দুদকসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো আলোচিত কোনো কোনো বিষয়ে যে তৎপরতা দেখাচ্ছে, তা যেন লোকদেখানো আনুষ্ঠানিকতায় পর্যবসিত না হয়।