ছোটপর্দার একসময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। অভিনয় নিয়ে একটা সময় ব্যস্ততায় কাটালেও বর্তমানে নিজেকে অনেকটাই পর্দার জগত থেকে আড়ালে রাখছেন তিনি।
ব্যক্তিজীবনে নানা চড়াই উতরাইয়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে এই তারকাকে। সংসার জীবনে বিচ্ছেদের মুখ দেখেছেন। নিজের বাবাকে হারিয়েছেন। সবকিছু মিলিয়েই কিছু কঠিন সময় পার করতে হয়েছে ফারিয়াকে।
যেসব কিছুর প্রভাব তার ব্যক্তিজীবনে পড়েছে। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে শবনম ফারিয়া জানালেনম ‘সোশ্যাল অ্যাংজাইটি’তে ভুগছেন তিনি।
ফারিয়া তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘সোশ্যাল অ্যাংজাইটি’ শব্দটার সাথে আমার পরিচয় খুবই অল্প দিনের। প্রথমে শুরু হয় আমার ডিভোর্সের পর। আমার বাসা থেকে বের হলেই মনে হতো, সবাই মনে হয় আমাকে জাজ করছে। ভাগ্য ভালো ওই সময় মাস্ক চলে আসে। করোনা চলে যাওয়ার পরও মাস্ক পারমানেন্ট করে নিই।
সামাজিক অনুষ্ঠানে না যাওয়ার কথা জানিয়ে শবনম ফারিয়া লেখেন, ‘তারপর শুরু হয় আরেকটা সমস্যা, যেহেতু আমি নিজ থেকেই অ্যাকটিভলি মিডিয়া থেকে কাজ না করার সিদ্ধান্তে আসি; তখন থেকে মিডিয়া সম্পর্কিত কোনো দাওয়াত/ গেট টুগেদারে যেতে খুবই অস্বস্তি লাগে, তার উপরে অদ্ভুত শিরোনামের সংবাদের অত্যাচার তো আছেই। ধীরে ধীরে আমি সব ধরনের সামাজিকতা থেকে দূরে সরে আসি!’
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে আরও আড়ালে নিয়ে যান এই তারকা। সেটা জানিয়ে ফারিয়া লেখেন, ‘এতকিছুর পরেও চেষ্টা করেছি, যারা আগে ক্লোজ ছিল তাদের সাথে মিশতে। কিন্তু তাদেরকে কেন জানি খুবই অচেনা মনে হয়। অনেক চেষ্টা করে ডিসিশন নিই, ড্রেস রেডি করি ওই অনুষ্ঠানে যাব বলে। কিন্তু অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগে মনে হয়, কি দরকার? কাকে দেখব? আমাকে কে দেখবে? কেন দেখবে? কেন হাসি দিয়ে কথা বলতে হবে? কি পরব, কি করব— সব নিয়ে জাজ করবে। তার চেয়ে বাসায় বসে একটা বই পড়া কিংবা একটা সিনেমা দেখা ভালো।’
বর্তমানে ফারিয়ার জীবনে কেবল তার পরিবার ও ৮ জন বন্ধুর উপস্থিতি রয়েছে। তাদের সঙ্গেই যোগাযোগ হয়। সেটা উল্লেখ করে এই তারকা লেখেন, ‘আমার হাতেগোনা ৮টা ফ্রেন্ড। আমার ফ্যামিলি আর এই ৮ জনের বাইরে কারো সাথে আমার কথা বলতেও ভালো লাগে না, দেখা তো দূরের কথা। পরে জানতে পারলাম এটার নাম সোশ্যাল অ্যাংজাইটি। এটার চিকিৎসা কী আমার জানা নাই। শুধু জানি, এখান থেকে অনেক দূরে কোথাও চলে যেতে চাই।’
ফারিয়ার সেই স্ট্যাটাসে মন্তব্য করেছেন অভিনেত্রী মাসুমা রহমান নাবিলা। তিনি লিখেছেন, ওয়াও! ৮ জন বন্ধু! আমার তো মাত্র একজন। তার উপর সে দেশেও থাকে না। মাঝেমধ্যে কথা হয়। কিন্তু আমি মানিয়ে নিয়েছি ব্যাপারটার সাথে। আজকে, আমি আমার বন্ধু। আমি এখন নিজেকে সময় দেই, আমার পরিবারকে সময় দেই। কোনো সামাজিক চাপ নেই।